১৯৬০ সালে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছিল এই চুক্তি। তখন ঠিক হয়েছিল, হিন্দু, ঝিলম ও চেনাব নদীর জল ব্যবহার করবে পাকিস্তান। রবি, বিয়াস ও শতদ্রু নদীর জল থাকবে ভারতের অধীনে। এতদিন ভারত এই নিয়ম মেনেই চলছিল।
চুক্তি সাময়িকভাবে স্থগিত হওয়ায় ভারত এখন চাইলে পশ্চিম নদীগুলি থেকে নিয়ন্ত্রিত জল ছাড়াও বন্ধ করতে পারে। যেমন, কিশনগঙ্গা ও রাটলে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে পাকিস্তানে নির্দিষ্ট পরিমাণ জল ছাড়ার নিয়ম ছিল, তা বন্ধ হতে পারে। এতে খরার সময় পাকিস্তানের কৃষিক্ষেত্রে জলঘাটতি দেখা দিতে পারে।
কিশনগঙ্গা ড্যাম (ঝিলম): ২০১৮ সালে চালু হয়েছে। পাকিস্তানের মঙ্গলাড্যামে জল সরবরাহে প্রভাব ফেলে। রাটলে ড্যাম (চেনাব): নির্মাণাধীন। ভবিষ্যতে পাকিস্তানের পাঞ্জাবে জল প্রবাহ কমাতে পারে। শাহপুরকান্দি ড্যাম (রবি): ২০২৪-এ শেষ হয়েছে। ভারতের মধ্যেই রবি নদীর জল ফিরিয়ে রাখে। উঝ ড্যাম (রবি): পরিকল্পনায় রয়েছে। downstream-এ পাকিস্তানে জল প্রবাহ আরও কমাবে।
কৃষিতে বড় প্রভাব: পাকিস্তানের ৮০% কৃষিভিত্তিক এলাকা হিন্দু নদীর উপর নির্ভরশীল। জল কমলে গম, চাল, তুলো—এইসব প্রধান ফসলের উৎপাদন কমে যাবে। জলাধারে চাপ: চাষিরা ভূগর্ভস্থ জলের উপর নির্ভর করতে বাধ্য হবেন, ফলে জলস্তর পড়ে যাবে।
বিদ্যুৎ উৎপাদন কমবে: তারবেলা ও মঙ্গলা ড্যাম থেকে পাকিস্তানের প্রায় ৩০% বিদ্যুৎ আসে। জল কমে গেলে বিদ্যুৎ উৎপাদনেও ঘাটতি হবে।
অর্থনীতিতে ধস: ফসল কমে গেলে গ্রামে কাজ কমবে, শহরে অভিবাসন বাড়বে, জিডিপি কমবে।
মাটির গুণাগুণ খারাপ হবে: সেচ কম হলে জমিতে লবণাক্ততা বাড়বে, ফলন একেবারে কমে যেতে পারে।
প্রদেশগুলির মধ্যে জলবণ্টন নিয়ে ঝামেলা: ১৯৯১ সালের জলচুক্তি নিয়ে ফের রাজ্যগুলির মধ্যে টানাপোড়েন বাড়তে পারে।
রফতানি কমবে: বাসমতি চাল ও টেক্সটাইল রপ্তানি কমে গিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি হতে পারে।
জল-সাশ্রয়ী ফসলে শিফট: মিলেটের মতো ফসল চাষে যেতে হতে পারে, কিন্তু প্রশিক্ষণ ও পরিকাঠামোর অভাবে সমস্যা হবে।
২০২১ সালে, সিন্ধু অববাহিকায় ১৪৪ মেগাওয়াট ক্ষমতার অনেক ছোট জলবিদ্যুৎ প্রকল্প ভারতীয় কেন্দ্রীয় জল কমিশন কর্তৃক চুক্তির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ বলে প্রত্যয়িত হয়েছিল, প্রকল্পের তথ্য পাকিস্তানকে হস্তান্তর করা হয়েছিল।