Advertisement

Poppy Cultivation: অতি সুস্বাদু, তবু কেন পোস্ত চাষ হয় না বাংলায়-কেন এত দাম? রইল কারণ

পোস্ত কেনার সামর্থ এখন বহু নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের নেই। এ রাজ্যে পোস্তর দাম প্রতি কেজি দুই হাজার টাকা। দাম বৃদ্ধির পিছনে আরও অনেক কারণ থাকলেও পোস্ত চাষের কড়াকড়িতেই চাহিদার তুলনায় জোগান কম। আর তাতেই রাজ্যে বাড়ছে দাম।

পাতে পোস্ত না হলে চলে না বাঙালির, তাও কেন রাজ্যে নিষিদ্ধ এর চাষ! সমস্যা কোথায়?
Aajtak Bangla
  • কলকাতা,
  • 20 Mar 2023,
  • अपडेटेड 10:49 AM IST

শরীর ঠান্ডা রাখতে পোস্তর জুড়ি মেলা ভার। আলু পোস্ত, ঝিঙে পোস্ত, পোস্তর বড়া! নাম শুনলেই লোভ সমালানো কঠিন হয়ে যায় আমবাঙালির। পুরোন জেনেরেশন হোক বা নতুন এই পদ পাতে পড়লে না খেয়ে ওঠা যায় না। পাতে পোস্ত না হলে চলে না এমন বাঙালির সমখ্যা নিতান্ত কম নয়। বাঙালির বড়ই প্রিয় পোস্ত বাটা, পোস্তর বড়া। কিন্তু পোস্তর আকাশছোঁয়া দামের কারণে অনেক পরিবারেই পাতে ওঠে না এই সব লোভনীয় খাবার। পোস্ত কেনার সামর্থ এখন বহু নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের নেই। এ রাজ্যে পোস্তর দাম প্রতি কেজি দুই হাজার থেকে ১৮০০ টাকা। দাম বৃদ্ধির পিছনে আরও অনেক কারণ থাকলেও পোস্ত চাষের কড়াকড়িতেই চাহিদার তুলনায় জোগান কম। আর তাতেই রাজ্যে বাড়ছে  দাম। 

পোস্ত চাষে উদ্যোগী মমতা
একটা সময় ছিল যখন বেশ সস্তা ছিল এই পোস্ত। স্বাদে চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় আমবাঙালির ঘরে ছিল নিত্যদিন আনাগোনা। এখন সেই পোস্তর কেজি প্রতি দুই হাজারের আশেপাশে।  আর এই আবহেই বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে রাজ্যে পোস্ত চাষের অনুমতি চেয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধানসভায় কয়েকদিন আগে তিনি নিজেই এই তথ্য জানিয়েছেন। খাদ্য বাজেট নিয়ে আলোচনার সময় উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তখন তিনি প্রশ্ন তোলেন পোস্ত চারটে রাজ্যে কেন চাষ হবে? আমাদের কেন চাষ করতে দেওয়া হবে না? সব পোস্ততে নেশার জিনিস তৈরি হয় না। বিরোধী বন্ধুরাও বলুন। মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন ছিল, পোস্তর বড়া খেতে অতিরিক্ত খরচ করতে হবে কেন? আমি অনুমতি চেয়ে চিঠি লিখেছি।

 

 

পোস্ত আসে আফগানিস্তান থেকে 
প্রসঙ্গত ভারতে বড় পরিমাণে পোস্ত আফগানিস্তান থেকে আমদানি করা হয়। আর আফগানিস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতির উপরে নির্ভর করে সেই আমদানি। যা কমলেই দাম বেড়ে যায় হু হু করে।  মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় জানিয়েছেন, বাংলায় পোস্ত চাষ করার অনুমতি নেই। তাই অন্য রাজ্য থেকে কিনতে হচ্ছে। ফলে বাংলার মানুষকে বেশি দামে পোস্ত খেতে হচ্ছে।

Advertisement

ভারতে কেবল এখানে পোস্ত চাষ হয়
পোস্ত চাষ নিষিদ্ধ পৃথিবীর বহু দেশেই। সেই তালিকায় রয়েছে ভারতও। পোস্তদানা আসলে বীজ। মূল ফলটি থেকে তৈরি হয় নেশাদ্রব্য আফিম।  আবার ওই ফলের ভিতর থেকে যে আঠালো তরল বার হয় সেই ‘ল্যাটেক্স গাম’ বিভিন্ন রকম ওষুধ তৈরিতে কাজে লাগে। ক্যানসারের ওষুধ ছাড়াও ব্যথানাশক ওষুধও তৈরিতে লাগে ‘ল্যাটেক্স গাম’। ভারতে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের অধীনে থাকা ‘সেন্ট্রাল ব্যুরো অব নার্কোটিকস’ দেশে পোস্ত চাষ নিয়ন্ত্রণ করে। এখন ভারতে চারটি রাজ্যে পোস্ত চাষের অনুমোদন রয়েছে। মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থানে প্রতি হেক্টর জমিতে ৫৩ কিলোগ্রাম এবং উত্তরপ্রদেশে ৪৫ কিলোগ্রাম পোস্ত উৎপাদন করতে পারেন এমন চাষিরাই অনুমোদন পান। তবে  অরুণাচলপ্রদেশে দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পোস্ত চাষ হয়। কেউ যদি অনুমোদনের বেশি চাষ করেন কিংবা নির্দিষ্ট পরিমাণে উৎপাদন করতে না পারেন তাদের লাইসেন্স বাতিল হয়ে যায়। ভারত সরকারের এনডিপিএস ১৯৮৫ আইনের ৮(বি) ধারা অনুসারে, কেউ যদি সরকারি ছাড়পত্র ছা়ড়া পোস্ত চাষ করে তবে তো বটেই, এমনকি পোস্ত মজুত করে রাখা, বহন করা এবং বিক্রি করাও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

 

 

কেন পোস্ত চাষের উপর এত কড়াকড়ি? 
কেন শুধুমাত্র তিনটি রাজ্যকেই পোস্ত চাষের অনুমতি দেওয়া হয়? এর পিছনে রয়েছে, ১৯৬১ সালে রাষ্ট্রসংঘে আয়োজিত ‘সিঙ্গল কনভেনশন অন নারকোটিক ড্রাগস’। এই কনভেনশনেই আফিমের নেশা থেকে বিশ্বকে মুক্ত করতে অধিকাংশ দেশেই পোস্ত চাষ নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। একমাত্র ভারতকে পোস্ত গাছ থেকে আফিমের আঠা উৎপাদন করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। তবে, একই সঙ্গে বেশ কিছু কঠোর শর্তও আরোপ করা হয়েছিল। সেই সকল শর্ত মানার জন্য, ১৯৮৫ সালের নারকোটিক ড্রাগস অ্যান্ড সাইকোট্রপিক সাবস্ট্যান্স আইনে, ভারতে পোস্ত চাষ নিষিদ্ধ করা হয়। শুধুমাত্র সেন্ট্রাল ব্যুরো অব নারকোটিকস-এর পক্ষ থেকে যাদের লাইসেন্স দেওয়া হয়, তারাই পোস্ত চাষ করতে পারেন।

 

 

এই পরিস্থিতিতেই বাংলায় যাতে পোস্ত চাষের অনুমোদন দেওয়া হয় সেই দাবি তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে এই প্রথম নয়,  আগেও পোস্ত চাষ নিয়ে কেন্দ্রের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা হয়েছিল রাজ্যের। ২০২০ সালে ভুবনেশ্বরে পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলির বৈঠকের সময় বিষয়টি সরাসরি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সামনে তুলে ধরেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এ বিষয়ে প্রশাসনের রক্ষাকবচে রাজ্যে পোস্ত চাষ হতে পারে বলে জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু তারপর থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও জবাব পাওয়া যায়নি। এখন ফের একবার রাজ্যবাসীর পাতে পোস্ত তুলে দিতে সরব হয়েছেন মমতা।

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement