
‘জয়নগরের মোয়া’-শীত এলেই বাঙালির ঘরে-ঘরে যে নামটি সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত হয়, তা নিছকই কোনও মিষ্টি নয়, এক বিশেষ সাংস্কৃতিক পরিচয়। এই মোয়া যে সত্যিই অমূল্য সম্পদ, তা খাতায়-কলমে স্বীকৃতি পেয়েছিল বহু আগেই। ২০১৫ সালে কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রকের থেকে জিআই বা জিয়োগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন তকমা পেয়েছিল ‘জয়নগরের মোয়া’-যা একে দেশের বাজারে অনন্য পরিচিতি দিয়েছে।
তবুও সমস্যার জায়গা একই রয়ে গিয়েছে-জাল জয়নগরের মোয়া। মূলত দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর-মজিলপুর অঞ্চলেই তৈরি হয় আসল কানাইসরা চাল ও খেজুরগুড়ের মোয়া। কিন্তু প্রতিবছরই কলকাতা সহ বিভিন্ন জেলায় জাল মোয়া বিক্রি হওয়ায় গ্রাহকদের বিভ্রান্তি বাড়ে। ব্র্যান্ডের মর্যাদাও কমে যায়। এ পরিস্থিতিতে আসল মোয়া পৌঁছে দিতে এ বছর আরও শক্ত হাতে নামছে কুলীন মোয়া নির্মাতাদের সংগঠন। রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতরও তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছে।
এবার উদ্যোগ আরও বড়-রাজ্য সরকার স্বয়ং উদ্যোগ নিয়ে দোরগোড়ায় পৌঁছে দেবে আসল জয়নগরের মোয়া। পঞ্চায়েত দফতরের অধীনস্থ কম্প্রিহেনসিভ এরিয়া ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন (CADC) সরাসরি গ্রাহকের বাড়িতে মোয়া পৌঁছে দেওয়ার বিশেষ ব্যবস্থা করেছে। এতে একদিকে যেমন জাল মোয়ার দৌরাত্ম্য কমবে, অন্যদিকে গ্রাহকরা নিশ্চিন্তে আসল জয়নগরের মোয়া ঘরে বসেই পাবেন।
কীভাবে অর্ডার করবেন?
এ পরিষেবা অত্যন্ত সহজ।
গ্রাহকরা মোবাইলে ৯৭৩৪৩৯৯৯১৫ নম্বরে ফোন করতে পারবেন অথবা হোয়াটসঅ্যাপে অর্ডার পাঠাতে পারবেন।
প্রথম পর্যায়ে কলকাতা ও আশপাশের এলাকায় ডেলিভারি শুরু হবে। পরবর্তী ধাপে পরিষেবা বিস্তৃত হবে সারা রাজ্যে, এমনকি দেশের অন্যান্য জায়গাতেও পৌঁছতে পারে এই আসল জয়নগরের মোয়া।
মোয়া নির্মাতাদের লক্ষ্য
প্রতিবছরই যতদূর সম্ভব বেশি পরিমাণে আসল মোয়া তৈরি করা এবং তা রাজ্যজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়া লক্ষ্য হয়ে উঠেছে মোয়া নির্মাতাদের। কারণ চাহিদা বিপুল, কিন্তু জাল পণ্যের বাজার ক্রমশ গ্রাস করছে আসল স্বাদ।
জয়নগরের মোয়া শুধু মিষ্টি নয়-একটি ঐতিহ্য। সেই ঐতিহ্যের সম্মান বজায় রাখতে সরকার ও মোয়া নির্মাতারা একযোগে কাজ শুরু করায় এবার শীতের স্বাদ হবে আরও খাঁটি, আরও নিশ্চিন্ত। আপনার অর্ডার এখনই করুন-আসল জয়নগরের মোয়া পৌঁছে যাবে আপনার বাড়ির দরজায়!