বিহারের সমস্তিপুরের বাড়ি থেকে প্রায় ১০০ কিলমিটার দূরে পাটনার অ্যাকাডেমিতে রোজ যাতায়াত করা অসম্ভব। সেই কারণেই ছেলেকে নিয়ে একদিন অন্তর একদিন অ্যাকাডেমিতে আসতেন বাবা। ছেলেকে ক্রিকেটার বানাতে বিক্রি করেছেন জমিও। বাবার এই আত্মত্যাগ বদলে দেয় বৈভবকে। নেটে একটানা ৫০০ থেকে ৬০০ বল খেলতে থাকে ছোট্ট ছেলেটা।
আর সোমবার মাত্র ১৪ বছর বয়সে আইপিএল-এর বিরাট মঞ্চে সেই গড়ে ফেলল ইতিহাস। ইশান্ত শর্মা, মহম্মদ সিরাজদের তো বটেই, ওয়াশিংটন সুন্দর, প্রসিদ্ধ কৃষ্ণাদেরও ছাড় দেয়নি বৈভব। ছক্কা আর চারের বন্যায় ভেসে গিয়েছে গুজরাত টাইটান্স। আইপিএলের নিলামে তাঁকে নিয়ে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলেছে রাজস্থান এবং দিল্লি ক্যাপিটালসের মধ্যে। যে কারণে ৩০ লক্ষ থেকে তার দাম পৌঁছে যায় ১ কোটি ১০ লক্ষ টাকায়। আইপিএল এমন অনেক তারার জন্ম দেয়, আবার অনেক তারা খসেও পড়ে। তবে বৈভব যেন এদের সবার থেকে আলাদা। এতবড় কীর্তির পরেও তাঁর কথায় কোনও বাড়তি উচ্ছ্বাস নেই।
চার বছর বয়সে বাবার হাত ধরে ক্রিকেট শেখা শুরু তার। সাড়ে সাত বছর বয়সে বৈভবের বাবা সঞ্জীব তাকে নিয়ে যান পটনার এক ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে। সেখানেই কোচ সৌরভ কুমার প্রথম দেখেন বৈভবকে। অবাক হয়ে গিয়েছিলেন এত কম বয়সে তার ব্যাটিং দেখে। নেটে নামার জন্য ছটফট করত বৈভব। আর সেখানে তার বয়সি বোলারেরা প্রায় পাত্তাই পেত না। বড়দের সঙ্গে খেলানো হত বৈভবকে।
রাহুল দ্রাবিড়ের চোখ হীরে চিনতে ভুল করেনি। তাই তো ৩৫ বলে সেঞ্চুরি করা বৈভবের ইনিংস দেখে ভাঙা পা নিয়েও হুইলচেয়ার ছেড়ে উত্তেজনায় উঠে দাঁড়ান ভারতের প্রাক্তন কোচ।