পাকিস্তানের হামলায় নিহত ৩ আফগান ক্রিকেটার। ঘটনার প্রতিবাদে আগামী নভেম্বর মাসে হতেচলা ত্রিদেশীয় সিরিজ থেকে নাম তুলে নিল আফগান ক্রিকেট বোর্ড। পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে খেলার কথা ছিল আফগানিস্তানের।
৩ ক্রিকেটার নিহত
উল্লেখ্য, সংঘর্ষবিরতি শেষ হতেই আফগানিস্তানের পাকতিকা প্রদেশে এয়ার স্ট্রাইক চালায় পাকিস্তান। সেই হামলাতেই ৩ জন ক্রিকেটার সহ মোট ১০ আফগানের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। ওই ৩ ক্রিকেটারের নাম ও ছবি প্রকাশ করে আফগান বোর্ড জানিয়েছে, পাকতিকা প্রদেশের উরগুন জেলায় ক্রিকেটারদের উপর কাপুরুষোচি হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান। শহিদ হয়েছেন ৩ ক্রিকেটার (কবীর, সিবঘাতুল্লা এবং হারুণ)। এই ক্রিকেটাররা বন্ধুত্বপূর্ণ ম্যাচ খেলতে পাকতিকার রাজধানী শারানায় গিয়েছিলেন। সেখান থেকে উরগুন জেলায় ফেরার পথেই তাঁদের উপর হামলা চালানো হয়।
আফগান বোর্ডের সিদ্ধান্ত
আফগান বোর্ডের তরফে আরও বলা হয়েছে, 'আফগানিস্তানের ক্রীড়াজগতে এটা অপূরণীয় ক্ষতি। ওঁদের পরিবারের প্রতি এবং পাকতিকার মানুষের প্রতি আমরা গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে আগামী নভেম্বরে পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কার সঙ্গে যে ত্রিদেশীয় টি২০ সিরিজে খেলার কথা ছিল, তাতে যোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আফগানিস্তান।' উল্লেখ্য, লাহোর এবং রাওয়ালপিন্ডিতে আগামী ৫ থেকে ২৯ নভেম্বর এই ত্রিদেশীয় সিরিজ হওয়ার কথা।
সংঘর্ষবিরতি
পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা গত ১১ অক্টোবর থেকে তীব্র আকার ধারণ করেছে। আফগান বাহিনী পাকিস্তানের একাধিক সামরিক পোস্টে হামলা চালানোর পর সীমান্তে ভয়াবহ সংঘর্ষ শুরু হয়। এই লড়াইয়ে ২ দেশের বহু মানুষ নিহত হয়েছেন। সংঘর্ষের পর ৪৮ ঘণ্টার একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হলেও, তা ভঙ্গ হয় পাকিস্তান আফগানিস্তানের পাকতিকা প্রদেশে বিমান হামলা চালানোয়। এই হামলায় ডুরান্দ লাইনের কাছে আরগুন ও বর্মাল জেলায় আবাসিক এলাকাকে নিশানা করা হয়। তালিবান এই হামলাকে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন বলে নিন্দা জানিয়েছে। যখন দুই দেশের প্রতিনিধি দল দোহায় বর্তমান সংকট কাটাতে আলোচনায় অংশ নিচ্ছিল, তখন এই হামলাকে 'বর্বরোচিত' বলে উল্লেখ করেছে আফগানিস্তান।
নিন্দা রশিদ খানের
আফগানিস্তান ক্রিকেটের প্রধান মুখ রশিদ খান বলেন, 'এই বিমান হামলায় শিশু ও ক্রিকেটার সহ বহু সাধারণ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। পাকিস্তানি বিমান হামলায় এই প্রাণহানিতে আমি গভীরভাবে শোকাহত। নারী, শিশু এবং সেইসব তরুণ ক্রিকেটারদের জীবন কেড়ে নেওয়া হয়েছে, যারা একদিন তাঁদের দেশকে বিশ্বমঞ্চে প্রতিনিধিত্ব করার স্বপ্ন দেখত। এটা অনৈতিক ও বর্বরোচিত কাজ, মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। আমি আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের পাকিস্তানের বিপক্ষে আসন্ন ম্যাচগুলো থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্তকে সমর্থন করছি। এই কঠিন সময়ে আমাদের জনগণের পাশে রয়েছি। আমাদের জাতীয় মর্যাদা সবকিছুর ঊর্ধ্বে।'