
ডেম্পোর বিরুদ্ধে সুপার কাপের প্রথম ম্যাচে ড্র করার পর, চাপে পড়ে গিয়েছে ইস্টবেঙ্গল। মঙ্গলবার তাঁদের সামনে চেন্নাইয়েন এফসি। এই ম্যাচ জিততে না পারলে সুপার কাপ থেকে ছিটকে যেতে হবে অস্কার ব্রুজোর দলকে। আশা জাগিয়ে শুরু করেও অস্কার ব্রুজো এবার সদস্য সমর্থকদের চাপের মুখে।
আর সে কারণেই দলের ফুটবলারদের ভুল শুধরে দিতে মরিয়া তিনি। বলেন, 'আমরা এই মুহূর্তে এমন জায়গায় রয়েছি যেখান থেকে কোনো ভুল করলে চলবে না। গত ম্যাচে আশানুরূপ ফল হয়নি আমাদের। এখন থেকে ঘুরে দাঁড়াতে হলে আমাদের ভাল ফুটবল খেলতে হবে। আগামীকাল আর কোনো ভুলের সুযোগ নেই। আমরা এখন খাদের সীমানায় দাঁড়িয়ে আছি। আত্মতুষ্টির জায়গা নেই, ভুলেরও জায়গা নেই।' ডার্বির আগের ম্যাচ জিতে মোহনবাগান সুপার জায়েন্টের বিরুদ্ধে আত্মবিশ্বাস নিয়ে নামতে মরিয়া লাল-হলুদ কোচ। বলেন, 'আমি সব কিছু একসঙ্গে গুছিয়ে একটা সুন্দর খেলা খেলতে চাই এবং ডার্বির জন্য সর্বোচ্চ আত্মবিশ্বাস নিয়ে নামতে চাই। আমরা এখনো টুর্নামেন্টে টিকে রয়েছি, ছিটকে যাইনি এবং আমরা লড়াই চালিয়ে যাবো, পরের রাউন্ডে ওঠার জন্য চেষ্টা করব।'
সন্দীপ নন্দী পদত্যাগ বিতর্ক এবং ডেম্পোর বিরুদ্ধে পয়েন্ট নষ্ট করার পরে লাল হলুদ সাজঘরের পরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। এই ধরনের টুর্নামেন্টে যখন চারটি দল একটি গ্রুপে থাকে, প্রতিটি ম্যাচই খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়। এখানে জেতা আর গোল করাই আসল, কারণ সমান পয়েন্ট হলে প্রথমে দেখা হয় হেড-টু-হেড, তারপর গোল ডিফারেন্স, আর তাও সমান হলে কে বেশি গোল করেছে সেটা দেখা হয়। তাই এই ড্র ইস্টবেঙ্গলকে কিছুটা চাপে ফেলেছে।
দলকে চাপমুক্ত করতে অস্কার ব্রুজো উদাহরণ দিয়েছেন ২০১০ সালের বিশ্বকাপের, যেখানে স্পেন প্রথম ম্যাচে সুইজারল্যান্ডের কাছে হেরে গিয়েও পরে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। একইভাবে রিয়াল মাদ্রিদের কথাও বলেছেন অস্কার। মরসুমের শুরুতে একটু খারাপ ফর্মে থাকলেও পরে এল ক্লাসিকো জিতে রিয়াল মাদ্রিদ আবার ফর্মে ফিরেছে।
ইস্টবেঙ্গল কোচ বিশ্বাস করেন, চেন্নাইয়ন ম্যাচ থেকেই ইস্টবেঙ্গলও ঘুরে দাঁড়াবে। দল নির্বাচন নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। বিশেষ করে মিগুয়েলকে প্রথম থেকে ব্যবহার না করা নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে। ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকারকে দ্বিতীয়ার্ধে নামানোর কারণও ব্যাখ্যা করেছেন অস্কার ব্রুজো বলছেন, 'খেলা ৯০ মিনিটের, আর আইএফএ ম্যাচ ছিল ১২০ মিনিটের। তাই খেলোয়াড়দের শক্তি ভাগ করে ব্যবহার করছি যাতে ম্যাচের শেষ পর্যন্ত ভালো খেলা যায়।'
প্রতিপক্ষ চেন্নাইয়িন এফসি সম্পর্কে সতর্ক ইস্টবেঙ্গল কোচ। বলছন, 'ওরা ৫-৪-১ ফরমেশনে খেলে, খুব সংগঠিত দল, পাল্টা আক্রমণে বিপজ্জনক। তাই আমাদের সুযোগগুলো কাজে লাগাতে হবে। গত ম্যাচে ১৯টা সুযোগ তৈরি করেও আমরা মাত্র একবার গোল পেয়েছি, কিন্তু প্রতিপক্ষের দুই সুযোগেই দুই গোল এসেছে। এটা আমাদের ঠিক করতে হবে।' একই সঙ্গে সংযোজন, 'চেন্নাইয়ন যথেষ্ট শক্তিশালী দল। তাদের দলে বেশ কিছু অভিজ্ঞ ভারতীয় ফুটবলাররা রয়েছেন। গত ম্যাচে মোহনবাগানের বিরুদ্ধেও তারা বেশ ভাল ফুটবল খেলেছে। তবে আমাদের নিজেদের খেলায় আরও উন্নতি করতে হবে। আরও সুযোগ তৈরি করে সেখান থেকে গোল করতে হবে।'
পরিস্থিতি কঠিন। অস্কার ব্রুজো বুঝতে পারছেন সামনের দুটো ম্যাচে কোনও অঘটন মানে অনেক অস্বস্তিকর প্রশ্ন উঠে আসবে। আবার সাফল্য সমালোচনার ঝড় থামিয়ে আশার আলো জ্বালাবে। পরিস্থিতি বুঝতে পেরেই অস্কার বলছেন, 'আমরা আগেও চ্যালেঞ্জ লিগে প্রথম ম্যাচ ড্র করেছিলাম, কিন্তু পরে ঘুরে দাঁড়িয়ে পরের রাউন্ডে গিয়েছিলাম। অনেক বড় দলের উদাহরণ আছে— স্পেন, রিয়াল মাদ্রিদ— যারা প্রথমে হোঁচট খেয়েও শেষে জিতেছে। তাই আমরাও আত্মবিশ্বাস নিয়ে নামব। ভুলের আর জায়গা নেই, লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।'