আজ সকাল ৮টা থেকে রাজ্যে দশম ত্রিস্তরীয় ও পাহাড়ে দ্বিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনের গণনা শুরু হয়েছে। গোটা রাজ্যে মোট ৩৩৯টি জায়গায় গণনা চলছে। গণনা কেন্দ্রগুলিতে সিসিটিভির নজরদারি রয়েছে। প্রতিটি গণনা কেন্দ্রে এক কোম্পানি করে কেন্দ্রীয় বাহিনীও মোতায়েন রয়েছে। তবে ভোট গণনার দিনও রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে অশান্তির খবর সামনে এল। উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গ সবখানেই চিত্রটা ছিল একইরকম।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা
বাসন্তীতে পুলিশকে লক্ষ্য করে আবির ছোড়ার অভিযোগ বিজেপির বিরুদ্ধে। বাসন্তীর গণনা কেন্দ্রর সামনের ঘটনা। এরপর পুলিশ বিজেপি কর্মীদের লক্ষ্য করে লাঠি চার্জ করে। পুলিশের লাঠি থেকে বাঁচতে পুকুরে পড়েন বিজেপি কর্মীরা।
কোচবিহার
গণনার দিন তুফানগঞ্জ ১ নম্বর ব্লকের চিলাখানা এক গ্রাম পঞ্চায়েতের চিলাখানা মাছ বাজার থেকে তাজা বোমা উদ্ধার হয়েছে। এ বিষয়ে বিজেপি নাটাবাড়ি বিধানসভা ৩ নং মন্ডল সভাপতি চিরঞ্জিত দাস বলেন, চিলাখানার মানুষ শান্তি প্রিয় ও গণতন্ত্র প্রিয় মানুষ। ২০১৮ মতো ২০২৩ সালেও সাধারণ মানুষের কাছ থেকে মানুষের ভোটার অধিকার ছিনিয়ে নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তারপরে চিলাখানার বেশ কিছু জায়গায় সাধারণ মানুষ প্রতিবাদ গড়ে তুলেছে সে জন্যই বাজার গরম করার জন্য এই সমস্ত ঘটনা ঘটাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। অন্যদিকে গণনা চলার সময় ব্যালট বক্সে কালি ছেটানোর অভিযোগ ওঠে কোচবিহারের মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীর বিরুদ্ধে। ফলিমারির বাসিন্দা এই মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস দলের কর্মী কাউন্টিং এজেন্ট পরিচয় দিয়ে নৃপেন্দ্র নারায়ন স্কুলের গণনা কেন্দ্রে গিয়েছিলেন। রিঙ্কু রায় নামে এই তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মুর্শিদাবাদ
ভোট গণনার দিনও মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের উদ্ধার সকেট বোমা। ভরতপুর এক নম্বর ব্লকের আমলাই গ্ৰামের একটি পরিত্যাক্ত শৌচাগার থেকে তাজা সকেট বোমা উদ্ধারের ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। তবে ঘটনার সঙ্গে কে বা কারা জড়িত তা এখনো জানা যায়নি
পশ্চিম বর্ধমান
মঙ্গলবার সকালে পশ্চিম বর্ধমান জেলার কাঁকসার বিডিও অফিস সংলগ্ন নির্বাচন গণনা কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণভাবে গণনার কাজ শুরু হলেও বেলা বাড়তি ফের উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১ টা নাগাদ আচমকা, সিপিএম সমর্থকরা এবং আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষেরা তীর ধনুক নিয়ে হামলা চালায় তৃণমূল কর্মীদের উপর। বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ও স্কুটি ভাঙচুর করার পাশাপাশি বেশ কয়েকজনকে মারধর করে বলে তৃণমূলের অভিযোগ। ঘটনাস্থলে কাঁকসা থানার আইসির নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেয়। এলাকায় উত্তেজনার সৃষ্টি হলে গোটা এলাকা ঘিরে নেয় কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অপরদিকে গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে সিপিআইএম হেরে যাওয়ার। নির্বাচনী এজেন্ট দের পুলিশের ঘেরাটোপে বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করার পুলিশ।
মালদা
মালদার চাঁচলে গণনা কেন্দ্র থেকে অদূরে বোমাতঙ্ক। চাঁচল ১ নং ব্লকের কলিগ্রাম মহারাজ তলায় একটি পোলট্রি ফার্মের পেছনে পরিত্যক্ত দুটি ব্যাগকে ঘিরে বোমাতঙ্ক ছড়ায়। ব্যাগের ভেতর খড় থাকলেও বোমা রয়েছে কিনা তাই স্পষ্ট এখনো বোঝা যাচ্ছেনা। ঘটনাস্থলে সিভিক ভলেন্টিয়াররা থাকলেও চাঁচল থানার পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে আসে বোম্ব স্কোয়াডও।
নদিয়া
ভোট গণনা কেন্দ্রের স্টংরুমের সামনে থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনী সরিয়ে দেওয়াকে কেন্দ্র করে চরম উত্তেজনা ছড়ায় নদিয়ার শান্তিপুর ব্লকের ফুলিয়ার বালিকা বিদ্যালয়ের ভোট গণনা কেন্দ্রে। সকাল থেকেই গোটা ভোট গণনা কেন্দ্র মুড়ে রাখা হয়েছিল কেন্দ্র বাহিনীর জওয়ানদের দিয়ে। কিন্তু যখনই ভোট গণনা শুরু হয় ভোট গণনা কেন্দ্রে পৌঁছায় পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা, এরপর প্রত্যেকটি স্টংরুমের সামনে থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনী সরিয়ে নেওয়া হয়। তখনই উত্তেজনা সৃষ্টি হয় গোটা গণনা কেন্দ্রে। এরপর বিজেপির পক্ষ থেকে প্রতিবাদ করতে শুরু করে। এছাড়াও বেশ কয়েকজন বিজেপির এজেন্ট কেন্দ্রীয় বাহিনীর পা চেপে ধরে, চলে না যাওয়ার জন্য।অভিযোগ, তৃণমূলের বহিরাগতরা ভোট গণনা কেন্দ্রের ভেতরে ঢুকে রীতিমতো উত্তেজনা সৃষ্টি করার চেষ্টা করে। সূত্রের খবর স্ট্রং রুমের সামনে থেকে কেন্দ্র বাহিনীকে সরিয়ে রাখা হয় একটি ঘরে। যার জন্য ভোট গণনা প্রক্রিয়া ব্যহত হয়।
বাঁকুড়া
নির্বাচনের ফলাফলের দিন, হিংসা অব্যাহত বাঁকুড়া শালতোড়ায়। ভেঙে ফেলা হয় বিজেপি বিধায়ক চন্দনা বাউরির গাড়ি। সারা রাজ্যে নির্বাচনের ফলাফল কে কেন্দ্র করে বিক্ষিপ্ত ঘটনা উঠে আসছে। সেই জল গড়িয়ে এসেছে বাঁকুড়ার শালতোড়ায়। শালতোড়া বিজেপি বিধায়িকা চন্দনা বাউরির অভিযোগ অতর্কিতে তৃণমূল আশ্রিতা দুষ্কৃতীরা তার গাড়ি এবং তাদের কার্যকর্তাদের গাড়ির ওপর হামলা চালায়।
উত্তর ২৪ পরগনা
ব্যারাকপুরে বিজেপি প্রার্থীকে টেনেহিঁচড়ে গণনাকেন্দ্র থেকে বের করে দেয় পুলিশ। মামুদপুর পঞ্চায়েতের আট নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থীকে টেনে বের করে দেয় পুলিশ। তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপি প্রার্থীর বচসা, ভোট লুঠের অভিযোগ ওঠে। অনেক লড়াই দিয়েছি, আর পারলাম না, বলছেন বিজেপি প্রার্থী বরুণ সর্দার।