মাত্র ৪৮ ঘণ্টা আগেই হাইকোর্টের রায়ে গতবারের কলকাতা লিগ ঘরে উঠেছিল। এবার দুদিনের মধ্যে ফের চলতি কলকাতা লিগও জয় করল তারা। শনিবার বিকেলে আইএফএ আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করেছিল, গত বছরের কলকাতা লিগ চ্যাম্পিয়ন ইস্টবেঙ্গল। আর সোমবার দুপুরেই ক্লাব মাঠে সেই ট্রফি হাতে পেলেন সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়রা। এর মধ্যেই আরও এক সাফল্য, ঘরের মাঠেই ইউনাইটেড স্পোর্টসকে ২-১ হারিয়ে এবার জিতল চলতি বছরের কলকাতা লিগও। ফলে আনন্দ এখন দ্বিগুণ।
ইউনাইটেড ছিল নিজেদের গ্রুপের শীর্ষে। সুপার সিক্সের শেষ ম্যাচেও চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগ ছিল তাদের সামনে। লাল-হলুদদের হারাতে না পারলেও ড্র করলেই চলত। কিন্তু ইউনাইটেড খেলতে নেমেছিল জয় নিয়েই। অন্যদিকে, নিজেদের ঘরের মাঠে গ্যালারি ভর্তি সমর্থকদের সামনে মরিয়া ছিল ইস্টবেঙ্গলও।
ম্যাচের শুরু থেকেই দেখা গেল একতরফা আক্রমণ। বিষ্ণু, সায়ন, ডেভিডরা একের পর এক ঝাঁপিয়ে পড়ছিলেন প্রতিপক্ষ বক্সে। গোল পাওয়াটা যেন ছিল শুধু সময়ের অপেক্ষা। যদিও একাধিক সুযোগ হাতছাড়া করলেন লাল-হলুদের ফরোয়ার্ডরা। শেষমেশ ৩৭ মিনিটে প্রতীক্ষার অবসান। গোল করে ইস্টবেঙ্গলকে এগিয়ে দেন ডেভিড। প্রথমার্ধে বল দখল, শট অন গোল, সব ক্ষেত্রেই এগিয়ে ছিল বিনো জর্জের ছেলেরা।
দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য কিছুটা রক্ষণাত্মক হয় ইস্টবেঙ্গল। সেই সুযোগে ম্যাচে ফেরার মরিয়া চেষ্টা চালায় ইউনাইটেড। বেশ কয়েকবার লাল-হলুদের বক্সে ঢুকেও পড়ে তারা। উত্তেজনার পারদ চড়তে থাকে, যার মাঝে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন ইউনাইটেডের কোচ লালকমল ভৌমিক।ম্যাচের একেবারে শেষ দিকে হেড থেকে সমতা ফেরায় ইউনাইটেড স্পোর্টস। তখন মনে হচ্ছিল, হয়তো ড্রতেই শেষ হবে খেলা। যদিও তখনও ট্রফি যেত ইস্টবেঙ্গলের ঘরেই। কিন্তু সেখানেই চমক।
পরের মিনিটেই নাটকীয় ভাবে গোল করে দলকে ফের এগিয়ে দেন শ্যামল বেসরা। স্কোরলাইন হয় ২-১। ম্যাচের বাকি সময়টুকু ধরে রেখেই জয়ের হাসি নিয়েই মাঠ ছাড়ল ইস্টবেঙ্গল। শেষ বাঁশির সঙ্গেই লেসলি ক্লডিয়াস সরণির ক্লাব মাঠে নেমে পড়ে লাল-হলুদ জনতা। মশালের আলো, উল্লাস আর গান-ধুনুচির ধোঁয়ায় পুজোর আগেই উৎসবের ছবি ফুটে ওঠে ইস্টবেঙ্গল চত্বরে। দুই দিনে দুই ট্রফি। পুরনো ঐতিহ্যকে নতুন করে উজ্জ্বল করল বিনো জর্জের দল। এই ঘটনা কলকাতা লিগের ইতিহাসে আগে কখনও ঘটেনি।