
আইএসএল দেশের এক নম্বর লিগ। তবে সেই লিগ আয়োজন নিয়েই এখন ধোঁয়াশা। আইএসএলের জন্য টেন্ডারে কোনও সংস্থাই আগ্রহ না দেখানোয়, বিড ইভ্যালুয়েশন কমিটি এখন তাদের পর্যবেক্ষণ জানাচ্ছে সুপ্রিম কোর্টকে। সর্বোচ্চ আদালত আইএসএল সংগঠনের উপর যা নির্দেশ দেবে সেভাবেই চলতে হবে ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনকে।
দেশের সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি নাগেশ্বর রাওয়ের নেতৃত্বে বিড ইভ্যালুয়েশন কমিটি গঠিত হয়েছে। এরপরেই 'বিগ ফোর'-এর অন্তর্গত কেপিএমজিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়, অইএসএলের টেন্ডার পরিচালনা করার। কিন্তু আইএসএলের টেন্ডার পাওয়ার জন্য কোনও সংস্থাই শেষ পর্যন্ত এগিয়ে আসেনি।
তবে টেন্ডারের থাকা বেশ কিছু শর্ত নিয়ে একমাত্র এফএসডিএলের পক্ষ থেকেই প্রায় ২০০টির মতো প্রশ্ন তোলা হয়েছিল। যার অর্থ, তার আইএসএল করার জন্য রীতিমতো আগ্রহী ছিল। তবে এফএসটিএলের পক্ষ থেকে বেশ কিছু প্রশ্নের জায়গায়, যেমন দায়িত্ব কার থাকবে, টাকার পরিমাণ কমবে কি না। অবনমন আপাতত বন্ধ রাখা সম্ভব কি না, এইসব প্রশ্নে সরাসরি জানিয়ে দেওয়া হয়, যা টেন্ডারের শর্তে রয়েছে, সেগুলিই থাকবে। ফলে আইএসএল নিয়ে আগ্রহী থাকলেও এফএসডিএলের পক্ষ থেকে অন্যরকম শর্তে বিড করা সম্ভব হয়নি। আর এফএসডিএল বিড না করায়, ভারতীয় ফুটবলে এত পরিমাণ টাকা বিনিয়োগ করার জন্য কেউই আর আগ্রহ দেখায়নি। তাহলে এখন কী হবে ভারতীয় ফুটবলের? ভবিষ্যৎ কী?
এই মুহূর্তে বেশ কয়েকটি পথ খোলা রয়েছে। যে শর্তে কোনও সংস্থাই আইএসএলে বিনিয়োগ করতে রাজি হয়নি, সেই শর্তগুলি থেকে সরে এসে অনেক নমনীয় শর্ত দিয়ে ফের বিড আহ্বান করা যেতে পারে। ফেডারেশন মনে করতে পারে, নিজেরাই দেশের এক নম্বর লিগ চালাবে। অথবা মনে করতে পারে, এই বছর ইন্ডিয়ান সুপার লিগ হবে না। তবে এফএসডিএলে তাদের শর্তমতো ৫০ কোটি টাকা ফেডারেশনকে দিচ্ছে। ফলে ফেডারেশনের টাকার অভাব নেই। অভাব রয়েছে, আইএসএলের আয়োজনের। কারণ, আইএসএল আয়োজন করতে গেলে এক মরসুমেই লাগে ১৫০-২০০ কোটি টাকা।
সর্বেচ্চ আদালতের নির্দেশে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি নাগেশ্বর রাওয়ের নেতৃত্বে বিড ইভ্যালুয়েশেন কমিটি গঠিত হয়েছিল, এখন তাই আইএসএলের বিড নিয়ে যা হয়েছে, সেই রিপোর্ট সুপ্রিম কোর্টের কাছে জানাবেন নাগেশ্বর রাও। আইএসএলের টেন্ডারে কোনও সংস্থাই আগ্রহ না দেখানোয় এদিন রবিবার নিজেদের মধ্যে আলোচনায় বসে ছিলেন বিড ইভ্যালুয়েসন কমিটির সদসার। এরপর কী কী পথ খোলা রয়েছে, তা ঠিক করার জন্য সদস্যরা আলোচনা করেন। এরপরেই ঠিক হয়েছে, আইএসএলের বিড নিয়ে কমিটির পর্যবেক্ষণ এবং তাঁদের মতামত সোমবার সুপ্রিম কোর্টকে জানানো হবে। এরপর সুপ্রিম কোর্ট সব কিছু পর্যবেক্ষণ করে যে ভাবে ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনকে চলার নির্দেশ দেবে সেভাবেই চলবে ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন।
তবে পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে যাচ্ছে, তাতে নভেম্বরের মধ্যে সব কিছু সমস্যা না মিটলে এই মরসুমের আইএসএল করা নিয়ে সমস্যা রয়েছে। এদিকে, আইএসএল করার জন্য এফএসডিএল তাদের সবরকম প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। কিন্তু এফএসডিএল দেশের এক নম্বর লিগ আয়োজন করবে তাদের শর্তে। যদি নতুন করে ফের টেন্ডার ডাকা হয়, সেখানেও এফএসডিএল যদি বোঝে তাদের স্বাধীন ভাবে কাজ করতে দেওয়া হবে, একমাত্র তখনই তারা আইএসএল করার জন্য উদ্যোগী হবে।