লিগ শিল্ড জিতে ভারতসেরা হয়েছে মোহনবাগান সুপার জায়েন্ট (Mohun Bagan Super Giant)। আরও একবার আইএসএল (ISL) চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগ সবুজ-মেরুনের সামনে। অন্যদিকে কলকাতা ফুটবলের আরেক বড় দল ইস্টবেঙ্গল (East Bengal) জিতেছে শুধুমাত্র সুপার কাপ (Super Cup 2024)। ১২ বছর পর কোনও সর্বভারতীয় ট্রফি এসেছে লাল-হলুদ তাঁবুতে। তবুও আইএসএল-এর প্লে অফে পৌছতে পারেনি কার্লেস কুয়াদ্রাতের দল। সুপার কাপ জিতে ভারতসেরা হলেও, আইএসএল-এর ব্যর্থতা তাড়া করে বেড়াচ্ছে ইস্টবেঙ্গলকে। কেন এমন হচ্ছে বারবার?
আইএসএল-এ একটাও ডার্বি জেতেনি ইস্টবেঙ্গল
পরিসংখ্যানের দিক থেকে দেখলে, এটিকের সঙ্গে মোহনবাগান যুক্ত হওয়ার পর থেকেই দারুণ ছন্দে। মনে রাখতে হবে, আইএসএল-এ আসার আগে ইস্টবেঙ্গলকে টপকে চার ম্যাচ বাকি থাকতে আই লিগ জিতেছিল কিবু ভিকুনার সবুজ-মেরুন। টিমের মালিক সঞ্জীব গোয়েঙ্কা বিশেষভাবে নজর দিয়েছেন দলের প্রতি। দীর্ঘদিন জাতীয় লিগ বা আই লিগ জিততে না পারা ইস্টবেঙ্গল আইএসএল-এ এলেও, তাদের পারফরম্যান্স সাদা-মাটা। কখনও তারা লিগ পড়ব শেষ করেছে একেবারে শেষে থেকে, নয়ত আট না নয় নম্বরে। আইএসএল-এ ডার্বি ম্যাচে একটাও জিততে পারেনি লাল-হলুদ। ডুরান্ড কাপ বা সুপার কাপে মোহনবাগানকে হারালেও, লিগ পর্বে শুভাশিস বসুদের সঙ্গে পেরেই উঠছে না কলকাতার আরও এক শতাব্দী প্রাচীন ক্লাব।
সুপার কাপে হেরেও দল গুছিয়ে নিয়েছে মোহনবাগান
সুপার কাপকে গুরুত্বই দেয়নি মোহনবাগান। দলের সাত ফুটবলার জাতীয় দলের শিবিরে, পাশাপাশি আশিক ক্রুনিয়ানের চোট। ফলে সুপার কাপে প্রায় দ্বিতীয় সারির দল নামিয়েছিল মোহনবাগান। জুয়ান ফেরান্দোকে সরিয়ে আন্তনিও হাবাসকে দায়িত্ব দেওয়ার পর, ফুটবলারদের দেখে নেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন আইএসএল-এর সবচেয়ে সফল কোচ। আর তাতেই এল বাকি মরসুমে সাফল্য। সুপার কাপ হারতে হলেও, এবার ত্রিমুকুট (ট্রেবেল) জয়ের খুব কাছাকাছি জেসন কামিন্সরা। এক মরসুমে তিন ট্রফি জেতা কখনই সহজ নয়। আর সেটা করতে আইএসএল ফাইনাল জিততে হবে হাবাসদের। যে ছন্দে তাঁর দল রয়েছে, তাতে ফাইনালে গোয়া বা মুম্বইয়ের মধ্যে জেই আসুক সমস্যায় পড়বে তা বলাই যায়।
দর্শক টানতে অভিনব স্ট্র্যাটেজিতে ইমামিকে টেক্কা গোয়েঙ্কাদের
দর্শকদের নিরিখেও ইস্টবেঙ্গলকে টেক্কা দিয়েছে মোহনবাগান। টানা হারতে থাকা দলের পাশে দাঁড়াতে গ্যালারি ভরাতে পারেনি ইস্টবেঙ্গল। ইমামি ম্যানেজমেন্টও বুঝতে পারেননি বা ইচ্ছে দেখাননি মাঠ ভরানোর। মোহনবাগান কর্তারা ভেবেছেন। ট্রফি জেতার নেশায় বুঁদ হয়ে থাকা সঞ্জীব গোয়েঙ্কারা আর্থিক ক্ষতি হবে জেনেও, মাত্র ৫০ টাকায় টিকিট দিয়েছেন সমর্থকদের। ফলে টানা দুই ম্যাচে ৬০ হাজারের উপর দর্শক এসেছেন দলের খেলা দেখতে। তাতে প্রতিপক্ষ ছিটকে গিয়েছে।
দল গঠনে বুদ্ধিমত্তা
দল গঠনের ক্ষেত্রে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে মোহনবাগান। অন্যদিকে ইস্টবেঙ্গল হরমনজ্যোত খাবড়ার মত বয়স বেড়ে যাওয়া ফুটবলারদের রেখে দিয়েছে। এক পজিশনে একাধিক ফুটবলার সই করিয়ে ব্যাকআপ প্ল্যান তৈরি রাখতে পারেনি। সেক্ষেত্রে হাবাস তো বটেই, জুয়ান ফেরান্দোরও কৃতিত্ব প্রাপ্য। কারণ, আশিক ক্রুনিয়ানের মতো ফুটবলার না থাকলেও দল জিতেছে। লিগের শেষ ম্যাচে সাহাল না থাকলেও শিল্ড চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মোহনবাগান। আবার সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে সাহালের গোলেই ফাইনালে চলে গিয়েছে তারা।