Advertisement

Ramakrishna Mission President: স্বামী স্মরণানন্দের পর কে? রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের পরবর্তী অধ্যক্ষ নিয়ে যা জানা জরুরি

বস্তুত, রামকৃষ্ণ মিশন একটি ট্রাস্ট পরিচালনা করে। ট্রাস্টের সদস্য সংখ্যা ছিল ২১। অনেকে দেহ রেখেছেন। এখন ট্রাস্টিদের সংখ্যা ১৭ রামকৃষ্ণ মিশনের এই ট্রাস্ট বা অছি  পরিষদ গঠনের সংবিধান এবং তার প্রক্রিয়া সবটাই স্বামী বিবেকানন্দ মঠ ও মিশন প্রতিষ্ঠার সময় নিজ হাতে করে দিয়ে গিয়েছিলেন। এখন প্রথা অনুযায়ী, এই ট্রাস্টিদের বৈঠক বসবে এবং সেই বৈঠকে ঠিক হবে পরবর্তী 'প্রেসিডেন্ট মহারাজ' অর্থাৎ অধ্যক্ষ কে হবেন। 

Belur Math Ramkrishna Mission
জয়ন্ত ঘোষাল
  • কলকাতা,
  • 29 Mar 2024,
  • अपडेटेड 2:21 PM IST

রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের (Ramkrishna Mission) ষোড়শ অধ্যক্ষ স্বামী স্মরণানন্দের (Smarananda Maharaj) দেহাবসান হল গত মঙ্গলবার রাত ৮.১৪ মিনিটে রামকৃষ্ণ মিশন সেবা প্রতিষ্ঠান হাসপাতালে। বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর। টানা ৫৭ দিন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। বুধবার বেলুড় মঠের (Belur Math) গঙ্গা তীরে তাঁর অন্তিম সংস্কার হল। প্রশ্ন এখন সমস্ত ভক্ত, সমস্ত মানুষের কে হবেন এবার রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সপ্তদশ অধ্যক্ষ? বেলুড় মঠের সূত্র বলছে , স্বামী গৌতমানন্দ প্রবীণতম সন্ন্যাসী হিসাবে কার্যকরি অধ্যক্ষ হয়েছেন কারণ স্বামী স্মারণানন্দ র দেহাবসানের পর এই পদে কোনও শূন্যতা থাকবে না, এটিই মিশনের প্রথা। তবে এবার ট্রাস্টি বোর্ডের বৈঠক হবে এবং সে বৈঠকে নতুন অধ্যক্ষর নাম চূড়ান্ত হবে। 

বস্তুত, রামকৃষ্ণ মিশন একটি ট্রাস্ট পরিচালনা করে। ট্রাস্টের সদস্য সংখ্যা ছিল ২১। অনেকে দেহ রেখেছেন। এখন ট্রাস্টিদের সংখ্যা ১৭ রামকৃষ্ণ মিশনের এই ট্রাস্ট বা অছি  পরিষদ গঠনের সংবিধান এবং তার প্রক্রিয়া সবটাই স্বামী বিবেকানন্দ মঠ ও মিশন প্রতিষ্ঠার সময় নিজ হাতে করে দিয়ে গিয়েছিলেন। এখন প্রথা অনুযায়ী, এই ট্রাস্টিদের বৈঠক বসবে এবং সেই বৈঠকে ঠিক হবে পরবর্তী 'প্রেসিডেন্ট মহারাজ' অর্থাৎ অধ্যক্ষ কে হবেন। 

বেলুড় মঠ

প্রথা অনুযায়ী, সব থেকে প্রবীণতম সন্ন্যাসীর হওয়ার কথা, সে দিক থেকে দেখতে গেলে প্রবীণতম সন্ন্যাসী হচ্ছেন স্বামী গৌতমানন্দ। সেই গৌতম মহারাজই হতে পারেন। প্রথা অনুযায়ী, ট্রাস্টিদের মধ্যে যদি মনোনয়ন সর্বসম্মত না হয় এবং অন্য কেউ অন্য কোনও নাম প্রস্তাব করেন, সে ক্ষেত্রে ট্রাস্টিদের মধ্যে অর্থাৎ সদস্যদের মধ্যে ভোটাভুটি হবে। গৌতমানন্দজির বয়সও প্রায় ৯৫ বছর। তিনি এখনও পর্যন্ত খুব ফিট আছেন। কিছুদিন আগে কাশ্মীর পর্যন্ত পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যখন স্বামী স্মরণানন্দকে দেখতে এসেছিলেন কলকাতায় তখন সাধারণ সম্পাদক মহারাজ স্বামী সুবীরানন্দের পাশে গৌতম মহারাজও উপস্থিত ছিলেন। সিনিয়র সহ-সভাপতি অবশ্য আছেন স্বামী সুহিতানন্দজি মহারাজ। সনাতন মহারাজ বলে যিনি বিশেষ পরিচিত। এখন সনাতন মহারাজ হবেন, নাকি স্মরণানন্দের পর গৌতম মহারাজ হবেন সেটাই দেখার। স্বামী স্মরণানন্দ মহারাজও দক্ষিণ ভারতের মানুষ ছিলেন। গৌতম মহারাজও পূর্বাশ্রমে দক্ষিণ ভারতের প্রতিনিধি। ভারতের কোন প্রান্ত থেকে অধ্যক্ষ নির্বাচন হবে তার কিন্তু সাংবিধানিক কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। এ ব্যাপারে বাংলার প্রতিনিধি না দক্ষিণ ভারতের প্রতিনিধি ভারতের, কোন অঞ্চলের প্রতিনিধি সেটা কোনও ক্রাইটেরিয়া নয়। সেদিক থেকে দেখতে গেলে অনেকে মনে করছেন স্বামী গৌতমানন্দজির হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। রামকৃষ্ণ মিশনের বিধি অনুসারে, দেহ অবসানের সঙ্গে সঙ্গেই মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষপদে কোনও  শূন্যস্থান থাকে না। এবং ওই পদটি সিনিয়র মোস্ট সহ-সভাপতি তিনি কার্যকরী সভাপতি হন। সেদিক থেকে দেখতে গেলে  গৌতমানন্দজি সহ-সভাপতি থেকে কার্যকরী অধ্যক্ষ হয়েছেন। এখন তিনি স্থায়ী অধ্যক্ষ হবেন কিনা সেটা ঠিক হবে পরবর্তী ট্রাস্টির বৈঠকে। এর পাশাপাশি যেহেতু স্মরণানন্দের দেহাবসানের পর ট্রাস্টিদের মধ্যে মোট পাঁচজন সহ-সভাপতি আছেন। এই পাঁচজনের মধ্যে দুজন সম্প্রতি দেহ রেখেছেন। একজন স্বামী প্রভানন্দ। ওঁর স্থানে এখনও কেউ ভাইস প্রেসিডেন্ট হননি। যদি গৌতমানন্দজি অধ্যক্ষ হন, তা হলে আরেকটি সহ-সভাপতি পদও খালি হবে। এবং সেক্ষেত্রে নতুন দুজন সহ-সভাপতি পদে আসবেন। এবং ট্রাস্টিদের মধ্যে না থাকলেও প্রবীণ মহারাজদের মধ্যে আছেন স্বামী বিমলাত্মানন্দ বা তাপস  মহারাজ। তিনি দীক্ষা দেওয়ার অধিকার পেয়েছেন। তাঁকে সহ-সভাপতি করে নিয়ে আসা হতে পারে এবং আরেকজন প্রবীণ সন্ন্যাসী যিনি কাশীপুর উদ্যানবাটির দায়িত্বে রয়েছেন স্বামী দিব্যানন্দ। তিনিও হতে পারেন সহ-সভাপতি। 

Advertisement
স্বামী স্মরণানন্দ মহারাজের সঙ্গে সাক্ষাত্‍ প্রধানমন্ত্রী মোদীর


প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রামকৃষ্ণ মিশনের ব্যাপারে প্রথম থেকেই খুব উৎসাহী। এবং গুজরাতের রাজকোটে তিনি দীর্ঘদিন ছিলেন, যখন স্বামী আত্মস্থানন্দ রাজকোটের দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন। ফলে আত্মস্থানন্দজির সঙ্গেও ওঁর একটা ব্যক্তিগত সম্পর্ক গড়ে ওঠে। নরেন্দ্র মোদী নিজে সন্ন্যাস গ্রহণ করতে চেয়েছিলেন বেলুড়মঠে। সেই সময়ে আত্মস্থানন্দজি চিঠিও লিখেছিলেন তৎকালীন অধ্যক্ষের কাছে। কিন্তু বলা হয়েছিল, তোমার জন্য রাজধর্ম আছে। তুমি সন্ন্যাস গ্রহণ করো না। বেলুড় মঠ তাঁকে এই পরামর্শ দেন। এখনও বেলুড় মঠ সম্পর্কে মোদী খুব দুর্বল। তিনি রাত্রিবাসও করেছেন বেলুড় মঠের গঙ্গাতে। আত্মস্থানন্দর দেহ রক্ষার পর তিনি এসেছেন। আত্মস্থানন্দ যখন ছিলেন তখনও বারবার এসেছেন ।

বেলুড় মঠে নরেন্দ্র মোদী

স্বামী স্মরণানন্দর কাছেও তিনি এসেছেন। সবচেয়ে বড় কথা যখন ২০১৪ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রী হন, তখন স্বামী আত্মস্থানন্দজি তাঁর জন্য ঠাকুরের প্রসাদ ও ফুল পাঠিয়েছিলেন। নরেন্দ্র মোদী সেটি নিয়ে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি ভবনে ২০১৪ সালে। সুতরাং নরেন্দ্র মোদীর রামকৃষ্ণ মিশনের সঙ্গে যে সম্পর্ক সেটা সুবিদিত। 

এই পরিস্থিতিতে রামকৃষ্ণ মিশন কিন্তু রাজনীতির সঙ্গে সম্পূর্ণ অযুক্ত। তারা তাদের নিরপেক্ষতা রক্ষা করার চেষ্টা করেন। ট্রাস্টি নির্বাচন এবং যেভাবে মঠ পরিচালনা হয়, তাও রাজনৈতিক দল বা সরকারের প্রভাব মুক্ত। রামকৃষ্ণ মিশন নিজেরাই নিজেদের ট্রাস্টির মাধ্যমে এই সমস্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement