FIFA World Cup 2022: কাতারে ইতিহাস তৈরি করেছে মরক্কো (Morocco)। আফ্রিকার (Africa) প্রথম দেশ হিসাবে বিশ্বকাপ ফুটবলের সেমিফাইনালে (FIFA World Cup 2022 Semifinal) পৌঁছেছে আশরাফ হাকিমিরা (Ashraf Hakimi)। মরক্কোর এই অভূতপূর্ব সাফল্যে অবদান রয়েছে বিদেশে জন্ম নেওয়া এক ঝাঁক ফুটবলারের। তাঁরা তাবড় বিখ্যাত ও দুর্দান্ত দলকে হারিয়ে দিয়ে এখন সেমিফাইনালে। ফলে ফোকাস এখন তাদের দিকে। মরক্কোর ২৬ জন ফুটবলারের মধ্যে ১৪ জনেরই জন্ম অন্য দেশে। কাতার বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া ৩২টি দলের মধ্যে যা সব থেকে বেশি। অনেকেই প্রশ্ন তুলছে বিশ্বকাপের এই সাফল্য কতটা মরক্কো ফুটবলের। তাতে অবশ্য আফ্রিকান দেশটির বয়েই গিয়েছে। তারা ইতিমধ্যে ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই নিয়ে নিয়েছে। তাঁদের চোখে এখন স্বপ্ন ফাইনালের (FIFA World Cup 2022 Final)।
মরক্কোর সাফল্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গোলরক্ষক ইয়াসিন বেনোর
মরক্কোর একাধিক জয়ের পিছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে গোলরক্ষক ইয়াসিন বেনো (Yasin Beno)। কানাডায় (Canada) জন্ম তাঁর। এখনও পর্যন্ত বিশ্বকাপে মাত্র একটি গোল হজম করেছেন তিনি। দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলার হাকিমির জন্ম স্পেনের মাদ্রিদে (Spain)। ক্লাব ফুটবলে লিয়োনেল মেসি (Lionel Messi), নেইমার (Neymar), কিলিয়ান এমবাপের (Mbappe) সতীর্থ মরক্কোর আক্রমণের অন্যতম ভরসা। মিডফিল্ডার সোফয়ান আমরাবতের জন্ম নেদারল্যান্ডসে (Netherland)। দলের আর এক মিডফিল্ডার সোফিয়ান বাফোলের জন্ম ফ্রান্সে (France)। বেলজিয়াম (Belgium), জার্মানি (Germany), ইটালিতে (Italy) জন্ম নেওয়া ফুটবলাররাও বিশ্বকাপে খেলছেন মরক্কোর হয়ে। ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপের আগে বিদেশে জন্ম নেওয়া দেশীয় বংশোদ্ভূত ফুটবলারদের জন্য জাতীয় দলের দরজা খুলে দিয়েছে মরক্কো। তার পর থেকেই ক্রমশ উন্নত হয়েছে মরক্কোর জাতীয় দলের পারফরম্যান্স।
বিদেশ থেকে মরক্কো বংশোদ্ভূত ফুটবলার খোঁজে বিশেষ দল
রয়্যাল মরক্কান ফুটবল ফেডারেশন ইউরোপের বিভিন্ন দেশে প্রতিনিধি রেখেছে প্রতিভা চিহ্নিত করার জন্য। বিদেশে জন্ম দেশীয় বংশোদ্ভূত প্রতিভাবান কিশোরদের মরক্কোর হয়ে খেলার জন্য উৎসাহিত করেন তাঁরা। সে ভাবেই মরক্কো পেয়েছে হাকিম জিয়াসকে। নেদারল্যান্ডসে জন্ম তাঁর। পেশাদার ফুটবলে পা রাখার সময় দু’দেশের ফুটবল সংস্থার সঙ্গে সুযোগ-সুবিধা নিয়ে এক রকম দরাদরি করেছেন তিনি। শেষ পর্যন্ত জন্মভূমিকে ছেড়ে বেছে নিয়েছেন মাতৃভূমিকে। আমরাবতও জুনিয়র পর্যায়ে নেদারল্যান্ডসের হয়ে কয়েকটি ম্যাচ খেললেও পরে বেছে নিয়েছেন মরক্কোকে।
মরক্কো এখনও কোনও গোল খায়নি
সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এখনও পর্যন্ত মরক্কো কোনও গোল খায়নি। গোটা টুর্নামেন্টে বিপক্ষের কোনও খেলোয়াড়ের পা থেকে কোনও বল তাদের জালে জড়ায়নি। টুর্নামেন্টের একমাত্র গোল যেটা তাঁদের হজম করতে হয়েছে কানাডার সঙ্গে গ্রুপ লিগের ম্য়াচে, সেটিও আত্মঘাতী গোল। অর্থাৎ বিপক্ষের কোনও ভূমিকা নেই। এটাই এখন চ্যালেঞ্জ ফ্রান্সের কাছে।
মরক্কোর এই বিশ্বকাপের জয়যাত্রা
গ্রুপ লিগ ম্যাচ-১- মরক্কো ০-০ ক্রোয়েশিয়া
গ্রুপ লিগ ম্যাচ-২ মরক্কো ২- ০বেলজিয়াম
গ্রুপ লিগ ম্যাচ-৩ মরক্কো ২-১ কানাডা (আত্মঘাতী গোল)
রাউন্ড অব ১৬- মরক্কো- ২- স্পেন (টাইব্রেকারে জয়ী)
কোয়ার্টার ফাইনাল- মরক্কো-১-০ পর্তুগাল
সেমিফাইনাল- মরক্কো বনাম ফ্রান্স