ভারতে ইলিশ মাছের ব্যাপক চাহিদা কিন্তু সেই তুলনায় যোগানের বড় অভাব। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে ইলিশের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। চাহিদার তুলনায় ইলিশ কম থাকায় অনেকেই সাধ থাকলেও ছুঁয়েও দেখতে পারেন না।
এদিকে শ্রাবণ মাস শেষ হতে চলল। কিন্তু তেমন ভাবে বাজারে দেখা মিলছে না ইলিশ মাছের। জুন থেকে মৌসুম শুরু হলেও পশ্চিমবঙ্গে সেভাবে ইলিশের দেখা মেলেনি। অন্যদিকে সীমান্তের ওপার থেকেও ইলিশ আসেনি।
ইলিশের এই ঘাটতি মেটাতে এবার অনেকেই মিল্ক ফিশের কথা ভাবছেন। শুনতে অবাক লাগলেও স্বাদে ও গন্ধে অনেকটা ইলিশের মত হওয়ায় দক্ষিণ ভারতে এই মাছটিকে 'দাক্ষিণাত্যের ইলিশ' বলা হয়। আর খেতেও সুস্বাদু।
মিল্ক ফিস হলো আসলে ফিলিপিন্সের জাতীয় মাছ। ইতিমধ্যে দক্ষিণ ভারতে এই মাছ খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
কয়েক দশক আগে তাইওয়ান, ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপিন্সে বাণিজ্যিকভাবে এই মাছের চাষ শুরু হয়। মিল্ক ফিশের বিজ্ঞান সম্মত নাম চ্যানাস চ্যানাস (Chanos Chanos)। এই মাছ মূলত সমুদ্রে থাকে। তবে মিষ্টি ও নোনাজলে এই মাছ চাষ করা হয়।
ইলিশের মতই মিল্ক ফিশ সমুদ্রের নোনা জলে থাকে। ডিম পাড়ার সময় নদীর মিষ্টি জলে চলে আসে। পুষ্টিগুণের দিক থেকেও এই মাছ অতুলনীয়। মিল্ক ফিশে ৬০ শতাংশ প্রোটিন রয়েছে।
মিল্ক ফিসকে দেখতে অনেকটা ইলিশের মতো, চকচকে রূপালি রঙের আঁশ, তবে ইলিশের চেয়ে পেটের দিকটা কম চওড়া। এই মাছ ইলিশের মতোই বেশি কাঁটাযুক্ত এবং সুস্বাদু।
এই মাছ ১৫ বছর বয়স অবধি বাঁচে। পুরুষ মাছ ১.৮ মিটার এবং স্ত্রী মাছ ১.২৪ মিটার অবধি লম্বা হতে পারে। একটি পরিণত মাছের ওজন ১৪ কেজি পর্যন্ত হয়। উপকূলের নোনা জলে এরা স্বচ্ছন্দ। আমাদের দেশে দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলোয় সমুদ্র উপকূলে মিল্ক ফিশ পাওয়া যায়। আগে পশ্চিমবঙ্গ এবং ওড়িশার উপকূলেও দেখা যেত। এখন এই মাছকে বাণিজ্যিকভাবে চাষ করার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
ভারতের দক্ষিণের রাজ্যে এই মাছের চাষ আগেই শুরু হয়েছিল। বছর তিনেক আগে চেন্নাই থেকে মিল্ক ফিশের পোনা আনা হয়েছিল রাজ্যে। চাষ শুরু হয় বে পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়ায়।
ইলিশ কিনতে গেলে কমপক্ষে আটশো-হাজার টাকা খরচ হবেই। সেখানে মিল্ক ফিস কিন্তু পকেট ফ্রেন্ডলিও বটে। মাত্র দেড়শো টাকাতেই মিলতে পারে।
এবারের বর্ষায় যখন দেখা নেই ইলিশের তখন সুস্বাদু মিল্ক ফিস দিয়ে রসনাতৃপ্তির কথা কিন্তু ভাবতেই পারে ভোজন রসিক বাঙালি।