ফুটবল মাঠে রাজনৈতিক টিফো বা ব্যানার নতুন নয়। গোটা দেশের যে কোনও ব্যাপারে গর্জে ওঠা অন্তত ইস্টবেঙ্গলের (East Bengal) কাছে নতুন নয়। আরজি কর (RG Kar Issue) ইস্যুতে যখন গোটা দেশ উত্তাল হয়েছে, তখন লাল-হলুদ সমর্থকরা গর্জে উঠেছেন। ব্যানার দেখা গিয়েছে মাঠে। এর আগে এনআরসি-র (NRC) বিরোধ করেও ইস্টবেঙ্গল আল্ট্রাস ব্যানার বানিয়েছিল। যা এখনও বিভিন্ন সময় আলোচিত হয়। আর সেই দৃশ্যই দেখা গেল বুধবার ডুরান্ড কাপে (Durand Cup)।
বুধবার নামধারী এফসি-র বিরুদ্ধে ম্যাচে বাংলা ভাষাভাষী মানুষদের ভিন রাজ্যে হেনস্থার প্রতিবাদে গর্জে উঠল লাল-হলুদ গ্যালারি। যা ইতিমধ্যেই রাজ্য রাজনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। সম্প্রতি হরিয়ানা, তামিলনাড়ু, মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ, ওড়িশা ও দিল্লির কিছু অংশে বাংলা ভাষাভাষী মানুষদের ‘বাংলাদেশি’ বলে হেনস্তা করা হয়েছে। এ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়ায়।
এর মধ্যে বিজেপি নেতা অমিত মালব্যের একটি মন্তব্য ঘি ঢেলে দেয় এই আগুনে। তিনি বলেন, ‘বাংলা নামে কোনো ভাষাই নেই।’ এই মন্তব্যে রোষের সঞ্চার হয়। আর তার প্রতিফলনই দেখা গেল এদিনের ম্যাচে। সেই ব্যানারে লেখা হয়েছে, 'ভারত স্বাধীন করতে সেদিন পরেছিলাম ফাঁসি! মায়ের ভাষা বলছি বলে, আজকে 'বাংলাদেশী'?'
এর আগে এনআরসি বিরোধী আন্দোলোনে গোটা দেশে যখন আগুন জ্বলছে, সেই সময়ই ডার্বি ম্যাচে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা এর পরিবাদ করেছিলেন। সেই সময় ব্যানারে লেখা হয়েছিল, 'রক্ত দিয়ে কেনা মাটি, কাগজ দিয়ে নয়।' আবারও বাংলা ভাষার অপমানের বিরুদ্ধে গর্জে উঠল লাল-হলুদ গ্যালারি। তবে শুধু দেশে নয়, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু অত্যাচারের বিরুদ্ধেও ব্যানার বানানো হয়েছিল, ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের পক্ষ থেকে। সেই সময় লেখা হয়েছিল, 'সংখ্যালঘুর রক্ত, মুছে ফেললেই চলবে? দেশান্তরীর স্মৃতিগুলো সব, ঢাকতে তুমি কি পারবে?'
এরপর ঠিক এক বছর আগে আরজি কর হাসপাতালে ডাক্তারকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পরে রাতদখল কর্মসূচি, জায়গায় জায়গায় বিক্ষোভ হয়েছিল। এর পর ইস্টবেঙ্গল গ্যালারি থেকে আওয়াজ ওঠে, 'বাংলা মায়ের এই মাটিতে, ধর্ষকদের ঠাঁই নাই! মশাল হাতে বলছি মোরা, সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।' পাশাপাশি আরও একটা ব্যানার দেখা যায়, 'তিলোত্তমার রক্ত চোখ, আঁধার রাতের মশাল হোক।' এভাবেই বারে বারে সমাজের নানা সমস্যা নিয়ে নিজেদের দাবি প্রকাশ্যে আনছেন ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা।