Advertisement

Suicide: পরপর মডেল- অভিনেত্রীর মৃত্যু! আত্মহত্যা কি সংক্রামক? কী বলছেন মনোবিদ?

Suicide: পরপর এই তিন মৃত্যু ঘটনায় এখনও স্তম্ভিত, আতঙ্কিত অনেকেই। বিশ্বাস করতে পারছেন না পরিবার -পরিজনেরা। প্রাথমিক রিপোর্ট বলছে, আত্মহত্যার পথই বেছে নিয়েছেন তিন তরুণী। হতাশা? নাকি অন্য কোনও কারণ? কেন এই প্রবণতা এতটা দেখা দিচ্ছে পল্লবী, বিদিশা, মঞ্জুষাদের? 

বিদিশা দে মজুমদার, পল্লবী দে ও মঞ্জুষা নিয়োগী
সৌমিতা চৌধুরী
  • কলকাতা ,
  • 28 May 2022,
  • अपडेटेड 11:17 PM IST

১৫ মে, ২৫ মে, ২৭ মে - বারো দিনের ব্যবধানে শহরে আকস্মিক মৃত্যু হয়েছে তিন অভিনেত্রী -মডেলের (Actress- Model)। পল্লবী দে (Pallavi Dey), বিদিশা দে মজুমদার (Bidisha De Majumder) ও মঞ্জুষা নিয়োগীর (Manjusha Neogi) দেহ ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। আত্মহত্যা (Suicide) না এর পিছনে রয়েছে কোনও ষড়যন্ত্র? সেই উত্তর খুঁজতে তদন্ত করছে পুলিশ।

পরপর এই তিন মৃত্যু ঘটনায় এখনও স্তম্ভিত, আতঙ্কিত অনেকেই। বিশ্বাস করতে পারছেন না পরিবার -পরিজনেরা। প্রাথমিক রিপোর্ট বলছে, আত্মহত্যার পথই বেছে নিয়েছেন তিন তরুণী। হতাশা? নাকি অন্য কোনও কারণ? কেন এই প্রবণতা এতটা দেখা দিচ্ছে পল্লবী, বিদিশা, মঞ্জুষাদের? 

কেমন হয় এসমস্ত ক্ষেত্রে মানসিক অবস্থা (Mental Health))? কীভাবে নিজেকে সামলাবেন মানসিকভাবে দুর্বল মুহূর্তে? আজতক বাংলার সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করলেন কনসালটেন্ট ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট অন্বেষা ভট্টাচার্য। 


আজতক বাংলা: তিন অভিনেত্রী -মডেল প্রায় একই বয়সী... আত্মহত্যা কি সংক্রামক? একজনকে দেখে আরেকজনের প্রবণতা থাকে?  

মনোবিদ: ছোঁয়াচে তো একেবারেই নয়। তবে এটা বলা যায়, যখন আমার চেনা জানা কেউ আত্মহত্যা করেছেন বলে শুনি, ঘটনাটি আমাদের মধ্যেও মানসিকভাবে প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষত এটা বিখ্যাত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে আরও বেশি করে প্রভাব ফেলে। বাইরে থেকে বোঝা যায় না কে অবসাদগ্রস্থ, কে নয়। যদিও সম্প্রতি ঘটে যাওয়া তিনটি ঘটনাই যে আত্মহত্যা তা এখনও বলা যাচ্ছে না। 


প্রশ্ন: এত ঘটনা ঘটছে, এরপরেও মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কি মানুষ সচেতন? 

মনোবিদ: এখনও আমরা দেখি কারও মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কোনও সমস্যা হলে, নিজের কাছে সেটা স্বীকার করাই অসুবিধাজনক হয়ে দাঁড়ায়। 'আমি অবসাদে ভুগছি', এটা অনেকে মেনে নিতে পারেন না। এরপরের ধাপটা আরও কঠিন। তা হল, কারও সাহায্য নেওয়া। আমরা শারীরিক রোগকে যতটা সহজে মেনে নেই, মানসিক রোগের ক্ষেত্রে সেটা হয় না।        

Advertisement


প্রশ্ন: পরিবারও কি দায়ী এক্ষেত্রে কিছুটা?

মনোবিদ: অনেক পরিবারে আবার অনেক ভ্রান্ত ধারণা থাকে। তারা এই বিষয়টাকে যৌথ ব্যর্থতা হিসাবে দেখেন। ভাবেন, 'আমরা পারলাম না, তাই হয়তো বাইরের লোকের কাছে যেতে হচ্ছে।' আমাদের সমাজে সমষ্টিগত সংস্কৃতিতে এখনও 'লজ্জা' বিষয়টা অনেক বেশি। যেহেতু থেরাপিতে সমস্ত খুঁটিনাটি শেয়ার করার একটা ব্যাপার থাকে, অনেকে ভাবেন 'লোকে জানলে কী ভাববে', 'থেরাপিস্ট কী ভাববেন'...। আমরা ছোটবেলা থেকেই শুনে এসেছি ডাক্তার, উকিল- এদের কাছে সব কথা খুলে বলতে হয় এবং সব কথাই গোপন থাকে। মনোবিদরাও গোপনীয়তা বজায় রাখেন। কিন্তু এটা জানা সত্ত্বেও, ভাবমূর্তি নষ্ট হওয়ার একটা ভয় থাকে। এই ধরণের বিভিন্ন মানসিকতা অনেক সময় কাজ করে।    


প্রশ্ন: কোন বয়সীদের মধ্যে আত্মহত্যা করার প্রবাণতা সবচেয়ে বেশি?

মনোবিদ: আত্মহত্যার প্রবণতা কম বয়সেই সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। লিঙ্গ, কর্ম সমস্ত কিছু নির্বিশেষে ১৫ থেকে ৩৫ বছর বয়সীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি দেখা যায়।  


প্রশ্ন: হতাশাই কি আত্মহত্যার মূল কারণ হতে পারে?  

মনোবিদ: প্রত্যাকটা ক্ষেত্রেই যে সেই ব্যক্তি হতাশ ছিলেন, তা কিন্তু নাও হতে পারে। অনেকক্ষেত্রেই দেখা যায়, হঠাৎ করে আবেগপ্রবণ হয়ে এরকম একটা পদক্ষেপ নেওয়ার থেকে, সুইসাইড করবে এমনটা আগে থেকে প্ল্যান করা থাকে। যেহেতু মঞ্জুষার মায়ের বয়ানে শোনা যাচ্ছে, সে আগেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে, সেক্ষেত্রে কিন্তু আলাদা কারণ হতে পারে। যাদের বারবার আত্মহত্যার চেষ্টা করার হিস্টরি থাকে, তাদের আবেগপ্রবণভাবে এরকম সিদ্ধান্ত নেওয়ার সম্ভাবনা থাকে। হঠাৎ মন খুব খারাপ লাগছে, মনে হচ্ছে বেঁচে থাকার কোনও মানেই হয় না...সেক্ষেত্রে এরকম একটা পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব তাদের পক্ষে। আগে যতবার চেষ্টা করেছে, ততটা হয়তো ভয়াবহ পরিণতি হয়নি, এবার হয়েছে। এছাড়াও আরও অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে।        


প্রশ্ন: যেমন? যদি একটু বিস্তারিত বলেন... 

মনোবিদ: অনেক ক্ষেত্রে কোনও ব্যক্তিত্ব সংক্রান্ত সমস্যা, মানসিক অস্থিরতা থাকতে পারে। কিংবা, কোনও মানুষ যদি কোনও আবেগ চূড়ান্ত পর্যায় অনুভব করে, তাহলে হঠাৎ করে আবেগবশত এরকম কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব।   


প্রশ্ন: পল্লবী, বিদিশা দু'জনেই একা থাকতেন... এই ঘটনাগুলি ঘটে যাওয়ার পরে বহু অভিভাবকরাও ভয় পাচ্ছেন তাদের সন্তানদের নিয়ে...তাদের এক্ষেত্রে কী করা উচিত?    

মনোবিদ: অবশ্যই খোলামেলাভাবে মেশা উচিত। কখনওই যাতে ছেলেমেয়ের এটা মনে না হয় যে, আমার বাবা-মাকে আমি কোনও একটা কথা বলতে পারব না। তারা আমায় 'জাজ' করবেন, খারাপ ভাববেন বা উল্টে দশটা কথা শোনাবেন যে, 'এরকম কী করে ভাবছিস'। কেউ যদি মনে করেন তার থেরাপির দরকার, সেই উত্তরটা যদি এরকম হয়, 'ওরকম তোর মনে হচ্ছে, তুই দু'দিন এসে বাড়িতে থাক, দেখবি সব ঠিক হয়ে গেছে...,' তখন কিন্তু সে বলার আগেও পাঁচবার ভাববে। শুধু তাই না, বর্তমান সময় বহু ছেলে-মেয়ের কোনও নেশা কিংবা খারাপ সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে সমস্যা হয়। বাবা-মায়ের কাছে ছেলে-মেয়েরা কিছু বললে সেটাকে গুরুত্ব সহকারে নিতে হবে, হালকাভাবে না। যদি সেই সন্তান এরকম কোনও কথা বলে, 'আমার ভাল লাগছে না', 'মনে হচ্ছে বেঁচে থেকে কী লাভ...' ইত্যাদি, সেক্ষেত্রে সেই পরিস্থিতিতে তাকে একা না রাখাই ভাল।  

Advertisement


প্রশ্ন: বিদিশার মতো পরিস্থিতির ক্ষেত্রে কি একা না থাকলে এরকম কিছু আটকানো সম্ভব হত? 

মনোবিদ: হতে পারে ওটা একটা আবেগের বশে করা কাজ। হয়তো ওই সময় কেউ তার সঙ্গে থাকলে, ব্যাপারটা অন্য রকম হতে পারত। এই আপসোসটা অনেক বাবা- মায়ের পরবর্তীকালে কাজ করে অনেক সময়। তাই যদি সে কোনও নেতিবাচক কথা আগেও বলে থাকে, সেক্ষেত্রে সেই মতো সিদ্ধান্ত নিতে হবে অবশ্যই। সেই সঙ্গে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব থেরাপি বা বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। 


 

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement