
কেরিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি করলেন যশস্বী জয়সওয়াল। ১১১ বলে তাঁর মেডেন সেঞ্চুরি তুলে নেন। দীর্ঘদিন দলের বাইরে ছিলেন। শুভমান গিলের চোটের কারণে ফের ওপেন করার সুযোগ সামনে এসেছে। প্রথম দুই ম্যাচে রান না পেলেও এদিন অজয়সওয়ালোচিত ভঙ্গিতে সেঞ্চুরি কুড়িয়ে নেন। সাবধানে ইনিংস গড়েছেন এদিন।
এদিন যদিও প্লাটফর্ম তৈরি ছিল। পাটা উইকেটে ২৭১ রান বড় কোনও রান নয়। শুরুতে রোহিত ও যশস্বী দুজনেই দেখেশুনে উইকেট বাঁচিয়ে খেলেন। এরপর ধীরে ধীরে খোলস ছেড়ে বের হন রোহিত। প্রথমে তিনি হাফ সেঞ্চুরি করেন। তিনি শেষমেষ ৭৫ রানে আউট হলেও জয়সওয়াল এদিন কোনও ভুল করেননি। অপরদিকে বিরাটও স্বমহিমায় ব্যাট করেন। ঝড়ে গতিতে হাফ সেঞ্চুরি করেন ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট কিং কোহলি।
ভারতও জয় কুড়িয়ে নেয় ৯ উইকেটে। প্রথমে রোহিত, তারপর জয়সওয়াল আর শেষ পাতে কোহলি। সিরিজ জয়ের এর চেয়ে ভাল প্লট আর হতে পারে না। বিশাখাপত্তনমের ডঃ ওয়াইএস রাজশেখর রেড্ডি এ সি এ ভিডিসিএ স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে মুখোমুখি ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ এখন ১-১ সমতায়, ফলে তৃতীয় ম্যাচটি দু’দলের কাছে কার্যত ‘করো-মরো’ লড়াই। টস জিতে আগে ব্যাট করে দক্ষিণ আফ্রিকা ৪৭.৫ ওভারে ২৭০ রানে অলআউট। জয়ের জন্য ২৭১ রানের লক্ষ্য তাড়া করছে ভারত। ক্রীজে রয়েছেন রোহিত শর্মা ও যশস্বী জয়সওয়াল।
ইনিংসের প্রথম ওভারেই ধাক্কা খায় দক্ষিণ আফ্রিকা। মাত্র ১ রানে রায়ান রিকেল্টনকে আউট করেন অর্শদীপ সিং, ক্যাচ নেন অধিনায়ক কে এল রাহুল। রিকেল্টন শূন্য রানে ফিরে যান। এরপর দলের হাল ধরেন কুইন্টন ডি’কক ও টেম্বা বাভুমা। দু’জনে মিলে যোগ করেন ১১২ রান। বাভুমা ৪৮ রানে জাডেজার বলে আউট হন।
বাভুমার আউটের পরও ডি’কক আক্রমণাত্মক খেলতে থাকেন। ম্যাথিউ ব্রিটস্কের সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে ৫৪ রান যোগ করেন। কিন্তু একই ওভারে দ্রুত পরপর দু’উইকেট তুলে নেন প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা, ২৪ রানে ব্রিটস্কে এবং ১ রানে এডেন মার্করামকে ফেরান তিনি।
এরপরও কুইন্টন ডি’কক নিজের ছন্দ ধরে রেখে মাত্র ৮০ বলে ৮ চার ও ৬ ছক্কায় দুর্দান্ত সেঞ্চুরি করেন। ভারতের বিরুদ্ধে এ তাঁর সপ্তম শতরান। শেষপর্যন্ত ৮৯ বলে ১০৬ রানে তাঁকে আউট করে কৃষ্ণাই দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসের মেরুদণ্ড ভেঙে দেন।
ডি’কক আউট হওয়ার পর দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং পুরোপুরি ছন্নছাড়া হয়ে যায়। এক ওভারেই ডেওয়াল্ড ব্রিভিস (২৯) ও মার্কো ইয়ানসেনকে (১৭) প্যাভিলিয়নে পাঠান কুলদীপ যাদব। পরে করবিন বোশ (৯) ও লুঙ্গি এনগিডিকেও আউট করেন তিনি শেষ উইকেটটি নেন কৃষ্ণা।৩ রানে বার্টম্যানকে আউট করে শেষ করেন দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস। নন-স্ট্রাইকার প্রান্তে ২০ রানে অপরাজিত ছিলেন কেশব মহারাজ। ভারতের হয়ে কুলদীপ ও কৃষ্ণা দু’জনেই ৪টি করে উইকেট নেন। যদিও এদিনও বেধড়ক মার খেয়েছেন কৃষ্ণা ও হর্ষিত রানা। এই দুজন ক্রমশ দলের বোঝা হয়ে উঠছেন।
ভারতীয় দলে একটিমাত্র বদল ছিল ওয়াশিংটন সুন্দরকে বসিয়ে তাঁর জায়গায় দলে এসেছেন তিলক বর্মা। দক্ষিণ আফ্রিকায় দু’টি পরিবর্তন। চোটের জন্য বাদ পড়েছেন বার্গার ও ডি জর্জি; বদলে খেলছেন বার্টম্যান ও রিকেল্টন।
দুই দলের একাদশ
ভারত: রোহিত শর্মা, যশস্বী জয়সওয়াল, বিরাট কোহলি, ঋতুরাজ গায়কওয়াড়, তিলক বর্মা, কে এল রাহুল (অধিনায়ক/উইকেটকিপার), রভীন্দ্র জাডেজা, হর্ষিত রানা, কুলদীপ যাদব, অর্শদীপ সিং, প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা।
দক্ষিণ আফ্রিকা: কুইন্টন ডিকক (উইকেটকিপার), এডেন মার্করাম, টেম্বা বাভুমা (অধিনায়ক), ম্যাথিউ ব্রিটস্কে, রায়ান রিকেল্টন, ডেওয়াল্ড ব্রিভিস, মার্কো ইয়ানসেন, করবিন বোশ, কেশব মহারাজ, লুंगी এনগিডি, ওটনিল বার্টম্যান।
হেড টু হেড
মোট ওয়ানডে: ৯৬
ভারত জিতেছে: ৪১
দক্ষিণ আফ্রিকা জিতেছে: ৫২
পরিত্যক্ত: ৩