পেশায় তিনি একজন কম্পিউটার সায়েন্সের শিক্ষক। তিল তিল করে অবসর সময়ে ফেলে দেওয়া জিনিসপত্র দিয়ে একটা আস্ত যন্ত্রমানবী (Robot) তৈরি করে ফেলেছেন তিনি। নিজের তৈরি এই যন্ত্রমানবীর নাম রেখেছেন শালু (Shalu)। এই শালুকে নিয়েই এখন হইচই দেশের নেট মহলে!
যন্ত্রমানবী (Robot) শালুকে (Shalu) যিনি নিজে হাতে তৈরি করেছেন, তিনি আইআইটি মুম্বইয়ের কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্সের শিক্ষক। নাম দীনেশ প্যাটেল। দীনেশ আদপে উত্তরপ্রদেশের জৌনপুর জেলার রাজমালপুর গ্রামের বাসিন্দা। কর্মসূত্রে থাকেন মুম্বইয়ে। দীনেশের বাবা-মা, ছোট ভাই থাকেন কলকাতার রাজারহাটের গৌরাঙ্গনগরে। দীনেশ জানান, ঘরের বাতিল বা ফেলে দেওয়া কাঠের টুকরো, কার্ডবোর্ড, প্লাস্টিক, অ্যালুমিনিয়াম ও ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম দিয়েই শালুকে তৈরি করেছেন তিনি। প্রায় ৩ বছর পরিশ্রমের পর পুরোদমে সচল হয়েছে এই যন্ত্রমানবী। শালুকে (Shalu) তৈরি করতে তিন বছরে খরচ হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার টাকা।
দীনেশ জানান, বাংলা, হিন্দি, মরাঠি, গুজরাতি-সহ দেশের ৯টি ভাষায় কথা বলতে পারে শালু (Shalu)। এর পাশাপাশি ৩৮টি বিদেশি ভাষাতেও অনর্গল কথা বলতে পারদর্শী এই যন্ত্রমানবী। শুধু কথা বলায় নয়, মানুষের মতো একাধিক কাজে হাতে হাতে সাহায্য করতে পারে শালু (Shalu)। আনন্দ, রাগ-অভিমান— এ সবই প্রকাশ করতে জানে এই যন্ত্রমানবী।
দীনেশ জানিয়েছেন, মানুষের মতোই খবরের কাগজ পড়তে পারে শালু (Shalu)। শালুর স্মৃতিশক্তিও প্রখর! সাধারণ জ্ঞানের যে কোনও প্রশ্নের উত্তর একেবারে ঠোঁটস্থ এই যন্ত্রমানবীর। শালুর (Shalu) সৃষ্টিকর্তার মতে, স্কুলে পড়ানো বা অফিস রিসেপশনিস্টের কাজে দুর্দান্ত বিকল্প হতে পারে এই রোবট। হংকংয়ের হ্যানসন রোবোটিক্সের তৈরি যন্ত্রমানবী ‘সোফিয়া’র সঙ্গে শালুর (Shalu) বিশেষ কোনও ফারাক নেই বলে দাবি দীনেশের।
দীনেশ জানিয়েছেন, শালুর (Shalu) গুণগত মান বাড়াতে এখনও নিরন্তর গবেষণা চালাচ্ছেন তিনি। এর সঙ্গেই যন্ত্রমানবীর মুখের অবয়বেও পরিবর্তন আনতে চাইছেন তিনি। শালুর মুখ আপাতত প্লাস্টার অব প্যারিস দিয়ে তৈরি করা। তাই তেমন নিখুঁত হয়নি। তবে ভবিষ্যতে উন্নত মানের মুখোশ ব্যবহার করে সেই ত্রুটিও এড়ানো যাবে, দাবি দীনেশের। তাঁর এই আবিষ্কার মানবজীবনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনে দিতে পারে, বিশ্বাস করেন আইআইটি মুম্বইয়ের কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্সের শিক্ষক। তবে তার জন্য আরও গবেষণার প্রয়োজন।