তিন-চার বছর ধরে বছর একুশের যুবকের বুকের বাঁ দিকের পাঁজরের একাংশ জুড়ে ক্রমশ বাড়ছিল একটি টিউমার, যা আসলে ক্যান্সার। একটা সময় ওই টিউমার এতটাই বড় হয়ে গিয়েছিল যে সেটি যুবকের ফুসফুসের উপর চাপ সৃষ্টি করছিল। মথুরাপুরের কাঁকনদিঘির বাসিন্দা হারাধন পুরকায়েত ভিনরাজ্যে গিয়ে পরীক্ষা করিয়ে জানতে পারেন, তিনি ইউইংস সারকোমা (Ewing’s sarcoma) নামের এক বিরল ক্যান্সারে আক্রান্ত। লাখে এক জন এই ক্যান্সারে আক্রান্ত হন।
ভিনরাজ্যে রোগ ধরা পড়লেও চিকিৎসা মেলেনি। অনেক সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ঘুরে, ন’টা কেমো নেওয়ার পরেও তেমন ফল মেলেনি। এর পর বিশিষ্ট ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ শল্যচিকিৎসক (এমসিএইচ সার্জিক্যাল অঙ্কোলজিস্ট) ডাঃ শুভদীপ চক্রবর্তী (Dr. Suvadip Chakrabarti) এবং ডাঃ তাপস কর (Dr. Tapas Kar) প্রয়োজনীয় যাবতীয় পরীক্ষার পর হারাধনের পরিবারকে অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেন।
শেষমেশ জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে কলকাতার একটি নামী বেসরকারি হাসপাতালের ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ শল্যচিকিৎসক
(এমসিএইচ সার্জিক্যাল অঙ্কোলজিস্ট) ডাঃ শুভদীপ চক্রবর্তী হারাধনের অস্ত্রোপচারের দায়িত্ব নেন।
দীর্ঘ ৯ ঘণ্টার জটিল অস্ত্রোপচারে বাদ পড়ে বিরাট আকারের টিউমারটি, সেই সঙ্গে বাদ যায় যুবকের পাঁজরের চারটি হাড়ও। কৃত্তিম উপায় পাঁজর জুড়তে নিয়ে আসা হয় ‘বোন সিমেন্ট’। যুবকের পিঠের পিছন দিক থেকে মাংস নিয়ে এসে তাঁর বুকের পেশি তৈরি করেন চিকিৎসকরা। জুলাইয়ের শেষের দিকে এই অস্ত্রোপচারের আঠ দিন পর ৫ অগাস্ট হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান ওই যুবক। তবে এখনও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণেই থাকতে হবে ওই হারাধনকে। এড়িয়ে চলতে হবে, ক্রিকেট, ফুটবল, দৌড়ঝাপ-সহ যে কোনও পরিশ্রমসাধ্য, ঝুঁকিপূর্ণ কাজ।