স্বপ্ন হল সত্যি
ভারতীয় দলের গোলকিপার পিআর শ্রীজেশ এর গোটা টুর্ণামেন্টে বড় অবদান রয়েছে ভারতের ব্রোঞ্জ পদক পাওয়ার পিছনে। শ্রীজেশ এমনিতেও ভারতীয় দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ খেলোয়াড় এবং তার জীবনে যে অলিম্পিক পদক পাওয়ার স্বপ্ন ছিল, তা কয়েকটি অলিম্পিক খেলার পর অবশেষে সত্যি হল।
৪১ বছর পর ফের অলিম্পিকে পদক
ভারতীয় পুরুষ হকি টিম টোকিও অলিম্পিকে ব্রোঞ্জ পদক জয় করেছে বৃহস্পতিবার সকালে। সেই পদক স্পর্শ করার সঙ্গে সঙ্গে ইতিহাস তৈরি হল। ৪১ বছর পর ভারতের হকিতে পদক জয় করে টিম ইন্ডিয়া। বুধবার জার্মানিকে ৫-৪ গোলে হারিয়ে অলিম্পিকে আরও একবার পদক নিশ্চিত করেছে। এই জয়ের পর থেকে টোকিও থেকে দিল্লি পর্যন্ত উৎসবের পরিবেশ।
অভ্যাস থেকে চ্যুতি
এক সময় প্রতি বছর ভারতীয় দল সোনা পাওয়া অভ্যাসে পরিণত করে ফেলেছিল। সেই জায়গা থেকে ধীরে ধীরে কোথাও হারিয়ে যাচ্ছিল ভারতীয় হকি। ফের এতদিন পর ভারতীয় দল পুরনো জায়গায় ফিরছে বলে মনে করছে দেশের হকি জগৎ। এরই মাঝে মহিলা দল শুক্রবার হকিতে ব্রোঞ্জ পদক এর জন্য লড়াই করবে। সুতরাং সব মিলিয়ে খুশির পরিবেশ।
গোলপোস্টের উপর গোলরক্ষক !
এর মধ্যে জয়ের মাঝেই প্রাক্তন অধিনায়ক এবং গোলরক্ষক পিআর শ্রীজেশ কতটা খুশি, তা তার কার্যকলাপে বোঝা যাচ্ছে। জয়ের পর তিনি হঠাৎই গোলপোস্টের উপর গিয়ে বসে পড়েন। এই গোলপোস্টের উপর বসে থাকার ছবি পোস্ট হতেই তার গোটা দেশ এবং বিশ্বজুড়ে ভাইরাল হয়ে যায়। যেখানে যেখানে ভারতীয় হকি প্রেমীরা রয়েছেন, তাঁরা সেই দেশের এই ছবিকে ভারতীয় হকি দলের গর্বের প্রতীক বলে মনে করছেন।
কি বললেন শ্রীজেশ
এটা নিয়ে আবার বিতর্কও তৈরি হয়েছে। তাঁকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে, তিনি বলেন, আমার জন্য গোলপোস্টই সব কিছু। আমি আমার পুরো জীবন গোলপোস্টে কাটিয়ে দিয়েছি। তাই আমি জয়ের পর প্রমাণ করতে চাইছিলাম এই গোলপোস্টের মালিক আমি।
স্বভাববিরুদ্ধ উচ্ছ্বাসে শ্রীজেশ
এর আগেও একাধিক স্মরণীয় জয়ের সাক্ষী রয়েছেন শ্রীজেশ। তবে জয়ের পর এত উৎসাহ করতে তাঁকে কখনও দেখা যায়নি। তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, অলিম্পিকের কথাই আলাদা। এমনিতে সংবাদ শিরোনাম, বিতর্ক-বিবাদ থেকে দূরে থাকতেই পছন্দ করেন। শ্রীজেশ এমনিতে তাঁর আচরণ অনেক সংযত। তাঁকে শান্ত স্বভাবের বলেই সবাই জানেন। যত চাপ, তত শ্রীজেশ ভাল খেলেন।
মরণপণ লড়াই করার শপথ
তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, আজকে সব কিছুর জন্য তৈরি ছিলাম। এই ৬০ মিনিটে আমার জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান ছিল। ফাইনালে ওঠার সুযোগ হারিয়েছি। অন্তত ব্রোঞ্জ পদক হাত ছাড়া করা কোনও ভাবেই সম্ভব ছিল না। আমি ২১ বছর থেকে খেলছি। আর আমি নিজেকে এটুকুই বলেছিলাম ২১ বছরের অভিজ্ঞতা ৬০ মিনিটে উগড়ে দাও।
২১ বছরের অভিজ্ঞতা উগরে দিতে হবে
শেষ পেনাল্টির পর নিজেকে উনি বলেন, তুমি একুশ বছর ধরে খেলছ এবং তোমাকে এখন একটাই কাজ করতে হবে, পেনাল্টি বাঁচাও। পুরো অলিম্পিক এর টুর্ণামেন্টে দেওয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে পড়েছেন বারবার। ভারতীয় দলকে কয়েকবার নিশ্চিত হার থেকে বাঁচিয়েছেন। প্রথমদিকে ভারতীয় দলের খেলা ভালো হচ্ছিল না। সেই জায়গা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে ব্রোঞ্জে ভারতীয় দলের মনোবলকে অনেক উচ্চতায় বেঁধে দেবে।