করোনার কারণে গ্রাম বাংলার শিল্পীদের অত্যন্ত দুরবস্থা। তাই পুজোয় সেগুলিকে তুলে ধরে প্রচার চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিলিগুড়ির একটি পুজো উদ্যাক্তারা।
হারাতে বসা শিল্পীদের তুলে ধরতে এগিয়ে এলো শিলিগুড়ির সুভাষপল্লী সঙ্ঘশ্রীর পুজো কমিটি। শিলিগুড়ির সেরা পুজো তালিকায় থাকা সংঘশ্রী পুজোর ৫৫ তম বর্ষে এবারের থিম 'ঘটে পটে'।
দর্শকদের নজর কাড়তে এবারের পুজো মন্ডপে তুলে ধরা হচ্ছে পশ্চিম মেদিনীপুরের পট শিল্পকে। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে মেদিনীপুরের শিল্পীরা তৈরি করছে পূজামণ্ডপ চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি।
করোনার কারণে গত দু বছর ধরে বিগ বাজেটের পুজোগুলি কাটছাঁট করে চলেছে বাজেটে। ফলে পুজোর উপর নির্ভর করে থাকা বাংলার শিল্পীদের একটা বড় অংশ অস্তিত্ব সংকটে।
পেটের দায়ে অনেক শিল্পী নিজেদের পেশা বদলে ফেলেছে। অনেকে কাজ ছেড়ে দিচ্ছে। কিন্তু সকলে কাজ ছাড়লে শিল্প কীভাবে বাঁচবে ? এই চিন্তা কুরে কুরে খাচ্ছে শিল্পীদের মতোই পুজো উদ্যোক্তাদের।
এই পরিস্থিতিতে গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া শিল্পকে ফুটিয়ে তুলতে উদ্যোগ নিল শিলিগুড়ি সুভাষ পল্লীতে সংঘশ্রী পুজো কমিটি। মেদিনীপুরের পট শিল্পীদের তুলে ধরতে দুর্গা পুজো মণ্ডপে তুলে ধরা হলো মেদিনীপুরের পট শিল্পকে।
গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে মেদিনীপুর থেকে আসা শিল্পীরা মন্ডপ জুড়ে সাজিয়ে তুলেছে পট চিত্রে। এছাড়াও মন্ডপ সজ্জায় ব্যবহার করা হয়েছে গামছাকে।
মাটির ভাঁড়, কলসি, টব, পাখা গামছায় গ্রামীণ কাহিনী অবলম্বনে পটচিত্র মেলে ধরেছেন শিল্পী কার্তিকবাবু। আর তাোর তুলির টানে জীবন্ত হয়ে উঠছে গ্রাম বাংলার কাহিনী।
এদিন মেদিনীপুর থেকে আসা পট শিল্পী কার্তিক চিত্রধর বলেন, গত দু'বছর ধরে করোনা সংক্রমণের কারণে বহু মানুষ তাদের পেশা বদলেছে রুজি-রোজগার নিশ্চিত করার জন্য।
কিন্তু আমাদের পিঙলা নয়া গ্রাসের পট শিল্পীরা তাদের পূর্ব পুরুষের কাছ থেকে পাওয়া এই শিল্পকে কেউ ছেড়ে যাননি। গ্রামে ২৫০ জন শিল্পী লড়াই করেছেন সঙ্কট কাটিয়ে ওঠার জন্য। চরম সঙ্কটের দিনে আমাদের কারোরই কাজ ছিল না। কিন্তু তাতেও আমাদের হাত থেকে রঙতুলি হারিয় যায়নি।
অন্যদিকে পুজো কমিটির সদস্য সুরজিৎ কর বলেন, সংঘশ্রী ক্লাব প্রতিবছরই বিশেষ আকর্ষণ দর্শকদের নজর কাড়ে। তাই এ বছরও গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়ার শিল্পকে তুলে ধরতে এই প্রচেষ্টা ক্লাবের।
এবার করোনা বিধি মেনেই পুজোর আয়জন করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে থাকছে পুজোর দিনগুলিতে করোনা প্রতিরোধে জনসচেতনতা প্রচার।
আর দৃষ্টিনন্দন মণ্ডপের এক পাশে থাকবে, গত দু'বছরে করোনা সংক্রমণে মৃত প্রতিটি মানুষের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর আয়োজন।
আমরা বাড়ি বাড়ি চাঁদা তুলছি না। মন্ডপের সামনে ফ্লেক্স ঝুলছে আবেদন জানিয়ে। তাতে বল হয়েছে, কেউ এসে চাঁদা দিলে তা গ্রহণ করা হবে। কিন্তু আমরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাঁদা নেব না"।