Tajmahal 2: মুঘল সম্রাট শাহজাহান নিজের স্ত্রী মমতাজের স্মৃতিতে ভালবাসার প্রতীক হিসেবে তাজমহল তৈরি করেছিলেন। যা দেখতে দেশ-বিদেশের লোক প্রতি বছর ভিড় করেন। এবার সেই ঐতিহাসিক তাজমহলকে টেক্কা দিতে আরও একটা তাজমহল তৈরি হয়ে গেল ভারতেই। তামিলনাড়ুর তিরুবরুর জেলার আমিরুউদ্দিন শেখ দাউদ নামের এক ব্যক্তি এই তাজমহল তৈরি করিয়েছেন। পুরোনো তাজমহলের সঙ্গে এই তাজমহলের মিল হল দুটিই নিজেদের প্রিয় মানুষের স্মৃতিতে তৈরি করা হয়েছে। পার্থক্য হল শাহজাহান তৈরি করেছিলেন নিজের স্ত্রীর স্মৃতিতে, আর আমির উদ্দিন তৈরি করলেন নিজের মায়ের স্মৃতিতে।
আরও পড়ুনঃ শুধু দর্শনই নয়, রবীন্দ্র-স্মৃতি বিজড়িত মংপুতে থাকাও যাবে, খরচ কত?
আরও পড়ুনঃ
তামিলনাড়ুর তিরুবারুর জেলার এই তাজমহলের মতই দেখতে সৌধের ভিডিও বহু মানুষকে অবাক করে দিয়েছে। ২০২০ সালে আমিরুদ্দিননের মা জেলানি বিবি মারা যান। মায়ের মৃত্যু সহ্য করতে পারছিলেন না আমিরুদ্দিন। কারণ তার মা-ই তার কাছে সবকিছু ছিলেন। আমিরুদ্দিনের বক্তব্য অনুযায়ী তাঁর মা শক্তি এবং প্রেমের প্রতীক ছিলেন। কারণ ১৯৮৯ সালে একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় নিজের স্বামীকে হারানোর পর নিজের পাঁচ বাচ্চাকে পালন করা খুব সহজ ছিল না। যে সময় আমরুদ্দিনের বাবার মৃত্যু হয় তখন তার মার বয়স ছিল ৩০ বছর। আমিরুউদ্দিন বলে,ন আমাদের সম্প্রদায়ের প্রথা থাকা সত্ত্বেও আমার বাবার মৃত্যুর পর আমার মা বিবাহ করেননি। আমি এবং আমার বোন সেই সময় খুবই ছোট ছিলাম। আমার মা আমাদের পরিবারের রক্ষা করার জন্য অনেক লড়াই করেছেন। তিনি আমাদের মেরুদন্ড ছিলেন এবং আমাদের বাবার ভূমিকা পালন করেন।
মায়ের মৃত্যুর পর ভেঙে পড়েন আমিরুদ্দিন। তিনি বলেন যে ২০২০ সালে মায়ের মৃত্যুর পর আমার বিশ্বাস হচ্ছিল না যে তিনি মারা গিয়েছেন। আমার এখনও মনে হয় যে তিনি আমাদের সঙ্গেই রয়েছেন এবং আমাদের সঙ্গেই তার থাকা উচিত।আমার কাছে তিরুবরুরে কিছু জমি ছিল এবং আমি আমার পরিবারকে বলি যে আমার মায়ের দেহ কবরস্থানে না দিয়ে নিজের জমিতে কবর দিতে চাই। আমিরুদ্দিন জানান যে আমি আমি প্রথমে তার স্মৃতিতে একটি স্মারক তৈরি করতে চেয়েছি। আমার পরিবার এতে কোন বাধা দেয়নি।
আমিরুদ্দিন সিদ্ধান্ত নেন যে নিজের মায়ের স্মারক তৈরি করবেন এবং এর পরে নির্মাতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং তারা প্রসিদ্ধ তাজমহলের প্রতিকৃতি বানানোর পরামর্শ দেন। যদিও প্রথমে তিনি এমনটা করতে চাননি। তিনি কিন্তু পরে তিনি বিষয়টিকে সম্মতি দেন। ২০২১ সালের ৩ জুন কাজ শুরু হয়।
কাজ শুরু করে ২০০-র বেশি লোকেরা। এক একটা জমিতে আট হাজার বর্গফুটের তাজমহলের প্রতিকৃতি বানানোর জন্য দু'বছর ধরে কাজ করেন। এটি বানাতে প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। তিনি বলেন আমার মা ৫-৬ কোটি টাকা রেখে গিয়েছিলেন। আমি সেই টাকা খরচ করে এই সৌধ তৈরি করি। এখন তিনি সেই জমি এবং বাচ্চাদের জন্য শিক্ষা এবং নামাজ পড়ার ব্যবস্থা করেছেন