একটা-দুটো নয়, তিনটে বিশ্বকাপ জিতেছেন। জিতেছেন অসংখ্য ট্রফি। ২০২০ সালের নভেম্বরে ফুটবল বিশ্ব হারিয়েছিল রাজপুত্রকে আর এবার প্রয়াত ফুটবল সম্রাট। ব্রাজিলের আর পাঁচটা বাচ্চার মতোই ছোট থেকে ফুটবলই ছিল তাঁর ধ্যান জ্ঞান।
১৯৪০ সালের ২৩ অক্টোবর ব্রাজিলের মিনাস গ্রেইয়াসে দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহন করেছিলেন অ্যারিন্টোস দ্য নাসিমেন্টো এডসন বা পেলে। বাবার কাছেই ফুটবলের হাতেখড়ি। সেইসময় দারিদ্র এতটাই প্রবল যে একটা বল কেনার সামর্থ্য ছিল না। কাপড় এবং কাগজ দিয়ে বল বানিয়ে ফুটবল চর্চা চলত বাবা এবং ছেলের। পরিবারের প্রয়োজনে চায়ের দোকানেও কাজ করতে হয়েছে ভবিষ্যতের ফুটবল সম্রাটকে। এভাবেই খেলতে খেলতে ১৫ বছর বয়সে সাওপাওলোর স্যান্টোস ক্লাবে সুযোগ পান। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি।
১৭ বছর বয়সে জাতীয় দলে সুযোগ
১৯৫৮ সালের বিশ্বকাপে অভিষেক হয় পেলের। গ্যারিঞ্চার সঙ্গে তাঁর জুটি বিপক্ষের কাছে ত্রাস হয়ে ওঠে। সেই বছরেই প্রথমবার বিশ্বকাপ জেতেন পেলে। ফাইনালে আয়োজক সুইডেনকে ৫-২ গোলে হারায় ব্রাজিল। সেবারে ফাইনালে দু'টি গোল করেছিলেন পেলে নিজেই। পরের বিশ্বকাপেও চ্যাম্পিয়ন হয় ব্রাজিল। তবে এবার অনেকটাই পেলের কৃতিত্বে। ফাইনালে চেকস্লোভাকিয়াকে ৩-১ গোলে পরাজিত করে পেলের ব্রাজিল।
বিশ্বকাপ জেতার হ্যাটট্রিক
বিশ্বের আর কোনও ফুটবলারের তিনবার বিশ্বকাপ জেতার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়নি। তবে তা করে দেখিয়েছিলেন পেলে। ১৯৭০ সালে তৃতীয়বার বিশ্বকাপ জেতেন পেলে। মেক্সিকো বিশ্বকাপে দুরন্ত ছন্দে ছিলেন পেলে। দুর্দান্ত খেলে দলকে বিশ্বকাপ জেতান তিনি। ফাইনালে ইতালিকে ৪-১ গোলে পরাজিত করে তিনবার জুলেরিমে কাপ বা বিশ্বকাপ জিতে ট্রফিটি নিয়ে দেশে চলে যায় তারা। ছয়টি ম্যাচে ২৩টি গোল করেছিল ব্রাজিল।
১৯৫৭ থেকে ১৯৭০ সাল অবধি ব্রাজিলের জার্সিতে খেলেছেন। ১৯৭০ সালের বিশ্বকাপের সেরা ফুটবলারের সম্মান পেয়েছিলেন। দেশের জার্সিতে ৭৭ টি ম্যাচে ৯২টি গোল রয়েছে। ক্লাব এবং দেশের জার্সিতে মোট ১০০০ গোল রয়েছে তাঁর।
মাঝে যদিও ১৯৬৬ সালে ইংল্যাণ্ডের মাটিতে পেলে প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারদের কড়া ট্যাকেলে খেলতেই পারেননি পেলে। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তাকে চোট পেয়ে মাঠের বাইরে চলে যেতে হয়। সাওপাওলো ছেড়ে ১৯৭৭ সালের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কসমস ক্লাবে খেলতে আসেন। সেই বছরই তিনি সেপ্টেম্বর মাসে কলকাতায় খেলতে আসেন। মোহনবাগানের বিরুদ্ধে সেই ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয় ইডেনে।। বিশ্বকাপ ছাড়াও কোপা লিবারদাস,নর্থ আমেরিকান সকার লিগ,ইন্তারন্যাশানাল কাপ জয় ছাড়াও একাধিক ট্রফি জয়েরষনায়ক পেলে। ২০০০ সালে ফিফার বিচারে শতাব্দীর সেরা ফুটবলারের সম্মান পেয়েছেন।