১৯৭৫ সালে ইস্টবেঙ্গল ৫ গোলে হারিয়েছিল মোহনবাগানকে। গর্বের সেই ম্যাচ নিয়ে আজও মাতামাতি হয় ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের মধ্যে। ৫০ বছর হয়ে যাওয়ায় এই ঘটনা নিয়ে সিনেমা হতে পারে। ইস্টবেঙ্গল দিবসের দিন এমন ইঙ্গিত দিলেন দেবব্রত সরকার। লাল-হলুদের গর্বের সেই ইতিহাসই ছিল, এবারের ইস্টবেঙ্গল দিবসের থিম। আর সেই অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর সিনেমার ব্যাপারে মুখ খুললেন দেবব্রত।
কী বললেন দেবব্রত সরকার?
ইস্টবেঙ্গলের শীর্ষকর্তা দেবব্রত সিনেমা তৈরির ব্যাপারে বলেন, 'সমর্থকদের একটা দাবি ছিল, আইএফএ শিল্ডে মোহনবাগানকে ৫ গোল দেওয়ার ৫০ বছর হচ্ছে। সেই কারণে এই অনুষ্ঠানে সেটা ফিরিয়ে আনা হল। কেউ কেউ তো আবার এ নিয়ে সিনেমা করতে চাইছে। আমাদের কাছে বিভিন্ন অফার আসছে। আমরা দেখব, যার প্রস্তাব ভাল লাগবে তাঁর সঙ্গে কথা বলব।' পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, 'মানুষের চাহিদা হচ্ছে শেষ কথা। সমর্থকরা কী বলছে, সদস্যরা কী চাইছে সেটাই তো শেষ কথা, তো মানুষ চাইছে এটা নিয়ে চর্চা করতে তাই আমরা করব। দেখা যাক কী হয়।'
কী হয়েছিল সেদিন?
১৯৭৫ সালের ৩০শে সেপ্টেম্বর মোহনবাগানকে ৫-০ গোলে হারিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। এটি ছিল আইএফএ শিল্ডের ফাইনাল ম্যাচ এবং ইস্টবেঙ্গলের স্মরণীয় জয়গুলির মধ্যে অন্যতম। সেই ম্যাচে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে গোল করেছিলেন শ্যাম থাপা, রবার্ট এবং দিলীপ পালিত। এই ম্যাচের কথা আজও মোহনবাগান সমর্থকেরা ভুলতে পারেন না, এবং ইস্টবেঙ্গল সমর্থকেরা এটিকে আনন্দের সাথে স্মরণ করেন। এই হারের দুঃখে আত্মহ্যতার পথ বেছে নেন মোহনবাগান সমর্থক উমাকান্ত পালোধি।
তাঁর মৃত্যুসংবাদ ছড়িয়ে পড়ে সারা শহরে। এক ফুটবলভক্তের মৃত্যু কাঁদিয়ে তোলে গোটা ক্রীড়ামহলকে। একটি সুইসাইড নোটে তিনি লিখে যান, পরের জন্মে মোহনবাগানের ফুটবলার হয়ে এই হারের বদলা নেবেন। মোহনবাগান ক্লাব তাঁকে মনে রেখেছে। প্রতি বছর মোহনবাগান দিবসের দিন, শ্রেষ্ঠ সমর্থকের পুরস্কার দেওয়া হয় তাঁর নামে।
সে দিনের তারকারা কী বলছেন?
৫ গোলে জেতার পরেও সেলিব্রেশন করেননি ইস্টবেঙ্গল ফুটবলাররা। ইস্টবেঙ্গল দিবসের দিন মঞ্চে দাঁড়িয়ে এ কথা এক বাক্যে স্বীকার করে নিলেন শ্যাম থাপারা। '৫ গোল নিয়ে কোন বাড়তি আবেগ নেই। কে কে গোল দিয়েছিল, তাই ভুলে গিয়েছি! আমি নিজে তো বাংলার হয়ে পঞ্জাবের কাছে ৬ গোল খেয়েছি!' এমনটাই জানালেন তরুন বসু। '৫ গোল হয়। খেলায় ৫ গোল হতে পারে। তার জন্য উৎসব করাটা শোভন নয়। সমর্থকেরা করে ঠিক আছে। ফুটবলারদের কাছে এটা আরেকটা ম্যাচই শুধু। আমরাও তো কত ম্যাচ হেরেছি!' জানান সমরেশ চৌধুরী।