করোনা আবহে বদলে গিয়েছে চিন্তা-ভাবনা। গভীর হয়েছে মনন। তার প্রভাব পড়েছে পুজোর থিমেও। হঠাৎই কেমন যেন গভীর শিলিগুড়ির পুজোর থিম।
চেয়ারের চারটা পা হলো মানব জীবনের চারটা অধ্যায়। শিশু-কিশোর-যৌবন ও বার্ধক্য। এই ভাবনাকে ফুটিয়ে তুলছে শিলিগুড়ির একটি পুজো কমিটি।
এ বছরের পুজোর থিম করেছে শিলিগুড়ির দাদাভাই স্পোর্টিং ক্লাব। মন্ডপসজ্জার জন্য অসম সহ মুর্শিদাবাদ থেকে কারিগররা এসেছেন।জোরকদমে চলছে শেষ পর্যায়ের প্রস্তুতির কাজ।
করোনার ধাক্কা এবার বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপুজায়। কলকাতার পর শিলিগুড়িতে রাজ্যে দুর্গাপুজায় সুনাম অর্জন করলেও গত বছর থেকে শিলিগুড়ির অধিকাংশ বিগ বাজেটের পুজো এখন ছোট করেই পালন করা হচ্ছে।
তেমনই শিলিগুড়ি দাদাভাই স্পোর্টিং ক্লাব বরাবরই বিগ বাজেটের পুজোর তালিকাতেই থাকে। তবে চলতি বছর করোনার কামড়ে এক ধাক্কায় পুজোর বাজেটে কাটছাঁট করেছে পুজো কমিটি।
তা সত্তেও কম বাজেটেই থিম পুজো করে চমক দিতে চলেছে দাদাভাই স্পোর্টিং ক্লাব। শিলিগুড়ির দেশবন্ধুপাড়ার এই ক্লাবের পুজো প্রতিবারই দর্শকের পছন্দের তালিকায় থাকে।
কিন্তু গত বছর করোনার জেরে ছোট করেই পুজো সেরেছিল এই ক্লাব। এবছর পরিস্থিতি খানিকটা ভালো হতেই থিম পুজোয় ফিরেছে দাদাভাই। দেশবন্ধুপাড়ার এই ক্লাবটির পুজো এবার ৪০তম বর্ষে পা রাখল।
এ বছর তাদের থিম "অসময়ের দুর্গাপুজো"। তাদের মন্ডপটি চেয়ারের আকারে হচ্ছে। আর গোটা মন্ডপ কাঠের ছোট ছোট চেয়ার দিয়ে সাজানো হচ্ছে। জানা গিয়েছে, কৃষ্ণনগর থেকে শিল্পীরা মায়ের গহনা তৈরির কাজ করছে।
মন্ডপসজ্জার জন্য অসম সহ মুর্শিদাবাদ থেকে কারিগররা এসেছেন। ইতিমধ্যেই তাদের মন্ডপসজ্জার কাজ অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে। চতুর্থী কিংবা পঞ্চমীতেই পুজোর উদ্বোধন করতে চান কমিটির সদস্যরা। পুজা কমিটির তরফে জানানো হয়েছে, গত বছর এই পুজোর উদ্বোধন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তাই এ বছরও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানানো হবে যাতে পুজোর উদ্বোধন করেন তিনি। শুধু পুজো নয় এবার পুজোর পাশাপাশি নানান পুজোর চারদিন নানা সেবামূলক কর্মসূচি রেখেছে পুজো উদ্যোক্তারা।
পুজো কমিটির পক্ষে অখিল বিশ্বাস বলেন, প্রতিবার পুজোর সময়টা থাকে আনন্দের। কিন্তু এখন মানুষ যে কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে তাতে এটাকে আনন্দের সময় বলা কঠিন। তাই আমরা থিমের নাম দিয়েছি অসময়ের দুর্গাপুজো। এবার মন্ডপ করতে গিয়েও কারিগরের অভাব দেখা দিয়েছে।
তাই আমাদের প্রতিমাতেও চমক রয়েছে। আমরা তুলে ধরব কারিগরের অভাবে মা দুর্গাকে তার চার ছেলে-মেয়ে সাজিয়ে দিচ্ছে। আর চেয়ারের চারটা পা হলো মানব জীবনের চারটা অধ্যায় । শিশু-কিশোর-যৌবন ও বার্ধক্য। অর্থাৎ এই সময়ে এরা সকলেই কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি।