আমাদের পৃথিবীতে সাপের ৩৫ কোটি প্রজাতি রয়েছে। যার মধ্যে প্রায় ৬০০টি বিষাক্ত। সাপের বিষ বাস্তবে তার শিকারকে পচানোর জন্য ব্যবহার করা হয়। এই মারাত্মক বিষ প্রাণঘাতী তো বটেই, কিন্তু অনেক অনেক মারণ ব্যাধির চিকিৎসা করা সম্ভব হয়।
পৃথিবীর জুড়ে পাওয়া বিভিন্ন প্রজাতির সাপেদের বিষয়ে আমাদের সচেতনতা বাড়ানো এবং জীব মণ্ডলে তাদের ভূমিকার প্রকাশের জন্য। ১৬ জুলাই ওয়ার্ল্ড স্নেক ডে রূপে পালন হয়। আসুন আজকে আমরা জানিয়ে দিয়ে একটি দ্বীপ সম্পর্কে। অর্থাৎ আইল্যান্ডের বিষয়ে। যেখানে পৃথিবীর সবচেয়ে বিষাক্ত সাপের বাড়ি।
কোথায় স্নেক আইল্যান্ড?
ইলহা দ্য কুইমাডা গ্রান্ডে (Ilha da Queimada Grande) যা স্নেক আইল্যান্ড (Snake Island)নামে পৃথিবীতে পরিচিত। একটি ছোট দ্বীপ যা ব্রাজিলের দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত। এটি সাও পাওলো রাজ্যের অংশ এবং নিজের রেইনফরেস্টের জন্য পরিচিত।
স্নেক আইল্যান্ডটি ব্রাজিলের সাও পাওলোর মূল ভূখণ্ডের সমুদ্রতট থেকে প্রায় কুড়ি মাইল দূরে অবস্থিত। এত দূরে থাকায়, তাই সাপগুলি সমুদ্রের প্রবল ঢেউ উপেক্ষা করে সাঁতরে দ্বীপ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে না।
কোন সাপের বাড়ি এই স্নেক আইল্যান্ড
স্নেক আইল্যান্ডে (Bothrups insularis) প্রজাতির সাপেদের বাড়ি, যাকে গোল্ডেন লেন্স হেডভাইপার (Golden Lancehead Viper) বলা হয়। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে ঘাতক সাপ ফের ডি লান্সের আত্মীয়। গোল্ডেন স্নেক হেড ভাইপার কেবল স্নেক আইল্যান্ডেই আপনি এইসব দেখতে পারবেন।
এই সাপ আর পৃথিবীর কোথাও দেখা যায়নি। মনে করা হয় ১১ হাজার বছর আগে যখন হিমযুগের সমাপ্তি ঘটে, তখন সমুদ্রের জল বাড়তে থাকায় এই ভূখণ্ডটি আইল্যান্ডের মতো থেকে যায় এবং মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ফলে সাপগুলো আর সমুদ্র পার করে মূল ভূখণ্ডে ফিরতে পারেনি।
কতটা ভয়ঙ্কর এ গোল্ডেন ল্যান্সহেড ভাইপার
গোল্ডেন ল্যান্সহেড ভাইপার নিজের মতোই অদ্ভুত সাপ। এটি হালকা হলুদ এবং হালকা ধূসর রঙের হয়। এছাড়া এর মাথা এবং আকার ও ফের ডি ল্যান্সের মতোই অত্যন্ত বড় হয়, এর চোখা নাক এবং লম্বা মাথা একটা ব্লেডের মত দেখায়।
এইসব সাউথ আমেরিকার সবচেয়ে ভয়ংকর এবং বিষাক্ত তম সাপের মধ্যে একটি মনে করা হয় যে ২৫০০ থেকে ৩০০০ গোল্ডেন লেন্স স্নেক আইল্যান্ডে আছে খাবার অভাব এবং পরিস্থিতি বদল হতে শুরু করায় এর সংখ্যা কমে যাচ্ছ
মানুষের এখানে যাওয়া নিষিদ্ধ
ব্রাজিল সরকার মানুষ এবং সাপেদের সুরক্ষার জন্য এই আইল্যান্ডে মানুষের যাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ব্রাজিলের নৌসেনাকেও এই আইল্যান্ডে যেতে বারণ করা রয়েছে। যদিও নৌসেনা প্রত্যেক বছর আইল্যান্ডে থাকা লাইট হাউসের মেরামত করার জন্য সেখানে যায় খুব কম সময়ের জন্য।
এমনকী গবেষকদেরও ওই আইল্যান্ডে যাওয়ার অনুমতি রয়েছে। যখন তারা যান, তখন তারা সরকারের কাছ থেকে বিশেষ অনুমতি নিয়ে তারপরে সেখানে যেতে হয়। মানুষ ও সাপ উভয়কেই সুরক্ষার জন্য এটি করা হয়েছে।