মণিপুরের হিংসা নিয়ে বিদ্ধ বিজেপি। এই অবস্থায় পশ্চিমবঙ্গের মালদায় দুই আদিবাসী মহিলাকে বিবস্ত্র করে ঘোরানোর ভিডিয়ো টুইট করে সরব হয়েছেন গেরুয়া শিবিরের নেতানেত্রীরা। এর মধ্যেই রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের নেত্রী শশী পাঁজার 'সাফাই' নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। মন্ত্রীর ওই বক্তব্য অসংবেদনশীল বলে আক্রমণ শানিয়েছে বিজেপি।
মালদার ঘটনা নিয়ে শশী পাঁজা বলেন,'মালদায় বড় হাঠে অনেকে এসেছিলেন। একটা চুরির ঘটনা হয়েছে। দুই মহিলা চোর ছিলেন। পুলিশ গ্রেফতার করতে গিয়েছিলেন। সেই সময় ধস্তাধস্তি হয় মহিলাদের সঙ্গে। সবাই গরিব। ধস্তাধস্তিতে কাপড় সরে যায়। এটাকে রাজনৈতিক চশমায় দেখা ঠিক নয়।' শশীর এই মন্তব্যকে হাতিয়ার করেছে বিজেপি। দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার টুইট করেছেন,'মালদায় মহিলাদের বিবস্ত্র করে ঘোরানো হয়েছে। সেই ঘটনা নিয়ে অত্যন্ত লজ্জাজনক মন্তব্য করেছেন শশী পাঁজা। যে রাজ্যই হোক না কেন মহিলাদের সুরক্ষা নিয়ে আপোস করা যায় না। অথচ ঘটনাকে লঘু করে দেখানোর চেষ্টা করছে তৃণমূল।'
এর মধ্যেই আবার যুব তৃণমূল নেত্রী সায়নী ঘোষ টুইট করে দাবি করেছেন,'বিজেপি আর মন্ত্রীদের মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে। মণিপুরের ঘটনা থেকে নজর ঘোরাতে পশ্চিমবঙ্গ-সহ বিরোধী শাসিত রাজ্যের ভুয়ো এবং অপ্রাসঙ্গিক খবর ছড়াচ্ছে। মণিপুরে ডাবল ইঞ্জিন সরকারের ব্যর্থতা ঢাকতে মরিয়া হয়ে উঠেছে ওরা।' তাঁর কটাক্ষ,'মহিলা ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী, কুম্ভীরাশ্রুর নায়ক এবং গোলা মারোর জন্য সুবিদিতদের অনুরোধ করছি, ইন্ডিয়াকে জ্ঞান দেওয়া বন্ধ করুন। নিজেদের বসের মতোই চুপ থাকুন।'
শশীর বক্তব্যই বাংলায় নারী সুরক্ষার অবস্থা স্পষ্ট করে দিয়েছে বলে দাবি করেছেন বিজেপি নেতা অনুরাগ ঠাকুর। তাঁর কথায়,'বাংলায় মহিলাদের কাপড় ছিড়ে ঘোরানোর ঘটনাকে অন্য প্রসঙ্গ দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। বিহারেও একই চেষ্টা চলছে। মহিলাদের মধ্যেও কি ফারাক আছে? কেন মহিলারা ভীত, শশী পাঁজার বক্তব্যেই বুঝে নিন। বাংলায় অপরাধের পর মহিলারা চুপ থাকেন, কারণ মেরে দেওয়া হয়। বাংলার মন্ত্রী যে বয়ান দিচ্ছেন, তাতে স্পষ্ট এটা অপরাধ বলে মনে করেন না তিনি। মমতার মমতা নেই। বাংলায় মমতা নির্মমতার প্রতীক।'
কী ঘটেছে মালদায়? বামনগোলা পাকুয়াহাটে দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে মারধর, জুতোপেটা করার অভিযোগ উঠেছে। তাঁদের বাড়ি মানিকচকে। লেবু বিক্রি করতে গিয়েছিলেন তাঁরা। ভাইরাল ভিডিওটি ১৮ জুলাইয়ের। ওই দুই মহিলাকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে বলে দাবি দুই নির্যাতিতার পরিবারের।