ভাঙড়ে নিজের খাস তালুকে হারলেন তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম। হারের পর গণনাকেন্দ্র ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন। ভাঙড়ের পোলেরগাট দুই নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত ছাতছাড়া হল তৃণমূলের। গত পঞ্চায়েত ভোটেও তৃণমূলকে লড়াই দিয়েছিল জমি কমিটি।
ভাঙড়ের পোলেরহাট ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতে হারল তৃণমূল কংগ্রেস। সেখানে জয় পেল জমি কমিটি। জয়ের প্রবণতা স্পষ্ট হতেই গণনাকেন্দ্র ছাড়েন আরাবুল ইসলাম। পোলেরহাট ২ নম্বর অঞ্চলে হার বলে স্বীকারও করে নেন তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক। পোলেরহাট ২ নম্বর পঞ্চায়েতে এবার আসন সংখ্যা বেড়ে হয়েছিল ২৪। সব আসনেই এবার প্রার্থী দিয়েছিল জমি কমিটি। পঞ্চায়েত সমিতিতে তিনটি এবং জেলা পরিষদের একটি আসনেও মনোনয়ন দাখিল করেছিল তারা।
২০১৬ সালে ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রিড বিরোধী আন্দোলনের সময় তৈরি হয়েছিল জমি, জীবিকা ও বাস্তুতন্ত্র রক্ষা কমিটি বা জমি কমিটি। গতবারও পঞ্চায়েত ভোটে লড়াই করেছিল তারা। তাদের মনোনয়নপত্র পেশে বাধা দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। তার পর হাইকোর্টের হস্তক্ষেপে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন জমি কমিটির সদস্যরা। এবার অবশ্য তেমন অভিযোগ ওঠেনি। সংবাদ মাধ্যমের কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মির্জা হাসান বলেছিলেন,'প্রথম দিন বাধা দিতে চেয়েছিল তৃণমূল। কিন্তু আমরা বলেছিলাম, আমাদের উপরে হামলা হলে পাওয়ার গ্রিডই অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেব।'
২০১৮ সালেও পোলেরহাটে দাপট দেখিয়েছিল জমি কমিটি। সেবার পোলেরহাট ২ পঞ্চায়েতের ১৬টি আসনের মধ্যে তৃণমূল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ৮টি আসনে জিতেছিল। বাকি ৮টিতে জমি কমিটির সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছিল। তার মধ্যে পাঁচটি আসন পেয়েছিল জমি কমিটি। তৃণমূল জিতেছিল ৩টি আসনে। তৃণমূল ১৬টির মধ্যে ১১টি আসন জিতলেও পঞ্চায়েত অফিসে কার্যত ঢুকতে পারেননি জয়ীরা। প্রধান, উপপ্রধানদের পঞ্চায়েত অফিসে ঢোকার সময় বাধা দিয়েছিল জমি কমিটির সদস্যরা।
২০১৮ সালের সঙ্গে এবার অনেকটাই ফারাক রয়েছে। কারণ ২০২১ সালে ভাঙড়ে জয়লাভ করেন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী। তার পর থেকে ভাঙড়ে দাপট বেড়েছে আইএসএফের। এবারও ভাঙড়ে মনোনয়নপত্র পেশ ঘিরে তৃণমূলের সঙ্গে সংঘর্ষ বেধেছিল আইএসএফের। তার ফলে জমি কমিটির সঙ্গে তৃণমূলের বিবাদ আর নেই। কিন্তু পঞ্চায়েত ভোটের ফল বলছে, পোলেরহাটে এখনও জমি কমিটির একটা বড় সমর্থন রয়েছে।