Advertisement

Kishore Kumar: চোখের জল লুকিয়ে অন্যকে হাসিয়ে গিয়েছেন কিশোর

চার্লি চ্যাপলিন তাঁর আত্মজীবনীতে লিখেছিলেন, তিনি বৃষ্টিতে হাঁটতে পছন্দ করেন। কারণ তাতে তাঁর চোখের জল দেখা যায় না। চ্যাপলিনের পথের পথিক ছিলেন কিশোর কুমারও। তাঁর চরিত্র, তাঁর বহুমুখী প্রতিভা, তাঁর কণ্ঠ সব কিছুতেই তিনি চ্যাপলিনের মতোই জিনিয়াস ছিলেন। কিন্তু তাঁর সঙ্গে চ্যাপলিনের শুধু এখানেই মিল নয়, আরও বহু ক্ষেত্রে মিল পাওয়া যায়।

কিশোর কুমার
Aajtak Bangla
  • কলকাতা,
  • 04 Aug 2021,
  • अपडेटेड 8:13 AM IST
  • তিনিও চ্যাপলিনের মতো চোখের জল লুকিয়ে চিরকাল মানুষকে হাসিয়ে গিয়েছেন।
  • তাঁর আজব কাণ্ড কারখানার দেখে না হেসে উপায়ও ছিল না।
  • আজ তাঁর ৯২তম জন্মদিনে আজতক বাংলার বিশেষ শ্রদ্ধার্ঘ্য।

চার্লি চ্যাপলিন (Charlie Chaplin) তাঁর আত্মজীবনীতে লিখেছিলেন, তিনি বৃষ্টিতে হাঁটতে পছন্দ করেন। কারণ তাতে তাঁর চোখের জল দেখা যায় না। চ্যাপলিনের পথের পথিক ছিলেন কিশোর কুমারও (Kishore Kumar)। তাঁর চরিত্র, তাঁর বহুমুখী প্রতিভা, তাঁর কণ্ঠ সব কিছুতেই তিনি চ্যাপলিনের মতোই জিনিয়াস ছিলেন। কিন্তু তাঁর সঙ্গে চ্যাপলিনের শুধু এখানেই মিল নয়, আরও বহু ক্ষেত্রে মিল পাওয়া যায়। তিনিও চ্যাপলিনের মতো চোখের জল লুকিয়ে চিরকাল মানুষকে হাসিয়ে গিয়েছেন। আজ তাঁর ৯২তম জন্মদিনে আজতক বাংলার বিশেষ শ্রদ্ধার্ঘ্য।

তাঁর আজব কাণ্ড কারখানার দেখে না হেসে উপায়ও ছিল না। বাংলোর বাইরে বড় বড় লিখে রেখেছিলেন 'মানসিক হাসপাতাল'। আর ঘরের দরজায় লেখা থাকত 'কিশোর হইতে সাবধান'। একবার পরিচালক কাট বলতে ভুলে যাওয়ায় সিনেমার সেট থেকে সোজা খান্ডালা পর্যন্ত গাড়ি চালিয়ে চলে গিয়েছিলেন কিশোর। এমন আরও কত মজার ঘটনা রয়েছে তার ইয়ত্তা নেই। আইনজীবী কুঞ্জলাল গঙ্গোপাধ্যায় এবং তাঁর স্ত্রী গৌরীদেবীর ছোট ছেলে আভাসকুমারের জন্ম ১৯২৯-এর ৪ অগস্ট। সেখানে এক সম্পন্ন পরিবারের ব্যক্তিগত আইনজীবী হয়ে কর্মরত ছিলেন কুঞ্জলাল।

কিশোর কুমার বলিউডে তাঁর কেরিয়ার শুরু করেন ‘বম্বে টকিজে’ কোরাস সিঙ্গার হিসেবে। কিশোর কুমার যখন ছোট, তখনই তাঁর দাদা অশোক কুমার হিন্দি সিনেমার প্রতিষ্ঠিত তারকা। অভিনয় শুরু করেছিলেন আর এক দাদা অনুপকুমারও। অশোককুমার চেয়েছিলেন তাঁর মতো ভাইও অভিনয়কে পেশা হিসেবে গ্রহণ করুন। কিন্তু অভিনয় নিয়ে আভাস আদৌ সিরিয়াস ছিলেন না। কিশোর কুমারের অভিনেতা হিসেবে বড় পর্দায় আত্মপ্রকাশ হয় শিকারি (Shikari) ছবিতে। এই ছবিতে মুখ্য চরিত্রে ছিলেন অশোক কুমার। প্রসঙ্গত, ১৯৪৬ থেকে ১৯৫৫ এর মধ্যে ২২টি ছবিতে কাজ করেন কিশোর কুমার। তাঁর মধ্যে ১৬টি ফ্লপ ছবি। তারপর ‘লড়কি’ ও ‘বাপ রে বাপ ‘ছবিতে সাফল্য পাওয়ার পর অভিনেতা হিসেবে তাঁকে গুরুত্ব দিতে শুরু করেন পরিচালক প্রযোজকরা।

Advertisement

কে এল সায়গল এবং পাকিস্তানি শিল্পী আহমেদ রুশদির প্রভাব ছিল কিশোর কুমারের উপর। এক ঘরোয়া আড্ডায় শচীনদেব বর্মন তাঁকে পরামর্শ দেন নিজস্ব গায়কি তৈরি করতে। এর পর কিশোর তাঁর গায়কিতে পাশ্চাত্য প্রভাব আনেন। মার্কিন শিল্পী জিমি রজার্স (Jimmie Rodgers) এবং নিউজিল্যান্ডের গায়ক টেক্স মর্টনের (Tex Morton) গান শুনে নিজের গায়কিরও সঙ্গী করে নেন ইয়োডলিংকে। পরে শচীন কত্তার বহু গানের সুরে কিশোর এই ইয়োডলিং ব্যবহার করেছেন।

ক্রমে ইন্ডাস্ট্রিতে রাজেশ খন্না, জিতেন্দ্র, দেব আনন্দ, অমিতাভ বচ্চনের কণ্ঠ হয়ে ওঠেন কিশোর কুমার। সলিল চৌধুরীর সঙ্গীত পরিচালনায় ‘হাফ টিকিট’ ছবিতে নারী ও পুরুষ, দ্বৈত ভূমিকার কণ্ঠে তাঁর গান বাজিমাত করে। তাঁর গাওয়া ‘Aake seedhi lagi dil pe’ গানটির কথা সবার জানা। এই গানটিটে ছেলে ও মেয়ের গলায় গেয়েছেন কিশোর কুমার। তবে মেয়ের অংশটি গাওয়ার কথা ছিল লতা মঙ্গেশকরের।

জীবনে কোনওদিন আপসের পথে পা রাখেননি কিশোর কুমার। জরুরি অবস্থার সময়ে তাঁর সঙ্গে মনোমালিন্য হয় তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল কংগ্রেসের। রাজনৈতিক দলের শর্তে রাজি হননি তিনি। তার মাসুলও তাঁকে দিতে হয়েছিল। ১৯৭৬ থেকে জরুরি অবস্থা শেষ হওয়া অবধি অল ইন্ডিয়া রেডিও এবং দূরদর্শনে তাঁকে ব্যান করা হয়েছিল।

তিনি তাঁর জীবনে চারবার বিয়ে করেছিলেন। তাঁর প্রথম স্ত্রী রুমা গুহ ঠাকুরতা। আট বছরের দাম্পত্য জীবন তাঁদের। দ্বিতীয় স্ত্রী মধুবালা, তার সঙ্গে নয় বছর ঘর করেন। মধুবালাকে বিয়ে করার জন্য মুসলিম হন কিশোর কুমার নাম নেন করিম আবদুল। কিশোর কুমার এবং মধুবালার দাম্পত্য সুখের হয়নি। শোনা যায়, বিয়ের এক মাস পরেই গুরুতর অসুস্থ মধুবালা ফিরে যান তাঁর নিজের বাংলোয়। ১৯৬৯ সালে মাত্র ৩৬ বছর বয়সে প্রয়াত হন মধুবালা। অভিযোগ, তাঁর সঙ্গে শেষ দিকে যোগাযোগ রাখেননি কিশোর কুমার।

তৃতীয়বার বিয়ে করেন যোগিতা বালিকে। যিনি বর্তমানে মিঠুন চক্রবর্তীর স্ত্রী। তবে যোগিতা ও কিশোরের বিবাহিত জীবন টিকে ছিল মোটে দু-বছরের জন্যে( ১৯৭৬-১৯৮৭)। চতুর্থবার বিয়ে করেন লীনা চন্দ্রভারকরকে। আমৃত্যু তাঁর সঙ্গেই ছিলেন কিশোর কুমার। শোনা যায় যোগিতা বালি তাঁকে ছেড়ে মিঠুন চক্রবর্তীকে বিয়ে করায় গান বন্ধ করে দেন এই কিংবদন্তী শিল্পী। তাঁর চারটি বিয়ে থেকে দুটি সন্তান রয়েছে অমিত কুমার ও সুমিত কুমার। দু’জনেই সংগীত শিল্পী।

শেষ জীবনে একেবারে একাকীত্বে দিন কাটিয়েছেন তিনি, বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে নিজের একাকীত্বের কথা বলেছেন তিনি। দিনটা ছিল ১৯৮৭ সালের ১৩ অক্টোবর। সকাল থেকেই কিশোর কুমার বলছিলেন, তাঁর দুর্বল লাগছে। উদ্বিগ্ন লীনা ডাক্তারকে খবর দিতে চান। এর পরেও মজা করে কিশোর কুমার বলেন, 'তুমি যদি ডাক্তারকে খবর দাও, আমার কিন্তু হার্ট অ্যাটাক হবে'। এটাই ছিল তাঁর শেষ কথা।

 

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement