Chopra Johra Durgapuja Mela: দুর্গাপুজোর পর লক্ষ্মীপুজোও এখন পেরিয়ে গিয়েছে। এখন অপেক্ষা দীপাবলি ও কালীপুজোর। কিন্তু এর মাঝে এখানে অসময়ে শুরু হয়েছে দুর্গাপুজোর আনন্দ। অবশ্য রাজ্যের অনেক জায়গায় এটা অসময় হলেও এটাই এখানকার ১৩৭ বছর ধরে দুর্গাপুজোর সময়। দশমীর অনেকদিন পেরিয়ে গেছে, লক্ষ্মী পুজোর আলোও নিভে গেছে শহর-গ্রামে। কিন্তু চোপড়ার নন্দকিশোরগছ গ্রামে এখনও চলছে উৎসবের আমেজ।
বুধবার থেকে শুরু হয়েছে শতাব্দীপ্রাচীন রীতিতে দুর্গাপুজো। আর সেই সঙ্গে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে শুরু হয়েছে বিখ্যাত জহরা মেলা।উত্তরবঙ্গের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী এই উৎসব এবার পা দিল ১৩৭তম বছরে।
স্থানীয়দের কাছে এটি ‘অষ্টমী দুর্গাপুজো’ নামেই পরিচিত। কারণ, প্রতি বছর বিজয়া দশমীর আট দিন পরই এখানে হয় দুর্গাপুজো। পুজো উপলক্ষে গ্রামের মন্দির প্রাঙ্গণে বসে তিন দিনব্যাপী বিরাট মেলা। দূরদূরান্ত থেকে ভিড় জমায় হাজার হাজার মানুষ। শুধু ধর্মীয় পুজো নয়, এই মেলাকে ঘিরে জমে ওঠে স্থানীয় ব্যবসা-বাণিজ্যও। মেলায় থাকে নাগরদোলা, পুতুলনাচ, পালাগান, ও নানা লোকসংস্কৃতির আয়োজন।
মেলা কমিটির সম্পাদক অজয় পাল বলেন, “এখানকার পুজো একদিনের হলেও তা অত্যন্ত প্রাচীন ও গৌরবময়। স্থায়ী মন্দিরে সারা বছর প্রতিমা থাকে। পুজোর আগে নতুন প্রতিমা আনা হয়। এক চালায় সিংহবাহিনী দুর্গার সঙ্গে কার্তিক, গণেশ, লক্ষ্মী ও সরস্বতী ছাড়াও মোট ২৮ জন দেবদেবীর প্রতিমা থাকে।”
কমিটির সহ-সভাপতি গণেশ পাল সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, “এই পুজো ও মেলার সূচনা হয়েছিল স্থানীয় দুই প্রভাবশালী ব্যক্তি জহরা পাল ও কুতুব পালের হাতে। জহরা পালের নামেই মেলার নাম রাখা হয় জহরা মেলা।
এখনও এই মেলাকে ঘিরে চোপড়ার বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষের মধ্যে উন্মাদনা চোখে পড়ার মতো। শিশু থেকে বৃদ্ধ, সবাই অংশ নেন এই উৎসবে। সন্ধ্যা নামলেই মন্দির প্রাঙ্গণ আলোয় ঝলমল করে ওঠে, বাজে ঢাকের তাল, মাইকের গানে ভেসে ওঠে গ্রাম। সময় বদলেছে, পুজো করার ধরনও অনেক পালটেছে, কিন্তু জহরা মেলার ঐতিহ্য আজও অটুট, আজও মানুষকে টানে সেই এক অনির্বচনীয় আকর্ষণে।