২০০৭ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপ ভারত এবং পাকিস্তানের কাছে কোনও দুঃস্বপ্নের থেকে কম কিছু ছিল না। ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ে আয়োজিত এই বিশ্বকাপের সুপার আটে ভারত এবং পাকিস্তান ক্রিকেট দল জায়গা করে নিতে পারেনি। ভারতকে বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানকে আয়ারল্যান্ড হারিয়ে দেয়। এমন ফলাফলের কল্পনা কেউই করতে পারেননি। শুধু তাই নয়, আয়ারল্যান্ডের কাছে পাকিস্তান হেরে যাওয়ার ঠিক পরের দিনই একটা দূর্ঘটনা গোটা ক্রিকেট বিশ্বকে স্তব্ধ করে দেয়। আজকের দিনেই (১৮ মার্চ) পাকিস্তান ক্রিকেট দলের কোচ বব উলমারের ঘর থেকে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
কিংসটনের একটা হোটেলে উঠেছিলেন বব উলমার। সেখানেই তিনি মধুমেহ রোগের ওষুধ নিতেন। আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচের পরের দিন উলমারের হোটেলের বাথরুম থেকে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। তাঁর মুখে রক্তও লেগে ছিল। দেখে মনে হচ্ছিল, তিনি বমিও করেছিলেন। অচৈতন্য অবস্থায় উলমারকে জামাইকার একটা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
শোনা যায়, পাকিস্তান ক্রিকেট দল হেরে যাওয়ার পর রীতিমতো হতাশায় ভুগছিলেন উলমার। আর সেইসময়েই তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। জামাইকা পুলিশ গোটা বিষয়টা হত্যার দৃষ্টিকোণ থেকেও তদন্ত করেন। তবে ১২ জুন জামাইকা পুলিশ ঘোষণা করে দেয় যে অসুস্থতার কারণেই উলমারের মৃত্যু হয়েছে।
১৯৪৮ সালে কানপুরে বব উলমারের জন্ম হয়েছিল। তিনি ইংল্যান্ডের হয়ে ৬টি একদিনের ম্যাচ এবং ১৯টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তিনি হাজারের বেশি রান এবং ১৩টি উইকেট শিকার করেছিলেন। ১৯৮৪ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণ করার পর উলমার কোচিং করাতে শুরু করেন।
১৯৯৪ সালে তাঁকে দক্ষিণ আফ্রিকার কোচ হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। কোচিং কেরিয়ারে বব উলমার দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দলকে একটা আলাদা উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন। হ্যান্সি ক্রোনিয়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকাকে এমন একটা সাফল্যের শৃঙ্গে তুলে নিয়ে যান, যে তৎকালীন যে কোনও দলকে তারা টক্কর দিতে পারত। ২০০৪ সালে পাকিস্তান ক্রিকেট দলের কোচ হয়েছিলেন উলমার।