মহাকাশ ভ্রমণ এখন সাধারণ মানুষের জন্যও খুলে যাচ্ছে। কোটিপতি এবং প্রকৌশলীরাও মহাকাশে ভ্রমণের সুযোগ পাচ্ছেন, যার সাম্প্রতিক উদাহরণ হল ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪-এ স্পেসএক্সের পোলারিস ডন মিশনের মাধ্যমে স্পেসওয়াক। পৃথিবী থেকে ৭৩৭ কিলোমিটার উপরে ড্রাগন ক্যাপসুল থেকে বেরিয়ে মহাকাশে হাঁটার অভিজ্ঞতা অর্জন করেন।
মহাকাশ ভ্রমণের খরচ
মহাকাশে যাওয়ার খরচ বিপুল। স্পেসএক্সের ড্রাগন ক্যাপসুলে একটি আসনের মূল্য প্রায় ৫৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৪৬১.৪১ কোটি টাকার বেশি। এই খরচের মধ্যে রয়েছে মহাকাশে যাওয়ার প্রশিক্ষণ, স্পেস স্যুট তৈরি এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ। স্পেসওয়াকের জন্য ব্যক্তির শারীরিক এবং মানসিক ক্ষমতার উন্নয়নের জন্য কঠোর প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হয়।
প্রশিক্ষণের ধরন
মহাকাশ ভ্রমণ এবং স্পেসওয়াকের জন্য প্রশিক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রশিক্ষণের সময় মহাকাশে থাকা চরম পরিস্থিতির মোকাবিলা করার জন্য শারীরিক কন্ডিশনিং করা হয়। এছাড়াও, স্পেসওয়াক সংক্রান্ত প্রযুক্তিগত এবং বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের ওপর জোর দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণটি সুইমিং পুলে এবং ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্রোগ্রামের মাধ্যমে পরিচালিত হয়, যা মহাকাশের শূন্য মাধ্যাকর্ষণ পরিবেশে কাজ করার অভিজ্ঞতা দেয়।
স্পেসওয়াক করার যোগ্যতা
মহাকাশে স্পেসওয়াক করার জন্য সাধারণত সেই ব্যক্তিদেরই বাছাই করা হয় যাদেরকে NASA বা অন্যান্য মহাকাশ সংস্থার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই বাছাই প্রক্রিয়ায় ব্যক্তির শারীরিক সুস্থতা, দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। স্পেসওয়াকের জন্য মহাকাশচারীদের একটি স্পেস স্যুটে তারের মাধ্যমে সংযুক্ত থাকতে হয়, যাতে মহাকাশের শূন্য মাধ্যাকর্ষণে নিরাপদে চলাফেরা করা যায়।
মহাকাশযান এবং রকেটের মাধ্যমে যাত্রা
মহাকাশচারীরা সাধারণত NASA বা SpaceX-এর মতো সংস্থার মহাকাশযানে বসে রকেটের মাধ্যমে মহাকাশে যান। সেখানে মহাকাশযানের বাইরে এসে স্পেসওয়াক করেন। স্পেস স্টেশনেও মহাকাশচারীরা একইভাবে স্পেসওয়াক করেন।
স্পেসওয়াকের চ্যালেঞ্জ
স্পেসওয়াক অত্যন্ত জটিল এবং চ্যালেঞ্জিং একটি কাজ। প্রশিক্ষণের সময় দলের সদস্যদের সাথে সমন্বয় সাধনের জন্য প্রচুর অনুশীলন করতে হয়। যন্ত্রপাতি ক্রমাঙ্কন, মিশনের উদ্দেশ্য বোঝা, এবং জরুরি পরিস্থিতির মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত থাকা সবকিছুই স্পেসওয়াকের একটি অপরিহার্য অংশ। তাই শুধুমাত্র শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা নয়, প্রযুক্তিগত জ্ঞানও এক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মহাকাশ ভ্রমণ এবং স্পেসওয়াকের জন্য খরচ এবং প্রস্তুতি এতটাই বেশি যে তা সাধারণ মানুষের জন্য সহজলভ্য নয়। কিন্তু প্রযুক্তির অগ্রগতির সাথে সাথে এটি ভবিষ্যতে আরো সহজ ও সাশ্রয়ী হতে পারে, যা মহাকাশ পর্যটনের জন্য নতুন দিগন্ত খুলে দেবে।