'নীরজ চোপড়া ক্লাসিক' ইভেন্টে পাকিস্তানি জ্যান্ডলিন থ্রোয়ার আরশাদ নাদিমকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। পাহেলগাঁওতে সন্ত্রাসবাদী হামলার পর, নিজের ইভেন্ট নিয়ে বিতর্কের মাঝে মুখ খুললেন অলিম্পিকে সোনা জেতা নীরজ চোপড়া। সন্ত্রাসবাদী হামলার আগে, নীরজ ভারতে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানের জন্য নাদিমকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। এরপরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন নীরজ।
নীরজের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে কী আছে?
নীরজ একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে বলেছেন আমি সাধারণত খুব কম কথা বলি, কিন্তু যখন আমার দেশ, আমার পরিবার এবং সত্যের সম্মানের কথা আসে, তখন আমি চুপ থাকতে পারি না। তিনি এই পোস্টে লিখেছেন যে, আরশাদ নাদিমকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল এক ক্রীড়াবিদ হিসেবে। উদ্দেশ্য ছিল ভারতকে বিশ্বমানের ক্রীড়া ইভেন্টের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করা। সোমবার, পাহেলগাঁওতে সন্ত্রাসবাদী হামলার দুই দিন আগে, সমস্ত খেলোয়াড়দের কাছে এই অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছিল।
এই পোস্টে, নীরজ স্পষ্ট করেছেন যে পাহেলগাঁও হামলার পরের পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে আরশাদের অংশগ্রহণ বাতিল করা হয়েছে। নীরজ বলল- এমন পরিস্থিতিতে আরশাদের আসা মোটেও সম্ভব ছিল না। দেশ এবং তার স্বার্থ আমার কাছে সর্বদা সবার আগে।
নীরজ চোপড়ার পুরো পোস্ট
আমি খুব বেশি কথা বলার মানুষ নই, কিন্তু যখন দেশ, পরিবারের সম্মান এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলার কথা আসে, তখন আমি চুপ থাকতে পারি না। সম্প্রতি আমি আরশাদ নাদিমকে 'নীরজ ঢোপড়া ক্লাসিক' এ আসার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছি। এই নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছিল এবং অনেকেই ধূণ্য মন্তব্য করেছিল। আমার পরিবারকেও টার্গেট করা হয়েছিল। আমি আরশাদকে একজন ক্রীড়াবিদ হিসেবে ডেকেছিলাম, এ টুকুই। এর অন্য কোন অর্থ ছিল না। এই অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্য ছিল বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়দের ভারতে নিয়ে আসা, যাতে আমাদের দেশও বিশ্বমানের ক্রীড়া ইভেন্টের অংশ হতে পারে। সোমবার, পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার দুই দিন আগে, সমস্ত খেলোয়াড়দের আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছিল।
এখন যখন গত ৪৮ ঘন্টায় এত মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে, তখন আরশাদের আসা একেবারেই অসম্ভব। আমার কাছে দেশ সবার আগে। যারা তাদের প্রিয়জনদের হারিয়েছেন তাদের প্রতি আমার প্রার্থনা এবং সমবেদনা। এইঘটনায় আমিও খুবই দুঃখিত এবংক্ষুব্ধ। কিন্তু আমার পূর্ণ বিশ্বাস যে আমাদের দেশ ঐক্যবদ্ধভাবে এর জবাব দেবে এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে।
আমি বছরের পর বছর ধরে গর্বের সাথে আমার দেশের প্রতিনিধিত্ব করে আসছি। এই কারণেই যখন মানুষ আমার উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলে তখন কষ্ট লাগে। আমাকে এবং আমার পরিবারকে কোনও কারণ ছাড়াই টার্গেট করা হচ্ছে। আমরা সাধারণ মানুষ, আমাদের ভুল বুঝবেন না। সংবাদমাধ্যমের কিছু অংশ আমাদের সম্পর্কে মিথ্যা গল্প ছড়িয়েছে। কিন্তু আমি চুপ থাকি বলেই যে এই কথাগুলো সত্যি তা নয়। মারো মাবো আমি বুঝতে পারি না মানুষ এত তাড়াতাড়ি কিভাবে বদলে যায়। আমার মা একবছর আগে খুব সহজভাবে কিছু বলেছিলেন, তখন লোকেরা তার প্রশংসা করছিল। এখন একই লোকেরা একই জিনিসের জন্য তাকে গালি দিচ্ছে।
আমি এখন আরও কঠোর পরিশ্রম করব যাতে বিশ্ব ভারতকে এমন একটি দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় যাকে মানুষ ঈর্ষা করে না, বরং সম্মান করে এবং সঠিক কারণে মনে রাখে। জয় হিন্দ।