বেঙ্গালুরু এফসি-র বিরুদ্ধে ড্র করে আইএসএল-এর স্বপ্ন শেষ হয়েছে ইস্টবেঙ্গলের। টুর্নামেন্ট শুরুর পর থেকে বারবার রেফারির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা গিয়েছে লাল-হলুদ কর্তাদের। কিছু ক্ষেত্রে অবশ্যই রেফারির ভুল সিদ্ধান্তে ভুগতে হয়েছে লাল-হলুদকে। তবে রেফারির কারণেই প্রথম ছয়ে জায়গা করতে পারেনি ইস্টবেঙ্গল এমনটা কি সঠিক?
বেঙ্গালুরু ম্যাচের পরেই, রেফারির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে, রাস্তায় নামার হুশিয়ারি দিয়েছিলেন ক্লাবের শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার। এফএসডি-এর বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানাতে কলকাতার রাস্তায় বিক্ষোভ! শুনলে মনে হবে, রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি। তবুও শীর্ষকর্তা যখন বলেছেন তাঁর পারিষদরা কি অমান্য করতে পারে? সেই কারণেই সোমবার নাগেরবাজারে বিক্ষোভে সামিল হলেন ইস্টবেঙ্গলের বেশ কয়েকজন সমর্থক। পোড়ানো হল রেফারি হরিশ কুন্ডুর কুশপুতুলও।
রেফারির কুশপুতুল পুড়ছে কলকাতার রাস্তায়, এমন দৃশ্য শেষ কবে দেখা গিয়েছে তা মনে করতে পারছেন না বর্ষীয়ান ক্রীড়াপ্রেমীরাও। কটাক্ষ উড়ে আসছে মোহনবাগান শিবির থেকে। শীর্ষকর্তার সঙ্গে একমত নন, দলের কোচ! তিনি দোষ চাপাচ্ছেন ফুটবলারদের দিকেই। বেঙ্গালুরু ম্যাচে দিমিত্রিয়াস ডিমানটাকোসের আচরণ নিয়ে ক্ষুব্ধ অস্কার। তা হলে, রেফারির দোষ কোথায়? তুলনা টেনে ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের দাবি, 'ডার্বি ম্যাচে দিমিত্রি পেত্রাতোস ইস্টবেঙ্গলের সায়ন বন্দোপাধ্যায়কে একই ভাবে ঠুসো মেরেছিলেন। তাঁকে লাল কার্ড দেখানো না হলেও, ডিমানটাকোসকে কেন লাল কার্ড দেখানো হল?
তা হলে কী ফুটবলারদের ঠুসো মারাকে সমর্থন করছেন লাল-হলুদ কর্তারা? বলতে চাইছেন, জিনেদিন জিদানকেও ২০০৬ বিশ্বকাপ ফাইনালে লাল কার্ড দেখানো ভুল ছিল? নিজেদের দিনের পর দিনের ব্যর্থতা ঢাকতে ব্যবহার করছেন রেফারিকে। এর আগে শ্রী সিমেন্টের সময় ইনভেস্টরের ব্যর্থতা সামনে আনতে পেরেছিলেন তারা। কারণ, দল গঠনে ক্লাব কর্তাদের পাত্তাই দিত না তারা। আর এখন গুরুত্ব পান ইস্টবেঙ্গল কর্তারা। তবুও ভাল দল হচ্ছে না। খাতায় কলমে উন্নতি হলেও, মাঠে নামতেই ফুটবলারদের চোট, মাথা গরমের সমস্যা বাড়ছে।
সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো তরুণদের উপরেও পুরোপুরি ভরসা করা যাচ্ছে না। কারণ তিনি মাঠে নামালেই মনে হয় কার্ড দেখতে নেমেছেন।আইএসএল হোক বা ডেভলপমেন্ট লিগ সব জায়গাতেই বল না পেলেই পা চালিয়ে দেওয়া, বা যে কোনও ভাবেই ফাউল করার মানসিকতা তাঁর কবে যাবে? এ নিয়ে কিছু ভেবেছেন কর্তারা? রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ফুটবল দলের পার্থক্য আছে। কারণ খেলার জবাব ৯০ মিনিটে মাঠেই দিতে হয়। রাস্তায় কুশপুতুল পোড়ালে ম্যাচের ফল বদল হয় না।