
সৌরভ পারেননি, ঝুলনের হাতেও ওঠেনি কাপ। করে দেখালেন শিলিগুড়ির কন্যা। বিশ্বকাপ ক্রিকেটজয়ী প্রথম বাঙালি ক্রিকেটারের নাম রিচা ঘোষ। রবিবার মহিলা বিশ্বকাপের ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে দুরমুশ করে হরমনপ্রীত ব্রিগেড কাপ ঘরে তুললে। আর সেই টিমেরই সদস্য রিচা ডিওয়াই পাটিল স্টেডিয়ামে আবারও নিজের জাত চেনালেন। মাত্র ২৪ বলে ৩৪ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেন এই বঙ্গকন্যা। যা ছিল ৩টি চার এবং ২ ছক্কা দিয়ে সাজানো।
ম্যাচের শেষে রিচা বলেন, 'আমার উপর সবার ভরসা ছিল। সবাই বলছিল তুই-ই মারতে পারবি। এটাই আমায় মনোবল জুগিয়েছেন।' জীবন বাজি রাখা স্বপ্নপূরণ এই জয়, এমনটাই মনে করছেন তিনি। রিচার কথায়, 'সকলে একটাই কথা মাথায় রেখেছিলাম, এটা প্রতিযোগিতার শেষ দিন। নিজেদের মধ্যে যা আছে পুরোটা উজাড় করে দিতে হবে। শরীরের শেষ শক্তি পর্যন্ত সমর্পণ করতে হবে। একে অপরের জন্য খেলব আমরা। সব উজাড় করে দাও, এটাই ছিল আমাদের আসল মন্ত্র।' জেতার পর অনুভূতি কেমন? রিচা বলেন, 'স্বপ্ন সত্যি হল। আমরা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। কীরকম লাগছে তা বলতেই পারব না। এই অনুভূতি বাকি সব কিছুর চেয়ে আলাদা।'
শিলিগুড়ির মেয়ের হাত ধরে বাঙালি প্রথম বার ক্রিকেট বিশ্বকাপ ছুঁয়ে দেখার সুযোগ পেল। রিচার পাড়া শিলিগুড়ির বাঘাযতীন পার্কে রবিবারের রাতটা ছিল অন্যরকম। পুরসভার পক্ষ থেকে ঘরের মেয়ের বিশ্বজয় দেখার জন্য একটি জায়ান্ট স্ক্রিন লাগানো হয়। এলাকাবাসী রাত জেগে সেখানেই রিচার হাতে কাপ উঠতে দেখলেন। কারও গায়ে ছিল ভারতের জার্সি, কারও হাতে জাতীয় পতাকা। গর্বিত পড়ছিরা মেয়ের জন্য উৎসবে মাতেন। জয়ধ্বনি চলতে থাকে রাস্তা জুড়ে।
কেবলমাত্র ফাইনাল নয়, গোটা টুর্নামেন্টেই ডেথ ওভার (৪১-৫০) রিচা হয়ে উঠেছিলেন ভয়ঙ্কর। এই ডেথ ওভারগুলোতে তিনি এই টুর্নামেন্ট রান তুলেছেন ১৮৫। স্ট্রাইক রেট ১৬৫.১৭, যা বিশ্বকাপের মধ্যে সেরা। এটাই ছিল রিচা ঘোষের প্রথম বিশ্বকাপ। ৮ ইনিংসে করেছেন ২৩৫ রান, গড় ৩৯.১৬। বয়স মাত্র ২১। তবু রিচা ঘোষ এখন ভারতীয় মহিলাদের ক্রিকেটের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ফিনিশারদের একজন।