Advertisement

Who is Nandalal: 'ওহে নন্দলাল...' কোথা থেকে এল এই নাম? শুধুই গান নয়

বস্তুত 'ওহে নন্দলাল' শব্দবন্ধটি এই মুহূর্তে জাতীয় রাজনীতিতেও বেশ চর্চায় চলে এসেছে। সৌজন্যে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, পবিত্র সরকার ও স্বপন বসুমুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, পবিত্র সরকার ও স্বপন বসু
অরিন্দম গুপ্ত
  • কলকাতা,
  • 30 Mar 2023,
  • अपडेटेड 6:48 PM IST
  • মমতা ও 'ওহে নন্দলাল'
  • 'নন্দলাল' নামটিই কেন বাছলেন মমতা? 
  • দীজেন্দ্রলাল রায়ের কবিতার ভণ্ড দেশপ্রেমী 'নন্দলাল'
  • সলিল চৌধুরীর সেই বিখ্যাত গান

'ওহে নন্দলাল... শুনছি নাকি মেয়ের বিয়ে, তো পাত্র কেমন দেকে এলে?' সলিল চৌধুরীর (Salil Chowdhury) লেখা ও সুর দেওয়া এই গানটির জনপ্রিয়তা নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। বিখ্যাত লোকগীতি শিল্পী স্বপন বসুর (Swapan Basu) গলায় গানটি অন্য মাত্রা পেয়েছে বহু দিন আগেই। বস্তুত, 'ওহে নন্দলাল' শব্দবন্ধটি এই মুহূর্তে জাতীয় রাজনীতিতেও বেশ চর্চায় চলে এসেছে। সৌজন্যে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। যার নির্যাস, 'নন্দলাল' শব্দবন্ধটিই কেন ব্যবহার করলেন তৃণমূলনেত্রী, সে প্রশ্নটাও ঘুরপাক খাচ্ছে রাজনীতির অন্দরে। 

রাজনৈতিক বোদ্ধাদের একাংশের দাবি, ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের প্রচারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর গলায় বারবার শোনা গিয়েছিল, 'দিদি... ও দিদি।' দীর্ঘ সুর টানা এই আহ্বান কার উদ্দেশে, রাজ্যবাসী বুঝে গিয়েছিল অচিরেই। তারই পাল্টা মমতার কটাক্ষ, 'ওহে নন্দলাল।' 

আরও পড়ুন

মমতা ও 'ওহে নন্দলাল'

রেড রোডে 'কেন্দ্রীয় বঞ্চনা'র প্রতিবাদে ধর্নায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নাম না-করে কটাক্ষ করলেন, 'ওহে নন্দলাল, ১১৪৯ টাকায় ফুটছে বিনা পয়সার চাল। ওহে নন্দলাল বাহবা, বাহবা, বাহবা। বাহবা নন্দলাল।' আজ অর্থাত্‍ বৃহস্পতিবারও ধর্নার দ্বিতীয় ও শেষদিনে মমতার গলায় শোনা গেল সেই কটাক্ষ। একই ভাবে কারও নাম না করে মমতা বললেন, 'ওহে নন্দলাল, বাংলাকে কিছু দেবেন না। একশো দিনের কাজের টাকা দেবেন না? এলআইসি-কে বেচে দিয়েছেন আদানির জন্য।' 

'নন্দলাল' নামটিই কেন বাছলেন মমতা? 

এখন প্রশ্ন হল, মোদীকে কটাক্ষের জন্য 'নন্দলাল' নামটিই কেন বাছলেন মমতা? বাংলায় বহুল প্রচলিত এই শব্দবন্ধের উত্‍স খোঁজার চেষ্টা করল bangla.aajtak.in। এ ক্ষেত্রে বেশ কিছু বিষয় উঠে এল। প্রথমত, দীজেন্দ্রলাল রায়ের বিখ্যাত কবিতা 'নন্দলাল'। দ্বিতীয়ত, হিন্দি ভজনে শ্রীকৃষ্ণকে যশোধার আদরের ডাক, 'নন্দলালা'। তৃতীয়ত, সলিল চৌধুরীর সুরে ও কথায় সেই বিখ্যাত গান,  'ওহে নন্দলাল... শুনছি নাকি মেয়ের বিয়ে, তো পাত্র কেমন দেকে এলে?' 

Advertisement

দীজেন্দ্রলাল রায়ের কবিতার ভণ্ড দেশপ্রেমী 'নন্দলাল'

শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকারের কথায়, 'আমার ঠিক জানা নেই, উনি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) ঠিক কী পরিপ্রেক্ষিতে এই শব্দটা তুলে আনলেন। নন্দলাল আমরা হিন্দি ভজনে প্রায়ই কৃষ্ণের একটা নাম হিসেবে পাই। নন্দলালা। কৃষ্ণকে যশোধার আদরের ডাক।  এখন সেই প্রেক্ষিতে যদি ব্যঙ্গ করে বলে থাকেন, সেটা একটা হতে পারে। আরেকটা হতে পারে, কবি দীজেন্দ্রলাল রায়ের একটা কবিতা আছে, যেখানে নন্দলাল নামে একটি চরিত্র যে আসলে একজন ছদ্মবেশী দেশপ্রেমিক। দেশকে মোটেই ভালবাসে না, কিন্তু সে দেখায় যে, আমি দেশকে ভালবাসি। আদৌ দেশের প্রতি তার কোনও ভালবাসা নেই।' 

দীজেন্দ্রলাল রায়ের কবিতাটির প্রথম কয়েকটি লাইন হল, 'নন্দলাল তো একদা একটা করিল ভীষণ পণ... স্বদেশের তরে, যা করেই হোক, রাখিবেই সে জীবন। সকলে বলিল, 'আ-হা-হা কর কি, কর কি, নন্দলাল?' এই কবিতায় নন্দলাল নামক চরিত্রটিকে কবি বর্ণনা করছেন, একজন ভণ্ড দেশপ্রেমিক হিসেবে। 

সলিল চৌধুরীর সেই বিখ্যাত গান

এবার আসা যাক, সলিল চৌধুরীর সেই বিখ্যাত গানটির প্রসঙ্গে। স্বপন বসুর গলায় যা আজ ইন্টারনেটের যুগে ভাইরাল। স্বপন বসু 'বাংলা ডট আজতক ডট ইন'-কে জানালেন 'ওহে নন্দলাল' গানটি সম্পর্কে। তাঁর কথায়, 'গানটি সলিল চৌধুরী লিখেছিলেন। গেয়েছিলেন কার্তিক কুমার ও বসন্ত কুমার। তখন আমি সলিল চৌধুরীকে জিগ্গেস করি, গানটি আমি একক কণ্ঠে গাইলে কেমন হয়? উনি বললেন খুব ভাল হয়। খুব উত্‍সাহ দিলেন। তার আগে এরকম স্যাটায়ার সুকুমার রায়ের 'সত্‍ পাত্র' কবিতায় পেয়েছিলাম। তারপর সেই ধরনের এরকম একটা গান যে হতে পারে, এত সুন্দর একটা স্যাটায়ার গান, সেটাকে ওই উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া, সলিল চৌধুরীর পক্ষেই সম্ভব। এখন আমি বিভিন্ন জায়গায় দেখতে পাই, ওই গানটির লাইন নিয়ে রাজনৈতিক ভাবে রিলেট করার চেষ্টা হচ্ছে।'

Read more!
Advertisement
Advertisement