১৫-১৬ মে চন্দ্রগ্রহণ। পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ স্থায়ী হবে ৩ ঘণ্টা ২৭ মিনিট ৫৮ সেকেন্ড। এবার বিরল চন্দ্রগ্রহণ দেখা যাবে আকাশে। কারণ রক্তজবা চাঁদ উঠবে চাঁদ। পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ ও লোহিতবর্ণ চাঁদ- এই যোগ অনেক বছরে একবার আসে। সুপার লুনার ইভেন্ট বলছেন বিজ্ঞানীরা।
চন্দ্রগ্রহণ কী এবং কীভাবে হয়? (What is Lunar Eclipse?)
পৃথিবীর ছায়া যখন চাঁদের উপর সমস্ত বা আংশিক জুড়ে পড়ে তখন চন্দ্রগ্রহণ হয়। সহজভাবে বললে, পৃথিবী যখন চাঁদ ও সূর্যের মাঝখানে চলে আসে। চাঁদ নিজের কক্ষপথে ৫ ডিগ্রি হেলে আছে। সেজন্য চাঁদ পৃথিবীর ছায়া থেকে কিছুটা উপরে বা সামান্য নিচে থাকে। চাঁদ নিজের কক্ষপথে এমন অবস্থানে বছরে দু'বার আসে। পৃথিবী এবং সূর্যের সামনে একই সরলরেখায় অবস্থান করে।
চাঁদকে কেন লালচে দেখাবে?
চাঁদের নিজস্ব আলো নেই। ফলে চাঁদ যখন পৃথিবীর ছায়ায় ঢেকে যায় তখন সূর্যে আলো পড়ে না। অন্ধকারে চলে যাবে উপগ্রহটি। চাঁদ কখনওই সম্পূর্ণ কালো হয় না। তাই কখনও কখনও পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণকে লাল বা রক্তাক্ত চাঁদও বলা হয়।
এখন প্রশ্ন, সব রং থাকতে লালই কেন? সূর্যের আলোয় তো সব ধরনের রংই আছে। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে উপস্থিত গ্যাসের কারণে আকাশ নীলচে দেখায়। অন্যদিকে, লাল রঙের তরঙ্গদৈর্ঘ্য তা অতিক্রম করতে সক্ষম। একে বলা হয় Rayleigh Scatterinhg। সেই জন্য নীল আকাশে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত লাল রঙের হয়ে থাকে। চন্দ্রগ্রহণের সময় একটি লাল তরঙ্গদৈর্ঘ্য পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের মধ্য দিয়ে যায়। কিন্তু তা ধাক্কায় আবার ফিরে যায়। এর ফলে নীল ফিল্টার হয়ে লাল দেখায়।
কীভাবে এবং কোথায় আপনি এই চাঁদ দেখতে পাবেন?
এবার একটি পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ প্রশান্ত মহাসাগর, আমেরিকা, আফ্রিকা এবং কানাডা, গ্রিনল্যান্ডের দক্ষিণ অংশে দেখা যাবে। ভারতে তখন দিন। ফলে লাল চাঁদের দর্শন হবে না।
১৫-১৬ মে সন্ধ্যার পর সুপারমুনে গ্রহণ লাগতে চলেছে। এই দৃশ্য ভারতে দেখা যাবে না। মধ্য আমেরিকা, উত্তর আমেরিকা, আফ্রিকা এবং ইউরোপীয় দেশগুলিতে দৃশ্যমান হবে৷
সুপারমুন কাকে বলে?
চাঁদ যখন পৃথিবীর কাছাকাছি আসে তখন তার আকার ১২ শতাংশ বড় দেখায়। সাধারণত পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরত্ব ৪০৬,৩০০ কিলোমিটার। কিন্তু যখন এই দূরত্ব কমে ৩৫৬,৭০০ কিমি হয়, তখন চাঁদকে বৃহৎ দেখায়। একে সুপারমুন বলা হয়।
চাঁদ নিজের কক্ষপথে ঘুরতে ঘুরতে পৃথিবীর কাছাকাছি চলে আসে। কারণ চাঁদ পৃথিবীর চারদিকে বৃত্তাকার কক্ষপথে চলে না। উপবৃত্তাকার কক্ষপথে ঘোরে চাঁদ। বসুন্ধরার কাছাকাছি থাকার কারণে উজ্জ্বলতাও বৃদ্ধি পায়।