মঙ্গল গ্রহে কি প্রাণের অস্তিত্ব রয়েছে? সেখানে আরও কী কী আছে? এসব অনুসন্ধানের জন্য রোভার এবং একটি ছোটো হেলিকপ্টার মঙ্গল গ্রহে রয়েছে। পৃথিবী থেকে পাঠানো এই দুই যন্ত্র মঙ্গল গ্রহের চাল-চরিত্র অনুসন্ধান করতে গিয়ে এমন কিছু তথ্য পেয়েছে যা বেশ অবাক করার মতো।
বিজ্ঞানীরা আগেই জেনেছিলেন লাল গ্রহ বেশ নীরব। কেন এত নীরব? রোভার ও সেই ছোটো হেলিকপ্টার সেই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছে। ওই দুই যন্ত্র ইতিমধ্যেই মঙ্গল গ্রহের শব্দও রেকর্ডিং করেছে। সেখানে দেখা গেছে, লাল গ্রহে শব্দের গতি পৃথিবীর তুলনায় ধীর। অর্থাৎ কেউ যদি মঙ্গল গ্রহে গান করেন, তাহলে তাঁকে চিৎকার করে গাইতে হবে। না হলে শোনা যাবে না। বিজ্ঞানীদের দাবি, মঙ্গলের শব্দের চরিত্র পৃথিবীর থেকে সম্পূর্ণ আলাদা।
কীভাবে মঙ্গল গ্রহের শব্দ রেকর্ডিং করা হল? আসলে রোভারটি মঙ্গল গ্রহের বাতাসে তার যান্ত্রিক ফ্ল্যাশ এবং হালকা ক্লিক রেকর্ড করেছে। আর তা নিয়ে গবেষণাও করেছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁরা জানতে পেরেছেন, মঙ্গল গ্রহ থেকে আসা এই শব্দগুলি অত্যন্ত পাতলা।
নেচার জার্নালে এই গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে। এই বিষয়ে টুলুজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী সিলভেস্টার মরিস বলেন, 'মঙ্গলে এর আগে কোনওদিন এমন তদন্ত হয়নি। লাল গ্রহের শব্দ নিয়ে কিছু তথ্য হাতে এসেছে যা বেশ অবাক করার মতো। আমরা আশা করি আরও অনেক তথ্য আসবে যা আমাদের সাহায্য করবে।'
আরও পড়ুন : কোন কাজ পুরুষরা একবারই করেন, কিন্তু মহিলারা বারবার? জানুন উত্তর
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ওই রোভারটি এক বছরেরও বেশি সময় ধরে মঙ্গলে রয়েছে। বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে তা পৃথিবীতে পাঠাচ্ছে। এই রোভারের সঙ্গে সংযুক্ত রয়েছে মাইক্রোফোন, ক্যামেরা, সুপারক্যাম, চিফ ইত্যাদি। এই রোভার এতটাই শক্তিশালী যে, মঙ্গলের বাতাস, ধুলোর শব্দও তা শুনতে ও রেকর্ডিং করতে সক্ষম।
এই রোভারটি মঙ্গলে চালানোর দায়িত্বে রয়েছে জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরি। তাদের তরফে জানানো হয়েছে, রোভারে যে মাইক্রোফোনটি রয়েছে তার মাধ্যমে মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলে যে পরিবর্তন হচ্ছে, তাও ক্যাপচার করতে পেরেছে।
মঙ্গলবার খুবই শান্ত
রোভারের মাইক্রোফোনগুলি যখন প্রথম মঙ্গল গ্রহে প্রথম শব্দ রেকর্ডিং করতে শুরু করে তখন আশ্চর্যরকমভাবে শান্ত ছিল চারপাশ। বিজ্ঞানীরা ভেবেছিলেন, হয়তো রোভারটি বিকল হয়ে পড়েছে।
সিলভেস্ট্রে মরিস নামে এক বিজ্ঞানী জানান, 'একটা সময় আমরা ভেবেছিলাম, মাইক্রোফোনটি ভেঙে গেছে। তার কারণ, কোনও শব্দ পাওয়া যাচ্ছিল না।' তবে পরে আমাদের ভুল ভাঙে। আমরা বুঝতে পারি, মঙ্গল এতটাই শান্ত যে আলাদা করে তার শব্দ কানে আসে না।'