লন্ডনের ঐতিহাসিক লর্ড’স মাঠে ১২ জুলাই, ভারত বনাম ইংল্যান্ড টেস্টের তৃতীয় দিনের শেষটা ছিল উত্তেজনাপূর্ণ। যা দীর্ঘদিন ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে গেঁথে থাকবে। দিনের আলো পড়ে আসছে, আর তখনই শুরু হল নাটক। ইংল্যান্ড ওপেনার জ্যাক ক্রলি সময় নষ্ট করার চেষ্টা করলেন, আর সেখানেই ভারতের অধিনায়ক শুভমান গিল খেপে গেলেন। কারণ ভারত চাইছিল অন্তত কয়েকটা ওভার করতে। যদি একটা আধটা উইকেট তুলে নেওয়া যায়।
কী হয়েছিল ঠিক?
ইংল্যান্ড তাদের দ্বিতীয় ইনিংসের প্রথম ওভার খেলতে নামে। ভারতের উদ্দেশ্য ছিল, অন্তত দুই ওভার করে প্রতিপক্ষকে একটু চাপে ফেলা। কিন্তু জ্যাক ক্রলি বারবার বল করার ঠিক আগে সরে যাচ্ছিলেন, ফিজিও ডেকে সময় নষ্ট করছিলেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে শুভমান গিল সরাসরি গিয়ে জ্যাক ক্রলির মুখোমুখি হয়ে বলেন –“Grow some b..ls!”**স্লিপে দাঁড়িয়ে থাকা গিল মুখ দেখে বোঝা যাচ্ছিল,তিনি মোটেও খুশি নন।
বল বাই বল: উত্তেজনার চূড়ান্ত
0.1: বল ছাড়া।
0.2: প্রথম রান তুলে নেয় ইংল্যান্ড।
এরপরই শুরু ক্রলির অভিনয়।
0.3-0.4: স্বাভাবিক ডিফেন্স।
0.5: বুমরাহর বল লাগে ক্রলির গ্লাভসে। সঙ্গে সঙ্গে ফিজিও ডাকলেন তিনি।
এই মুহূর্তেই গিল আর চুপ থাকতে পারেননি। হাঁটতে হাঁটতে গিয়ে ক্রলিকে প্রশ্ন করলেন, "ভাই ঠিক আছো তো?" তারপর হাত দিয়ে ব্যঙ্গাত্মক ভঙ্গিতে ইমপ্যাক্ট সাব-এর ‘X’ চিহ্ন দেখিয়ে প্যাভিলিয়নের দিকে ইঙ্গিত করলেন – যেন বলতে চাইছেন, “যদি এতটাই ব্যথা, তাহলে রিটায়ার হার্ট হয়ে যাও”
ক্রলি তেলেবেগুনে জ্বলে উঠলেন। হাত নেড়ে গিলকে পালটা জবাব দিলেন। তখনই বেন ডাকেট এসে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন।
0.6: বুমরাহর বল আবার কাঁপিয়ে দেয় ক্রলিকে, কিন্তু দিনটা শেষ হয় সেখানেই।
মাঠ ছাড়ার সময়েও বাদ যায়নি উত্তেজনা
খেলা শেষ হওয়ার পরও চলে চটে যাওয়া গালিগালাজ। মহম্মদ সিরাজ এবং কেএল রাহুল তো সরাসরি গিয়ে ইংল্যান্ড খেলোয়াড়দের মুখোমুখি হয়ে যাচ্ছিলেন। শেষমেশ আবারও বেন ডাকেট এসে সিরাজকে সরিয়ে নিয়ে যান।
গাভাসকার কেন ক্রলির পাশে?
সবাই যখন শুভমান গিলের কড়া মেজাজের প্রশংসা করছেন, তখন কিংবদন্তী সুনীল গাভাসকার উল্টো পথে হেঁটেছেন। তাঁর মতে, “ওপেনারদের নৈশ প্রহরী (nightwatchman) থাকে না, ওদেরই সামলাতে হয়। গ্লাভসে লাগলে ফিজিও ডাকাটা যুক্তিযুক্ত।”
এখন অবস্থা কী?
তৃতীয় দিনের খেলা শেষে, ইংল্যান্ড ভারতের চেয়ে মাত্র ২ রানে এগিয়ে। হাতে ১০ উইকেট। সামনে দুই দিনের হাইভোল্টেজ লড়াই বাকি। গিল বনাম ক্রলি পর্ব যেন এই টেস্ট ম্যাচের রঙ আরও গাঢ় করে দিল।
ভারতীয় ক্রিকেটারদের এই আগ্রাসী মেজাজ আবারও প্রমাণ করল – তারা এখন আর পিছিয়ে নেই। রোহিত নন, বিরাট কোহলির ছেড়ে যাওয়া চেয়ারে যেন বসলেন শুভমান গিল। ব্যাটে রানের ফুলঝুরি আর মাঠে বিপক্ষের প্রতি আগ্রাসী চোখরাঙানি। আগামী ২ দিন আরও চমক আসছে বলাই যায়।