এ বার সরাসরি তৃণমূল বিধায়ক সৌমেন মহাপাত্রের স্ত্রী সুমনা মহাপাত্রের পাশে দাঁড়ালেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাহলে এটাই কি দলবদলের ইঙ্গিত? ভোটের আগে কি বিজেপির দিকে আরও এক পা বাড়িয়ে দিলেন সুমনা? এখন এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মনে।
প্রসঙ্গত, পদ হারানোর পরই দলের একাংশের বিরুদ্ধে তোলাবাজি নিয়ে তোপ দেগেছেন সুমনা মহাপাত্র। সেই বিষয়েই সুমনার পাশে দাঁড়ালেন বিজেপি নেতা। আর শুভেন্দুর এহেন সাপোর্টকেই বিজেপির দল ভরানোর ইঙ্গিত বলে মনে করা হচ্ছে।
যদিও তৃণমূল সুমনার বক্তব্যকে পাত্তা দিতে নারাজ। তারা সৌমেন পত্নীর এই মন্তব্যকে ব্যক্তিগত বলে জানিয়েছে।
আসলে কয়েক দিন আগেই সাংগঠিন স্তরে বদল আনে তৃণমূল। সেই রদবদলের জেরে পাঁশকুড়া টাউন তৃণমূল সভানেত্রীর পদ হারান সুমনা মহাপাত্রকে। শুধু তাই নয়, তমলুকের তৃণমূল সাংগঠনিক জেলার সব কমিটিতেও ব্রাত্য তিনি। এরপরই তৃণমূলের একাংশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন সুমনা।
শুক্রবার পদ হারানোর পরই দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছিলেন সুমনা। তিনি বলেছিলেন, 'আমরা কোনও তোলাবাজি, নোংরামো করতেও পারব না। কোনওভাবে টাকা তুলতেও পারব না আমরা। সেই জন্যই যার সততা আছে তাকে অসৎ মানুষরা কিছু ভয় করে।'
এখানেই শেষ নয়, বিজেপি বিরোধিতা নিয়েও বিরাট দাবি করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, 'যেখানে বিরোধিতা করার আমরা ঠিক করেছি। কিন্তু তার মানে দুটো বাজে কথা বলব, সেই পরিবার থেকে আমরা উঠে আসিনি। আমি বা আমার স্বামী যে শুভেন্দু বাবুর বিরুদ্ধে নোংরা কথা বলতে পারিনি এই জন্যই মনে হচ্ছে আমরা ঠিক কোণঠাসা হয়ে যাচ্ছি।' আর সুমনার এই মন্তব্যের পরই পাশে দাঁড়িয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
পিছনে কোন অঙ্ক?
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ২০২৬ সালের আগে তৃণমূলের এই সাংগঠনিক রদবদল বিশেষ তাৎপর্যবাহী। বিশেষত, সৌমেন মহাপাত্রের মতো আদি তৃণমূল নেতার স্ত্রীকে এ ভাবে সাংগঠনিক পদ থেকে সরিয়ে দেওয়াটা বড় ব্যাপার। আর এটা তৃণমূলের তরফে এমনি এমনি করা হয়নি। বরং কিছু নিশ্চয়ই বুঝেছে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। তলায় তলায় কোনও একটা গন্ধ পেয়েছে তারা। যার ফলেই এই সাংগঠনিক রদবদল।
এছাড়া রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের আরও দাবি, সুমনা মহাপাত্র একা নন। এর পাশাপাশি আরও অনেকেই পা বাড়িয়ে রেখেছেন বিজেপির দিকে। এখন শুধু ঘোষণার অপেক্ষা।
তবে এই সব দাবি আপাতভাবে উড়িয়ে দিয়েছে দুইপক্ষই। তাই আপাতত অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই। সময়ই বলে দেবে ভোটের আগে ঠিক কোন দিকে হাওয়া বয়ে যায়।