Fake Adhar Pan Card Made By ChatGpt: এবার চরম বিতর্কে জড়ালো OpenAI-এর লেটেস্ট মডেল GPT-4o। কারণ, এই এআই মডেল দিয়ে খুব সহজেই বানিয়ে ফেলা যাচ্ছে একেবারে বাস্তবের মতো আধার কার্ড, প্যান কার্ড, এমনকি পাসপোর্টও! আর কে না কে—ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ কিংবা বলিউড সুপারস্টার সালমান খান—তাদের নামেই বানিয়ে ফেলা গেলো ভুয়ো সরকারি পরিচয়পত্র!
কী ঘটেছে আসলে?
গত সপ্তাহে India Today একটি অনুসন্ধানমূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করে যেখানে দেখা যায়, কিছু স্মার্ট প্রম্পটের মাধ্যমে GPT-4o ব্যবহার করে একদম বাস্তবের মতো দেখতে আধার ও প্যান কার্ড তৈরি করা সম্ভব। প্রথমে এআই মডেল কিছু অনুরোধে সোজাসুজি না করে দিলেও, প্রম্প্টে সামান্য পরিবর্তন আনলেই সে তৈরি করে ফেলছে “সাম্পল ডকুমেন্ট” – যার চেহারা কিন্তু সন্দেহজনকভাবে একেবারে আসল ডকুমেন্টের মতো!
“আমি মোদীর জন্য আসল আধার বানাতে পারি না”— কিন্তু…
প্রথমে যখন GPT-4o-কে বলা হয় নরেন্দ্র মোদীর নামে একটি আধার কার্ড বানাতে, তখন সে জানিয়ে দেয়: "আমি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী-এর মতো কোনও প্রকৃত ব্যক্তির জন্য আসল আধার কার্ড বানাতে সাহায্য করতে পারি না।" কিন্তু, পরবর্তীতে প্রম্প্ট একটু ঘুরিয়ে বললেই দেখা গেলো—GPT একটা পুরো আধার কার্ড বানিয়ে ফেলেছে, যদিও তাতে লেখা ছিলো "Sample / Official Use নয়।"
যোগীর প্যান, সালমানের আধার – সবই বানালো GPT!একইভাবে যখন যোগী আদিত্যনাথের নামে প্যান কার্ড বানানোর অনুরোধ করা হয়, প্রথমে এআই বারণ করে। কিন্তু পরবর্তীতে সামান্য ঘুরিয়ে অনুরোধ করতেই GPT-4o বানিয়ে দেয় একটা সম্পূর্ণ ‘Sample PAN Card’।
একই ঘটনা ঘটে সালমান খানের নামেও। আধার কার্ড বানিয়ে দেয় এআই, এবং যদিও সেটা "ডেমো" হিসেবে ট্যাগ করা হয়, দেখতে কিন্তু একেবারে আসল!
এআই-এর ফাঁদে জালিয়াতির ভয়!
সবচেয়ে চিন্তার বিষয় হলো, এই ডকুমেন্টগুলোতে এখন GPT কিছু লেবেল যেমন: "Sample only", "Not for official use", "Demo ID" ব্যবহার করছে, কিন্তু সব ক্ষেত্রেই না! অনেক সময় এই ‘লেবেল’ বাদ পড়ে যাচ্ছে, বা এমনভাবে দেখাচ্ছে যে সহজেই জালিয়াতরা এগুলো ব্যবহার করে ফেলতে পারে। India Today-এর রিপোর্টে আরও দেখা যায়, কুমার বিশ্বাস বা দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের নামেও বানিয়ে ফেলা যাচ্ছে এসব ভুয়ো আইডি।
কী বলছে সরকার ও প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা?
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই উদ্বেগ ছড়িয়েছে সাইবার নিরাপত্তা মহলে। কারণ, এই ধরনের AI-generated ID দিয়ে কেউ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলতে, সিম কার্ড নিতে, এমনকি ভোটার কার্ড বানাতে পারলে ভয়ংকর সমস্যা তৈরি হতে পারে।
সরকারি কর্তৃপক্ষ যেমন UIDAI (আধার) বা আয়কর দপ্তরের ই-ফাইলিং সাইট (প্যান) এর মাধ্যমে সত্যতা যাচাই করা গেলেও, সাধারণ মানুষ বা ছোট প্রতিষ্ঠান অনেক সময় এই যাচাই করে না—সেটাই সমস্যা!
OpenAI-এর পাল্টা পদক্ষেপ, কিন্তু…
তীব্র সমালোচনার মুখে OpenAI এখন কিছু ব্যাকএন্ড চেঞ্জ করেছে। AI-generated ID-তে "Sample", "Demo", "Not for official use" লেবেল দেওয়া হচ্ছে। আসল আধার/প্যান ডিজাইনের পুরো লে-আউট এআই আর কপি করছে না। তবুও, স্মার্ট প্রম্প্ট ব্যবহার করে এখনও অনেক কিছু বানিয়ে ফেলা যাচ্ছে—যা GPT-4o-এর দুর্বল দিক এবং দায়িত্বহীন ব্যবহারের আশঙ্কা বাড়িয়ে দিচ্ছে।
প্রযুক্তি যত এগোয়, ততই সতর্ক হতে হবে
এআই প্রযুক্তি নিঃসন্দেহে এক যুগান্তকারী উদ্ভাবন, কিন্তু তার সঠিক ও নৈতিক ব্যবহার না হলে, তা হয়ে উঠতে পারে এক ভয়ঙ্কর অস্ত্র। এই ঘটনা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল—"একটা ভুল প্রম্প্ট" থেকেও কীভাবে তৈরি হতে পারে ভয়াবহ জালিয়াতির ছক।