Advertisement

First Swadeshi Fountain Pen Ink: ভারতের প্রথম স্বদেশি কালির ৮৯ বছর, বিজ্ঞাপনে ছিলেন খোদ রবীন্দ্রনাথ

First Swadeshi Fountain Pen Ink: তখনও ভারত স্বাধীন হয়নি। বিদেশী জিনিস বর্জন করে স্বদেশী জিনিসপত্রের ব্যবহারে জোর দিতে তখন দেশজুড়ে আন্দোলন চলছে। ১৯৩৪ সালে বিদেশী ঝর্ণা কলমের কালি বর্জন করে স্বদেশী কালি তৈরি করা শুরু করে সুলেখা।

ভারতের প্রথম স্বদেশী কালি সুলেখা ৮৯ বছরে, এর বিজ্ঞাপন লিখেছিলেন খোদ রবীন্দ্রনাথ!
সুদীপ দে
  • কলকাতা,
  • 11 Aug 2023,
  • अपडेटेड 6:57 PM IST
  • তখনও ভারত স্বাধীন হয়নি।
  • বিদেশী জিনিস বর্জন করে স্বদেশী জিনিসপত্রের ব্যবহারে জোর দিতে তখন দেশজুড়ে আন্দোলন চলছে।
  • ১৯৩৪ সালে বিদেশী ঝর্ণা কলমের কালি বর্জন করে স্বদেশী কালি তৈরি করা শুরু করে সুলেখা।

First Swadeshi Fountain Pen Ink: তখনও ভারত স্বাধীন হয়নি। বিদেশী জিনিস বর্জন করে স্বদেশি জিনিসপত্রের ব্যবহারে জোর দিয়ে তখন দেশজুড়ে আন্দোলন চলছে। সেই সময় স্বাধীনতা সংগ্রামী ননীগোপাল মৈত্র তাঁর ভাই শঙ্করাচার্য মৈত্রের সঙ্গে স্বদেশি কলমের কালি তৈরির উদ্যোগ নেন। ননীগোপাল ছিলেন পদার্থবিদ্যায় স্নাতকোত্তর। দুই ভাইয়ের উদ্যোগে বিদেশী ঝর্ণা কলমের কালি বর্জন করে স্বদেশি কালি তৈরির লক্ষ্যেই ১৯৩৪ সালে অবিভক্ত বাংলার রাজশাহীতে (বর্তমানে বাংলাদেশে) পথ চলা শুরু হয় সুলেখা’র।

শোনা যায়, বেঙ্গল কেমিক্যালের প্রধান কেমিস্ট সতীশচন্দ্র সামন্তকে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় স্বদেশি কলমের কালি তৈরিতে সাহায্য করতে বলেন। এর পরই আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের অনুরোধে তাঁরই গবেষণাগারে সৃষ্টি কালি তৈরির ফর্মুলা সতীশচন্দ্র তুলে দেন ননীগোপাল মৈত্রর হাতে। তারপর গোটা মিত্র পরিবার ঝাঁপিয়ে পড়েন এই স্বদেশি কলমের কালি তৈরি ও বিক্রির কাজে। ‘সুলেখা’ নামকরণের আগে এই কালিকে লোকে প্রফেসর মিত্রর কালি বলেই চিনত। শোনা যায়, ‘প্রফেসর মিত্রর কালি’র নাম ‘সুলেখা’ রেখেছিলেন সয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। এ কালি দিয়ে সুন্দর ভাবে লেখা যায়, তাই এর নাম দেওয়া হয় ‘সু’লেখা।

১৯৩৪ সালে রাজশাহীতে ঘরোয়া ভাবে তৈরি হওয়া ‘সুলেখা’ কালির চাহিদা যখন বাড়তে শুরু করে তখন উৎপাদন বাড়াতে ১৯৩৮ সালে উত্তর কলকাতার বৌবাজার এলাকায় একটা কারখানা খোলা হয়। পরে দেশের স্বাধীন হওয়ার ঠিক এক বছর আগে ১৯৪৬ সালে যাদবপুর এলাকায় সুলেখার কারখানা স্থানান্তরিত হয়। ‘সুলেখা’ কালির কারখানার নামেই এই এলাকার নাম ‘সুলেখার মোড়’ বা ‘সুলেখা’ হয়ে যায়।

বাংলার গণ্ডি ছাড়িয়ে একটা সময় দেশজুড়ে সুলেখা কালির একচেটিয়া ব্যবসা চলেছে রমরমিয়ে। সে সময় এই কালির চাহিদা এতটাই বেশি ছিল যে বাংলার বাইরেও সুলেখা কালির উৎপাদন শুরু হয়। উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদেও সুলেখা কালির কারখানা খোলা হয়। 

Advertisement

বাংলায় অতীতে অনেক অমূল্য সাহিত্য সৃষ্টি হয়েছে এই কালির আঁচড়েই। সুলেখা কালির কথা বাঙালি পড়েছে বিশ্ববরেণ্য চলচ্চিত্র পরিচালক, শিশু সাহিত্যিক সত্যজিৎ রায়ের কলমেও। সুলেখা কালির দোয়াত ধরা পড়েছে তাঁর তৈরি সিনেমার কয়েকটি দৃশ্যেও। কিন্তু নয়ের দশকের গোড়ার দিক থেকে আধুনিক বল পেনের সঙ্গে লড়াইয়ে থমকে গিয়েছিল সুলেখা কালির পথ চলা। ১৯৮৮ সালে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল যাদবপুরের সুলেখা কালির কারখানা। দীর্ঘ ১৮ বছর বন্ধ থাকার পর ২০০৬ সালে সুলেখার কালির উৎপাদন ফের চালু হয়।

২০২০ সালের অক্টোবরে মহামারী আর লকডাউনের ধাক্কা পেরিয়ে পুজোর সময় এই ঝর্না কলমের কালিতে ভর করেই নিজেদের ঐতিহ্যের সঙ্গে জুড়তে উদ্যোগী হয় সুলেখা। বল পেনের বাজারে ফেরে ঝর্না কলমের কালি। ভোল বদলে আকর্ষণীয় মোড়কে ফের বাঙালির ঘরে ফিরছে সুলেখা কালি। ফাউন্টেন পেন-সহ কালির দোয়াতে সুলেখার ‘হাতেখড়ি’ মিলছে একশো টাকায়। এছাড়াও একাধিক আকর্ষণীয় মোড়কে কালো, নীল, লাল, সবুজ রঙের ফাউন্টেন পেনের কালির সম্ভার নিয়ে হাজির হয়েছে সুলেখা।

‘ইউজ অ্যান্ড থ্রো’ বল পেনের ব্যবহারে বাড়তে থাকা প্লাস্টিক দূষণ বন্ধ করতে নতুন ভাবে প্রচার শুরু করেছে সুলেখা। ঐতিহ্য আর বাঙালির আবেগকে বাঁচিয়ে রাখতে বর্তমান প্রজন্মকে পাশে নিয়েই চলতে চায় সংস্থা। সদ্য বাজারে এসেছে সুলেখার ‘পার্মান্যান্ট ইঙ্ক’। জল দিয়ে ধুলেও নাকি এই কালিতে লেখা মুছে যাবে না। কিছু লেখা, কিছু কিছু সৃষ্টি ‘পার্মান্যান্ট’ হলে ক্ষতি কী!

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement