মেয়াদ শেষ হওয়ার দু'বছর আগেই বিরাট চাপে এআইএফএফ (AIFF) সভাপতি কল্যাণ চৌবে (Kalyan Chaubey)। তাঁকে ফেডারেশন সভাপতির পদ থেকে সরানোর জন্য বেশ কয়েকটি রাজ্য সংস্থা উঠে পড়ে লেগেছে। পরিস্থিতি এতটাই খারাপের দিকে যাচ্ছে, এক তৃতীয়াংশ রাজ্য ফুটবল সংস্থা কল্যাণের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি চিঠিও দিতে পারে ফেডারেশনে।
তার থেকেও উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হল, শোনা যাচ্ছে, রাজ্য সংস্থাগুলির পিছনে রয়েছেন এক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। যিনি আগে ভারতীয় ফুটবল সংস্থায় জড়িত ছিলেন। যাঁর সঙ্গে এই মুহূর্তে বিজেপির খুবই ভাল সম্পর্ক। পিছোতে পিছোতে এই মুহূর্তে ভারতীয় ফুটবল ফিফার ক্রমতালিকায় এসেছে ১২৬তম স্থানে। তার উপর প্রফুল্ল প্যাটেলকে সরিয়ে যেদিন থেকে কল্যাণ ভারতীয় ফুটবলের মসনদে বসেছেন, সেদিন থেকেই একের পর এক বিতর্ক মাথা চাড়া দিয়েছে ভারতীয় ফুটবলকে কেন্দ্র করে।
কী কারণে অনাস্থা?
কখনও এশিয়ান কাপ আয়োজনের জন্য বিডে অংশগ্রহণ না করা। কখনও সন্তোষ ট্রফি বিদেশে নিয়ে যাওয়া। কখনও ফেডারেশনের টাকায় বিদেশ ভ্রমন, প্রচুর বিমান বিলের পাশাপাশি জুতো কিনে তার বিল ফেডারেশনে জম দেওয়া। এর পাশাপাশি কোন বিশ্বাসভঙ্গের জন্য সাজি প্রভাকরণকে সচিব পদ থেকে সরানো হয়েছে, তা এখনও সবার অজানা। কিছুদিন আগেও ভারতীয় ফুটবল দলের প্রাক্তন কোচ ইগর স্টিমাচ একাধিক অভিযোগ এনেছিলেন ফেডারেশন সভাপতির বিরুদ্ধে। সব মিলিয়ে প্রায় প্রতিদিনই তাঁকে ঘিরে নানা বিতর্ক। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে জাতীয় দলের ব্যর্থতা।
সুপ্রিম কোর্টে মামলা চলছে
ফলে বেশ কিছু রাজ্য সংস্থা মনে করছে, সভাপতিকে সরালেই হয়তো বদলাবে ভারতীয় ফুটবল। কিন্তু বদলানো বললেই তো বদলানো যায় না। তার জন্য ফেডারেশনের সংবিধান খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এদিকে, আবার নতুন সংবিধান তৈরির জন্য সুপ্রিম কোর্টে কেস চলছে। যর পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য্য হয়েছে ১১ ফেব্রুয়ারি। তারমধ্যেই প্রভাবশালী রজনৈতিক ব্যক্তিত্বর নেতৃত্বে বেশ কিছু রাজ্য সংস্থা একত্রিত হচ্ছে, কল্যাণের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনার জন্য।
মোট ৩৬টি রাজ্য ফুটবল সংস্থা। নিয়ম অনুযায়ী অন্তত ১২টি রাজ্য সংস্থাকে খোদ ফেডারেশন সভাপতিকে চিঠি দিয়ে জানাতে হবে, জরুরি ভিত্তিতে সাধারণ সভা ডাকার জন্য। চিঠি পাওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে কল্যাণ যদি কোনও সভা না ডাকেন, তাহলে এই ১২টি রাজ্য সংস্থা নিজেরাই সভা ডেকে তার বিরুদ্ধে ভোটাভুটি করতে পারে। আর ফেডারেশন সভাপতি নিজেই সভা ডাকলে, সেখানেও তাঁর পদ নিয়ে ভোটাভুটি হতে পারে।
উল্লেখযোগ্য ব্যাপর হল, কিছু রাজ্য সংস্থা তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার জন্য জোট বাঁধছে, তা জানতে পেরেছেন খোদ কল্যাণও। আর তাই চেয়ার রক্ষার জন্য তিনিও পাল্টা রাজ্য সংস্থাগুলির সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন।