Advertisement

Hemanga Biswas : গানের টানে বাড়ি ছেড়েছিলেন জমিদার বংশের ছেলে হেমাঙ্গ বিশ্বাস, তারপর ইতিহাস

১৯১২ সালের ১৪ ডিসেম্বর তৎকালীন পূর্ববঙ্গ তথা বর্তমান বাংলাদেশের সিলেটের মিরাশী গ্রামে এক জমিদার বংশে জন্ম হেমাঙ্গ বিশ্বাসের। বাবা জমিদার, তাই ছোটবেলা থেকে অভাবের মুখ দেখতে হয়নি তাঁকে। কিন্তু পরিবারে গানবাজনা তথা শিল্পচর্চার কোনও চল তেমন ছিল না। এদিকে ছোট থেকেই হেমাঙ্গর মধ্যে বেড়ে ওঠে সঙ্গীত চেতনা। যত দিন এগিয়েছে ততই তাঁর মধ্যে থাকা সঙ্গীতের চারাগাছটিও বেড়ে উঠেছ। সমস্ত ধারার গানবাজনার মধ্যে বিশেষভাবে বাংলার লোকসঙ্গীতকেই আঁকড়ে ধরেন তিনি।

হেমাঙ্গ বিশ্বাস
Aajtak Bangla
  • কলকাতা,
  • 22 Nov 2021,
  • अपडेटेड 6:35 PM IST
  • লোকসঙ্গীতকে পুঁজি করে গাইতেন গণসঙ্গীত
  • গানে ছিল শ্রেণিসংগ্রামের কথা
  • শেষ জীবনেও গ্রামেগঞ্জে গেয়েছেন গান

সেই গানটার কথা মনে আছে, 'বাঁচবো বাঁচবোরে আমরা, বাঁচববোরে বাঁচবো, ভাঙা বুকের পাঁজর দিয়া, নয়া বাংলা গড়বো'। গানের প্রতিটা পংক্তিতে ছিল দরিদ্র, সর্বহারা মানুষের অধিকারের কথা, দিন দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর কথা। আর শুধু এই গানই নয়, এমনই একের পর এক সৃষ্টিতে শ্রমজীবী মানুষকে নিজেদের হক বুঝে নেওয়ার বার্তা দিয়েছেন যিনি, তিনি হেমাঙ্গ বিশ্বাস (Hemanga Biswas)। 

বাড়ি ছেড়েছিলেন হেমাঙ্গ

১৯১২ সালের ১৪ ডিসেম্বর তৎকালীন পূর্ববঙ্গ তথা বর্তমান বাংলাদেশের সিলেটের মিরাশী গ্রামে এক জমিদার বংশে জন্ম হেমাঙ্গ বিশ্বাসের। বাবা জমিদার, তাই ছোটবেলা থেকে অভাবের মুখ দেখতে হয়নি তাঁকে। কিন্তু পরিবারে গানবাজনা তথা শিল্পচর্চার কোনও চল তেমন ছিল না। এদিকে ছোট থেকেই হেমাঙ্গর মধ্যে বেড়ে ওঠে সঙ্গীত চেতনা। যত দিন এগিয়েছে ততই তাঁর মধ্যে থাকা সঙ্গীতের চারাগাছটিও বেড়ে উঠেছ। সমস্ত ধারার গানবাজনার মধ্যে বিশেষভাবে বাংলার লোকসঙ্গীতকেই আঁকড়ে ধরেন তিনি। জমিদার বাড়ির গণ্ডি পেড়িয়ে বেড়িয়ে পড়েন বাংলার মাঠেঘাটে। মিশতে শুরু করেন মানুষের সঙ্গে। সেই সঙ্গে জানতে শুরু করেন বাংলার সেই গ্রামগঞ্জের মানুষের কথা, সংগ্রহ করতে থাকেন তাঁদের গান। তবে ছেলের এই মতিগতি পছন্দ হয় জমিদার বাবার। যার জেরে ছেলের সামনে দুটি পথ খোলা রাখলেন তিনি, হয় গান নয়তো পরিবার। হেমাঙ্গ অবশ্য গানকেই বেছে নিলেন এবং সেইসঙ্গেই বাড়ি ছাড়লেন বরাবরের মতো। 

যোগ দিয়েছিলেন কমিউনিস্ট পার্টিতে

বামপন্থার মতাদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দিয়েছিলেন হেমাঙ্গ বিশ্বাস। একসময় রবীন্দ্রসঙ্গীত ও লোকসঙ্গীতের পাশাপাশি জন্ম নিল নতুন এক গানের ধারা, নাম গণসঙ্গীত (Gana Sangeet)। আর লোকসঙ্গীতকে পুঁজি করে সেই গণসঙ্গীতে হেমাঙ্গ বিশ্বাসের অবদান বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। বলতে গেলে লোকসঙ্গীতের সুর ও গয়াকীতে তিনি সাজিয়েছিলেন শ্রেণিসংগ্রামের কথা। এই প্রসঙ্গে হেমাঙ্গ বিশ্বাস নিজেই বলেছিলেন, "আমার অধিকাংশ গানের সুর উৎপাদনকারী শ্রমজীবী জনগণের সৃষ্টি। আমার গান আমার একার সৃষ্টি নয়। একটা আন্দোলনের সৃষ্টি।" 

Advertisement

আর শুধু তাই নয়, নিজের গানে চিন বা সেভিয়েতেরও বেশকিছু লোকসুরকে ব্যবহার করেছিলেন হেমাঙ্গ বিশ্বাস। জীবনের শেষ দিকেও গ্রামেগঞ্জে ঘুরে গান গেয়ে বেড়িয়েছেন তিনি। এহেন এক জনমুখী মানুষের জীবনদীপ নিভে যায় ১৯৮৭ সালের ২২ নভেম্বর। তবে তিনি না থাকলেও লোকগানে ভর করে গণসঙ্গীত গেয়ে জনগণের মনের মণিকোঠায় যে পাকা জায়গা তিনি করে গিয়েছেন তা চিরদিন স্বমহিমায় উজ্জ্বল থাকবে। 


 

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement