পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘিরে 'রক্তবন্যা' বইছে পশ্চিমবঙ্গের একটা বড় অংশে। বাসন্তীতে এক তৃণমূল কংগ্রেসকর্মী ইতিমধ্যেই গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। নফরগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতের চৌরঙ্গি এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন তৃণমূল কর্মী খগেন্দ্রনাথ খুটিয়া। জানা গিয়েছে,বছর ৫৫-র ওই তৃণমূল কর্মীর বাঁ পায়ে গুলি লাগে। তাঁকে কলকাতার নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়েছে। এরই মধ্যে আরও একটি হিংসার খবর এল। পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুরে শাঁকপুর গ্রামে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে গুরুতর জখম ৪ জন। তাঁদের মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে।
কেশপুরে আক্রান্ত যুবক শেখ জালাল উদ্দিনের কথায়, 'গ্রামে যে বেশ কিছুদিন ধরেই তৃণমূলের গোষ্ঠীর মধ্যে গোলমাল চলছিল। একদিকে বিধায়ক শিউলি সাহা ও ব্লক সভাপতি প্রদ্যুত পাঁজার গোষ্ঠীর সঙ্গে অপরদিকে থাকা যুব তৃণমূলের ব্লক সভাপতি আসিফ ইকবালের গোষ্ঠী। সেই ঘটনা থেকেই সোমবার সন্ধে ৭ টার পর মারামারি হয়। শিউলি সাহার গোষ্ঠীর লোকেরা লোহার রড ও বিভিন্ন জিনিস নিয়ে আক্রমণ করে আমাদের উপরে।' প্রসঙ্গত, কেশপুরে একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েত বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতাতেই জিতে গিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।
অন্যদিকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে ফের অশান্ত। ব্যাপক বোমাবাজি ও বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। ঘটনাটি ঘটেছে ভাঙড়ের মাঝেরআইট এলাকায়। সোমবার রাতের ঘটনা। দুইপক্ষের একাধিক বাড়ি ভাঙচুর বলে খবর। ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ালে বিরাট পুলিশ বাহিনী পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলেও দীর্ঘক্ষণ পুলিশ এলাকায় ঢুকতে পারেনি বলে খবর। যদিও গভীর রাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। এলাকা কার দখলে থাকবে, সেই নিয়ে এদিনের ঝামেলার সূত্রপাত বলে খবর।
সোমবার বাসন্তীতে হিংসাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। ক্যানিংয়ে সাংবাদিকদের রাজ্যপাল বলেন, 'মানুষের রক্ত নিয়ে রাজনৈতিক হোলি খেলা বন্ধ করতে হবে। আমি হিংসাদীর্ণ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেছি। আমি দোষ খুঁজতে নয়, প্রকৃত তথ্য জানতে ওই সব এলাকা ঘুরেছি।' হাই কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী নির্বাচন প্রক্রিয়া চালানোর কথা রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন রাজ্যপাল। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, কমিশন কী ব্যবস্থা নেয় তা দেখতে তিনি ৪৮ ঘণ্টা অপেক্ষা করবেন।