আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে পৃথিবীতে ফিরবেন না সুনীতা উইলিয়ামস। তিনি ও বুচ উইলমোরের আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন থেকে ফিরতে আরও এক মাস সময় লাগবে। এর কারণ স্পেসএক্সের ড্রাগন ক্যাপসুলে প্রযুক্তিগত সমস্যা। ২০২০৪ সালের জুন মাসে ১০ দিনের জন্য মহাকাশে গিয়েছিলে সুনীতা ও বুচ। তবে, এখন ১০ মাস ধরে তাঁরা ওখানেই রয়েছেন। নাসা এবং স্পেসএক্স ফেব্রুয়ারিতে ক্রু -১০ মিশন চালু করার কথা বলেছিল। যদিও সেই মিশন দেরি হবে। কারণ এই মিশনের জন্য নতুন ড্রাগন মহাকাশযান তৈরির কাজ চলছে। এই ক্যাপসুলে মহাকাশ স্টেশনে যাবেন চারজন। নাসা কমার্শিয়াল ক্রু প্রোগ্রাম ম্যানেজার স্টিভ স্টিচ বলেছেন যে মহাকাশযান তৈরিতে কিছুটা সময় লাগে। সুনীতা আর বুচকে আরও একমাস মহাকাশ স্টেশনেই থাকতে হবে।
এই হল পুরো ঘটনা
বোয়িং স্টারলাইনারে হিলিয়াম লিক এবং থ্রাস্টার সমস্যার কারণে সুনীতা উইলিয়ামসদের ফিরতে দেরি হচ্ছে। সুনীতা এবং উইলমোর দুজনেই স্পেস স্টেশনে রয়েছেন। তাঁরা সুস্থও আছেন। গবেষণা করছেন। বাকিরা মহাকাশচারীদের বিভিন্ন কাজে সাহায্য করছেন।
দু'জনেই কি স্পেস স্টেশনে আরও তিন মাস কাটাতে পারবেন?
সুনীতা এবং বুচ উইলমোর কোনও বিপদে নেই। তাঁরা দুজনেই মহাকাশ স্টেশনে পরের তিন মাস আরামে কাটাতে পারবেন। বর্তমানে মহাকাশ স্টেশনে ৯ জন মহাকাশচারী রয়েছেন। এমন ঘটনা প্রথম নয় যেখানে মহাকাশচারীদের পৃথিবীতে ফিরতে দেরি হচ্ছে। তবে, এটি সুনীতার ক্ষেত্রে প্রথম।
এত মানুষ কি মহাকাশ স্টেশনে থাকতে পারবেন?
স্পেস স্টেশনে বর্তমানে ৯ জন নভোচারী উপস্থিত রয়েছেন। মহাকাশ স্টেশনটি এত বড় যে এখানে আরও কয়েকজন মহাকাশচারী থাকতে পারবেন। স্পেস স্টেশনটিতে ৬টিরও বেশি বেডরুমের জন্য জায়গা রয়েছে। এটিতে ঘুমোনোর কোয়ার্টার রয়েছে। দুটি বাথরুম আছে। একটি জিম আছে। স্পেস স্টেশনের সঙ্গে স্পেস শিপ সংযুক্ত থাকে। সম্প্রতি কার্গো সরবরাহ করা হয়েছে। যাতে মহাকাশচারীরা খাবার ও পানীয়ের অভাবের সম্মুখীন না হন।
এতদিন মহাকাশে কাটানো কি ঠিক?
মহাকাশে ৮ থেকে ১০ মাস থাকা মোটেই ভাল জিনিস নয়। কিন্তু অনেক মহাকাশচারী এর চেয়ে বেশি সময় স্পেস স্টেশনে কাটিয়েছেন। মহাকাশে সবচেয়ে বেশি দিন কাটানোর রেকর্ড রুশ মহাকাশচারী ভ্যালেরি পলিয়াকভের দখলে। তিনি মহাকাশ স্টেশনে ৪৩৮ দিন ছিলেন। এবার প্রায় ২৫০ দিন কাটিয়ে মহাকাশ স্টেশন থেকে ফিরবেন সুনীতা ও উইলমোর।
এত দিন মহাকাশে থাকার প্রভাব কী?
নাসা মহাকাশচারীর শরীরে স্পেস স্টেশনে দীর্ঘক্ষণ থাকার প্রভাব অধ্যয়ন শুরু করে। নাসার একটি প্রোগ্রাম চলছে, যেখানে সাড়ে ৩ মাস, ৮ মাস ও তার বেশি থাকলে শরীরে কী প্রভাব পড়ে। এই সময় শরীরের পেশী দুর্বল হয়ে পড়ে। হাড়ের ঘনত্ব কমে যায়। দীর্ঘ সময় থাকলে হৃদরোগের ঝুঁকিও থাকে।