Advertisement

Deocha Pachami : দেওচা-পাচামিতে জমিজট, কী এই কোল ব্লক? জানুন বিস্তারিত

Deocha Pachami Birbhum Coal Block: দেওচা-পাচামিতে জমিজট, কী এই কোল ব্লক? জানুন বিস্তারিত দেউচা-পাচামি কয়লা ব্লক হল পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার মহম্মদবাজার ব্লকের অন্তর্গত দেউচা ও পাচামি এলাকার একটি কয়লা খনি। এটি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম কয়লা খনি। এশিয়া মহাদেশের বৃহত্তম। এই খনির কাজ শুরুর বিষয়ে সবুজ সংকেত দিয়েছে কেন্দ্র সরকার। ১২ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে অবস্থিত এই খনি।

কয়লা খনিতে জমিজট
সৌমেন কর্মকার / ভাস্কর মুখোপাধ্যায়
  • বীরভূম,
  • 29 Nov 2021,
  • अपडेटेड 6:56 PM IST
  • জমিজটে এশিয়ার বৃহত্তম কোল ব্লক
  • আদিবাসীদের একাংশ জমি দিতে অস্বীকার করছে
  • জমি অধিগ্রহণ নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর

সিঙ্গুরে জমি অধিগ্রহণ বিরোধী আন্দোলনকে হাতিয়ার করে ২০১১ সালে রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস। তারপর কেটে গেছে ১০ বছর। পরপর দুবার বিপুল সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় ফিরেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু, সেই জমিজটই যেন এখন গলায় কাঁটা হয়ে বিঁধছে তৃণমূল সুপ্রিমোর। সৌজন্যে বীরভূমের দেউচা- পাচামি কয়লা ব্লক। সেখানে এখনও জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরুই করতে পারেনি রাজ্য সরকার। 

দেউচা পাঁচামি কয়লা ব্লক কী ? 

দেউচা পাচামি কয়লা ব্লক হল পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার মহম্মদবাজার ব্লকের অন্তর্গত দেউচা ও পাচামি এলাকার একটি কয়লা খনি। এটি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম কয়লা খনি। এশিয়া মহাদেশের বৃহত্তম। এই খনির কাজ শুরুর বিষয়ে সবুজ সংকেত দিয়েছে কেন্দ্র সরকার। ১২ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে অবস্থিত এই খনি। 

দেওচা-পাঁচামি কোল ব্লক

প্রাথমিক সমীক্ষা অনুযায়ী, দেউচা-পাঁচামিতে প্রায় ২১০ কোটি ২০ লাখ টন কয়লা মজুত রয়েছে। কয়লা মজুতের পরিমাণের হিসাবে এই কয়লা খনিটি ভারতের ও এশিয়ার বৃহত্তম এবং বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম কয়লা খনি। খনি থেকে কয়লা তোলার কাজ শুরু হলে কমপক্ষে ১২ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হবে। প্রায় এক লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। এই খনি থেকে কয়লা উত্তোলন শুরু হলে বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাশাপাশি NTPC-কাটোয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লা দেওয়া হবে। প্রথম পর্যায়ে দেওয়ানগঞ্জ থেকে জমি নিয়ে কাজ শুরু করার কথা। 

কয়লা ব্লকের অবস্থান ও জমি 

দেউচা-পাচামি বীরভূমের মহম্মদবাজারের হরিণ সিংঙ্ঘা কোল ব্লক। ৩৪০০ একর জমি নিয়ে ১১৭৮ মিলিয়ন হেক্টরে কয়লা ব্লক রয়েছে। ৩৪০০ একরের মধ্যে ১ হাজার একর সরকারি জমি। বাকি জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। এই কয়লা খনি থেকে নিকটতম সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রেল স্টেশন হল সাঁইথিয়া রেলস্টেশন। পানগড়-মোরগ্রাম হাইওয়ে এই কয়লা খনি বা ব্লক দিয়ে গিয়েছে। 

Advertisement
মহম্মদবাজারে রয়েছে এই কোল ব্লক

দেউচা-পাচামি তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতকে নিয়ে গঠিত। হিংলো গ্রাম পঞ্চায়েত, ভাঁড়কাটা গ্রাম পঞ্চায়েত এবং দেউচা গ্রাম পঞ্চায়েত। এই হিংলো গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে আছে ২১টি গ্রাম। ভাঁড়কাটা গ্রাম পঞ্চায়েতে ৩৪টি গ্রাম আর দেউচা গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে আছে ২৮টি গ্রাম। আর এই সব গ্রামের মধ্যেই দেওয়ানগঞ্জ ও হরিণসিংহা এলাকা থেকে শুরু হবে কয়লা উত্তোলনের কাজ৷

এলাকার জনসংখ্যা  

প্রাথমিক সমীক্ষা অনুযায়ী প্রায় ৩০১০ পরিবার এই খনি অঞ্চলে বসবাস করে। যার মধ্যে ১০১৩ আদিবাসী পরিবার। এই এলাকায় রয়েছে ১২টি গ্রাম। যার মধ্যে ৪৩১৪টি বাড়িতে ২১ হাজারের বেশি মানুষ বাস করেন। যাঁর মধ্যে ৩ হাজার ৬০০ জন তফশিলি জাতিভুক্ত এবং ৯০৩৪ জন তফসিলি উপজাতিভুক্ত সম্প্রদায়ের৷

মূলত আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ এই কোল ব্লকের আশপাশে বসবাস করেন

জমি অধিগ্রহণ ও মুখ্যমন্ত্রী মমতার ঘোষণা 

এই কয়লা ব্লকে শীঘ্রই পুরোদমে কাজ শুরু করতে চাইছে রাজ্য সরকার। সেই জন্য জমি অধিগ্রহণ নিয়ে বিধানসভায় ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেছিলেন, 'সিঙ্গুরে যেভাবে জমি অধিগ্রহণ শুরু হয়েছিল, আমরা সেভাবে করব না। আমরা প্রথমে নিজেদের জমি দিয়ে শুরু করব। তারপর প্যাকেজটা। জমি দিলে দেওয়া হবে আর্থিক ক্ষতিপূরণ ও বাড়ি।' 

তিনি জানিয়েছিলেন, জমিদাতাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে৷ বাড়িও দেওয়া হবে৷ পরিবার পিছু একজন চাকরি পাবেন৷ ক্ষতিপূরণের নানা স্তর থাকবে৷ বাড়ি-সহ জমি থাকলে বিঘা প্রতি ১০-১৩ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে৷ এছাড়াও স্থানান্তকরণের জন্য পাবেন পাঁচ লাখ টাকা। আর আর কলোনিতে পাবেন ৬০০ বর্গফুটের বাড়ি। যে সব পরিবার বাড়ি জমি হারাবে, তাঁদের পরিবারের একজন জুনিয়র কনস্টেবলের চাকরি পাবেন। এমন চাকরি দেওয়া হবে ৪৯৪২ জনকে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুনর্বাসন প্যাকেজ ঘোষণা করলেও খুশি নন আদিবাসীদের একাংশ

মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, প্রায় ৩ হাজার জন ক্রাশার লেবার রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ১ লাখ ২০ হাজার টাকা পাবেন। ওই এলাকায় ১৬০ জন কৃষি শ্রমিক ৫০ হাজার টাকা পাবেন। ৫০০ দিনের জন্য ১০০ দিনের কাজ পাবেন। ২৮৫ জন ক্রাশার মালিক তাঁদের জমি বাড়ির দাম এবং ৫০ হাজার টাকা শিফ্টিং অ্যালাউন্স পাবেন। ছয় মাস ধরে ১০ ট্রাক ব্যাসল্ট বিনামূল্যে পাবেন। কাছের চাঁদা মৌজায় ব্যাসল্ট শিল্প উদ্যানের পুনর্গঠন হবে। ২৭ জন খাদান মালিক জমি ও বাড়ির দাম পাবেন।

আদিবাসীদের একাংশের বিক্ষোভ 

জমি অধিগ্রহণ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরই শুরু হয়েছে জটিলতা। আদিবাসীদের একাংশ জমি দেওয়ার পক্ষে নন। তাঁদের মতে, প্রথমত জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত এক তরফাভাবে নিয়েছে রাজ্য সরকার। তাঁদের জমি নেওয়া হবে, ঘোষণা করলেও কোনওরকম আলোচনায় ডাকা হয়নি। দ্বিতীয়ত, যে প্যাকেজ রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছে, জমি ছেড়ে দেওয়ার পর তা তাঁরা পাবেন এমন কোনও নিশ্চয়তা তাঁরা পাচ্ছেন না। তবে রাজ্য সরকারের স্পষ্ট ঘোষণা, সিঙ্গুরে যেভাবে জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল সেভাবে এখানে হবে না। সমস্যা সমাধানে সরাসরি বিক্ষুব্ধদের সঙ্গে কথা বলতেও শুরু করেছে রাজ্য সরকার।

আদিবাসী গাঁতার তরফে আন্দোলন চলছে

জমিজট মেটাতে তৎপরতা

Advertisement

জমিজট মেটাতে তৎপর রাজ্য সরকারও। দেউচা পাঁচামি নিয়ে কয়েকদিন আগে সিউড়ির রবীন্দ্রসদনে স্থানীয় আদিবাসীদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রশাসনিক কর্তারা। সেই বৈঠকে প্রকল্প সম্পর্কিত সকল তথ্য তুলে  ধরা হয় আদিবাসী নেতাদের সামনে।
এর কিছুদিন পর এলাকায় বাইক মিছিল করে তৃণমূল। দেউচা পাচামি কয়লা খনি প্রকল্পের প্রচারের লক্ষ্যে ওই এলাকার গ্রামে গ্রামে বাইক মিছিল করা হয়। আদিবাসীদের একাংশের অভিযোগ, তাঁদের কার্যত ভয় দেখানোর জন্য এই মিছিল করে তৃণমূল। তারপর যদিও বেঁকে বসেন তাঁরা। 

জমিজট মেটাতে তৎপর তৃণমূল কংগ্রেস

শুরু রাজনৈতিক চাপান-উতোর 

এদিকে জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু না হওয়ায় ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। একে অপরের দিতে আঙুল তুলতে শুরু করেছে BJP ও TMC। রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল BJP-র অভিযোগ, কেন্দ্র সরকার এই কয়লাব্লক রাজ্যের হাতে তুলে দিয়েছে। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত রাজ্য সরকার জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরুই করতে পারেনি। এই নিয়ে BJP-র সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, 'আমরা তো চাই কয়লা ব্লকের কাজ শুরু হোক। তাতে রাজ্যেরই লাভ। কয়েকশো কোটি টাকা রাজ্যের ঘরে আসবে। বেকাররা কাজ পাবে। রাজ্যের অর্থনীতি উন্নত হবে। কিন্তু, এই সরকার জমি অধিগ্রহণই শুরু করতে পারেনি এখনও। তারা আলোচনাও চালাতে পারছে না। কোনও সমস্যা হলে সবাইকে ডাকুক। আমরাও বসব। আলোচনা করব একসঙ্গে।' 

কোল ব্লকের পক্ষেই তাঁরা, জানিয়েছেন দিলীপ ঘোষ

প্রসঙ্গত, জমি অধিগ্রহণ ইস্যুতে কয়েকদিন আগে এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন BJP নেতা রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তা নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মহম্মদ বাজার ব্লক এলাকা। অভিযোগ, তৃণমূলের তরফে রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়কে বাঁধা দেওয়া হয়। তাঁকে কালো পতাকাও দেখানো হয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।  

তৃণমূলের মাস্ট্রারস্ট্রোক

দেউচা-পাঁচামি কয়লা খনি নিয়ে রাজ্য সরকার প্যাকেজ ঘোষণা করার সময় তার বিরোধিতা করেছিলেন BJP ঘনিষ্ঠ আদিবাসী নেতা সুনীল সোরেন। এই প্যাকেজ মানবেন না বলে সাফ জানিয়েছিলেন তিনি। তবে তারপরই মাস্ট্রারস্ট্রোক দেয় TMC। ওই আদিবাসী নেতাকে তৃণমূলে যোগদান করান বীরভূম জেলার দলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। তৃণমূলে যোগ দিয়ে ভোলবদলে সুনীল সোরেন বলেন, 'আমরা বরাবর দেউচা পাচামি কয়লা খনি নিয়ে রাজ্য সরকারের কাছে দাবি করেছিলাম লিখিত আকারে প্যাকেজ ঘোষণা করা হোক। সেইমতো রাজ্য সরকার লিখিত আকারে প্যাকেজ আমাদের হাতে তুলে দিয়েছে। তবে এই নিয়ে আমরা আগামী দিনে সকলের সঙ্গে আলোচনা করেই আমাদের সিদ্ধান্ত জানাব।'

TMC-তে ইতিমধ্যেই যোগ দিয়েছেন এক আদিবাসী নেতা

আদিবাসীদের একাংশ এখনও বিক্ষুব্ধ 

কয়লা ব্লকের জমি অধিগ্রহণ বিরোধী আন্দোলন করছে আদিবাসী গাঁওতা। এই সংগঠনের সম্পাদর রবীন সোরেনের বললেন, 'রাজ্য সরকার প্যাকেজ ঘোষণা করেছে একথা ঠিক। জেলাশাসকের তরফে আমাদের হাতে শ্বেতপত্রও তুলে দেওয়া হয়েছে। তবে তা ত্রুটিপূর্ণ। যে ক্ষতিপূরণ, বাড়ি ইত্যাদি দেওয়ার ঘোষণা করা হয়েছে তাতে আমরা সন্তুষ্ট নই। আর রাজ্য সরকার যে বাড়ির কথা বলেছে, সেখানে আমাদের পক্ষে থাকা কার্যত অসম্ভব। কারণ, আমরা এতদিন খোলামেলা জায়গায় বসবাস করেছি। আমাদের অনেকের বাড়ি এখনও বাবা-কাকাদের নামে রয়েছে। তাঁদের নামে বাড়ি থাকলেও কি আমরা বাড়ি পাব? এসব প্রশ্ন আমাদের মনে রয়েছে। আমরা চাই, রাজ্যের তরফে আমাদের সঙ্গে বসা হোক। এববার নয়, হাজারবার বসতে রাজি আছি। কিন্তু, আমাদের দাবি মেনে নেওয়ার পরই আন্দোলনের থামবে। না হলে এই আন্দোলন চলবে।' 

Advertisement

মাওবাদীদের প্রভাব ? 

BJP-র একাংশের দাবি, এই কোল ব্লক বিরোধী যে আন্দোলন রয়েছে তাতে মদত দিচ্ছে মাওবাদীরা। ঝাড়খণ্ড লাগোয়া এই জেলায় মাওবাদীদের গতিবিধি আগেও দেখা দিয়েছে। এখানে কোল ব্লক কাজ শুরু করে দিলে মাওবাদীরা তাদের জমি হারাবে। তারা এই কোল ব্লক থেকেও নানারকম সাহায্য পেয়ে থাকে। তাই সরকার ধীরে চলো নীতিতে চলছে।  

কোল ব্লকে মাও প্রভাব ?

প্রজেক্ট অফিস তৈরির কাজ শুরু 

এখনও জমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু না হলেও বীরভূমের সিউড়ির আবদারপুরে গড়ে উঠেছে এই কোল ব্লকের প্রজেক্ট অফিস। এই অফিস থেকেই প্রাথমিক কাজকর্ম হবে। কোল ব্লক এলাকায় কোন জায়গায় ড্রিলিং করা হবে, কোথায় বিদ্যুৎ সংযোগ হবে,  কোথায় কী কী নির্মাণ হবে, সব ঠিক হবে এখানেই। ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে সিউড়ির আবদারপুরে ইতিমধ্যে এই প্রজেক্ট অফিস তৈরির কাজ শুরু হয়েছে পুরোদমে।

জমি অধিগ্রহণ শুরু না হলেও প্রোজেক্ট অফিসের কাজ চলছে

জেলাশাসকের বক্তব্য

বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায় বললেন, 'এই প্যাকেজ নিয়ে দুয়ারে দুয়ারে প্রচার ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। কোল ব্লক এলাকার মানুষ প্রতিদিনই আমাদের কাছে আসছে তাদের দাবি দাওয়া নিয়ে। আমরা সাধ্যমতো সাহায্য করছি, আশ্বাস দিচ্ছি। আর যাঁরা এখনও বিরোধিতা করছেন, তাঁদের সঙ্গেও বসব। রাজ্য সরকার সেরকম নির্দেশিকা দিলেই আমরা কাজ শুরু করে দেব। আমাদের তরফে কোনও প্রচেষ্টায় খামতি থাকবে না।'   

কয়লাব্লক ও পরিবেশের উপর প্রভাব  

এই কয়লাব্লক চালু হলে কী প্রভাব পড়তে পারে পরিবেশের উপর? এই বিষয়ে পরিবেশবিদ ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ড: স্বাতী নন্দী চক্রবর্তী, 'কয়লা ব্লক থেকে প্রচুর কার্বন নির্গত হয়। যা মানুষের পক্ষে ক্ষতিকারক তো বটেই পাশাপাশি গোটা পরিবেশের পক্ষেও। সেই কারণে, এই প্রকল্প যাঁরাই করছেন, তাঁদের প্রথমেই উচিত ওই এলাকার প্রকৃতি যেন বেঁচে থাকে সেই দিকটা খেয়াল রাখা। প্রথমে পরিংসখ্যান করা দরকার। সেখানকার বাতাসে কোন উপাদান কী পরিমাণে আছে ইত্যাদি। তারপরই কাজ শুরু করা দরকার। শিল্পের প্রয়োজন আছে। কিন্তু, প্রকৃতির ভারসাম্যকে নষ্ট করে নয়। পরিসংখ্যানে যদি দেখা যায়, সেই রিপোর্ট সব ঠিক আছে তাহলে কাজ এগোনো যেতেই পারে। আর রিপোর্ট ঠিক না থাকলে সেখানে যাঁরা কাজ করবেন, তাঁদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। 

পরিবেশ কর্মী ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ড: স্বাতী নন্দী চক্রবর্তী

আবার পরিবেশ কর্মী সুভাষ দত্ত বলেন, দেওচা পাচামিতে যে কয়লা খনি হচ্ছে তা খোলা মুখ খনি। তাই এলাকায় ব্যাপক দূষণ হবে। এছাড়াও এলাকায় এই কয়লা নিয়ে হাজার হাজার ট্রাক আসবে। প্রতিদিন যা ধুলো ওড়াবে সেটাতেও দূষণ। সব থেকে মারত্মক এই এলাকায় প্রচুর গাছ কাটা পড়বে। সেদিকটাই খেয়াল রাখা দরকার।  

আদৌ কি বাস্তবায়িত হবে এই কোল ব্লক? সময়ই দেবে তার উত্তর

আদৌ কি প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে? এখনও পর্যন্ত কোল ব্লকের জন্য জমি অধিগ্রহণ শুরু করতে পারেনি রাজ্য সরকার। পুনর্বাসন প্যাকেজ নিয়ে ইতিমধ্যেই একাধিক জটিলতা দেখা দিয়েছে। আদিবাসীদের একাংশ এখনও নিজেদের অবস্থানে অনড়। সঙ্গে রয়েছে তৃণমূল-BJP রাজনৈতিক চাপানউতোর। সুতরাং, সমস্ত জটিলতা কাটিয়ে জমি অধিগ্রহণ কবে থেকে শুরু করতে পারবে সরকার, সেটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন। 

 

Advertisement

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement