গ্রেগ চ্যাপেলকে মনে আছে? একদা ভারতীয় দলের কোচের সঙ্গে তত্কালীন ক্যাপ্টেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের অশান্তি ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে অন্যতম খারাপ সময়। রবিবারের মোহনবাগান ইস্টবেঙ্গ ডার্বিতেও সেই গ্রেগ চ্যাপেলের স্মৃতিই ফিরল। গ্রেগ চ্যাপেল যে অসভ্যতা ২০০৫ সালে করেছিলেন, একই রকম অঙ্গভঙ্গি করলেন জেসন কামিন্স। দিনের শেষে দুজনেই অস্ট্রেলিয়ান।
কী হয়েছিল ২০০৫ সালে?
২০০৫ সালে কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে এক বিতর্কিত ঘটনার সাক্ষী হয়েছিল গোটা দেশ। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে চতুর্থ একদিনের ম্যাচের আগে টিম ইন্ডিয়ার তৎকালীন অস্ট্রেলিয়ান কোচ গ্রেগ চ্যাপেলকে নিয়ে দর্শকদের ক্ষোভ চরমে ওঠে। কারণ সেই ম্যাচে তিনি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে দল থেকে বাদ দিয়ে দিয়েছিলেন। সৌরভকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তে বাংলার সমর্থকদের বিরাগভাজন হন চ্যাপেল। ম্যাচের আগের দিন ভারতীয় দলের বাস যখন ইডেনের বাইরে পৌঁছয়, তখন হাজার হাজার সমর্থক সৌরভের নামে স্লোগান দিতে শুরু করেন।
সেই সময় টেলিভিশন ক্যামেরায় ধরা পড়ে, হঠাৎ চ্যাপেল বাসের জানলা দিয়ে হাত বার করে ভিড়ের দিকে মধ্যমা প্রদর্শন করছেন। একে বলা হয় ‘মিডল ফিঙ্গার’ জেসচার, যা অত্যন্ত অশালীন ও অপমানজনক বলে ধরা হয়। ক্রিকেটপ্রেমীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এবং চ্যাপেলকে আরও বেশি করে ‘অ্যান্টি-সৌরভ’ কোচ হিসেবে দেখতে শুরু করেন। এর ফলে ভারতীয় ক্রিকেটে কোচ-খেলোয়াড় দ্বন্দ্ব নতুন মাত্রা পায়। বিশেষত বাংলার মানুষের কাছে এই ঘটনাই চ্যাপেলকে আজও এক বিতর্কিত নাম করে রেখেছে।
ঠিক ২০ বছর পর কলকাতায় মিডল ফিঙ্গার জেসচার করলেন আরও এক অস্ট্রেলিয়ান
রবিবার ডুরান্ড কাপে মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল ডার্বি ছিল। ২-১ গোলে জিতেছে ইস্টবেঙ্গল। ইস্টবেঙ্গলের কাছে ২-১ গোলে হারের পর মোহনবাগানের অস্ট্রেলিয়ান তারকা জেসন কামিন্স সমর্থকদের উদ্দেশে অশালীন ইশারা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটে ডুরান্ড কাপ ২০২৫-এর কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচ শেষে, যখন কামিন্স তখন টিম বাসে উঠছিলেন। স্টেডিয়ামের বাইরে তখন ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা জোর গলায় 'জয় ইস্টবেঙ্গল' স্লোগান তুলছিলেন। ঠিক সেই সময় একাধিক ভিডিওতে দেখা যায়, কামিন্স ভিড়ের দিকে তাকিয়ে মিডল ফিঙ্গার দেখাচ্ছেন। মুহূর্তের মধ্যেই সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে এবং সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।
কর্তৃপক্ষের কাছে শাস্তিমূলক পদক্ষেপের দাবি
ডার্বি ম্যাচ বরাবরই আবেগে গরম থাকে। মাঠে লড়াইয়ের উত্তাপ গ্যালারিতেও ছড়িয়ে পড়ে। তবে ম্যাচ শেষে খেলোয়াড়ের এমন আচরণকে অশোভন ও অগ্রহণযোগ্য বলে মনে করছেন অনেকেই। সমর্থকদের একাংশ ইতিমধ্যেই এআইএফএফ ও বাগান কর্তৃপক্ষের কাছে শাস্তিমূলক পদক্ষেপের দাবি তুলেছেন।