২০১১ সালে ভিক্ষাজীবী মানুষের সংখ্যায় দেশের মধ্যে প্রথম স্থানে ছিল পশ্চিমবঙ্গ। এ বারের ভোট প্রচারে শাসকদল থেকে বিরোধীপক্ষ— সকলেরই মুখে উন্নয়নের বার্তা। ১০ বছরে পরিস্থিতি কতটা বদলেছে, তা জানতে এখন ভোট নয়, এ বছরের জনগণনার রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করতে হবে বাংলার মানুষকে।
বাংলায় বাম সরকার থেকে চলে যাওয়ার ১০ বছর পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও ২০১১ সালের বাম জামানার রেকর্ড ভাবাচ্ছে রাজ্যের উন্নয়নকামী মানুষকে।
গত বুধবার কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যসভায় জানিয়েছে, ২০১১-এর সরকারি তথ্য অনুযায়ী গোটা দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ভিক্ষাজীবী মানুষ ছিল পশ্চিমবঙ্গে।
ওই গণনা অনুযায়ী, ২০১১-এ দেশে ভিক্ষাজীবী মানুষের সংখ্যা ছিল ৪ লক্ষেরও বেশি। রাজ্যওয়াড়ি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভিক্ষুকের সংখ্যায় বাংলা ছিল শীর্ষস্থানে। এ রাজ্যে সংখ্যা ভিক্ষাজীবী মানুষের সংখ্যা ছিল ৮১ হাজার ২৪৪।
২০১১ সালের ওই কেন্দ্রীয় হিসাব অনুযায়ী, দেশের মোট ভিক্ষাজীবী মানুষের প্রায় ২০ শতাংশই বসবাস করেন পশ্চিমবঙ্গে। ভিক্ষুকের সংখ্যার নিরিখে বাংলার পরেই দ্বিতীয় স্থানে ছিল উত্তরপ্রদেশের নাম। সে রাজ্যে ভিক্ষাজীবী মানুষের সংখ্যা ছিল ৬৫ হাজার ৮৩৫।
ওই গণনা অনুযায়ী, ২০১১-এ ভিক্ষুকের সংখ্যার নিরিখে তৃতীয় স্থানে ছিল অন্ধ্রপ্রদেশ। ওই রাজ্যে ভিক্ষাজীবী মানুষের সংখ্যা ছিল ৩০ হাজার ২১৮। এই তালিকার চতুর্থ স্থানে ছিল বিহার। বিহারে ভিক্ষুকের সংখ্যা ছিল ২৯ হাজার ৭২৩।
রাজ্যসভায় বিজু জনতা দলের রাজ্যসভার সদস্য প্রসন্ন আচার্য প্রশ্ন তুলেছিলেন, দেশের ভিক্ষাজীবী মানুষদের সমাজের মূলস্রোতে বা জীবিকায় ফিরিয়ে আনার কি কোনও সরকারি প্রকল্প রয়েছে? এর উত্তরে সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রকের তরফে বলা হয়, এমন কোনও সমন্বিত প্রকল্প সামগ্রিক ভাবে নেই। তবে ১০টি শহরকে বাছে নিয়ে ওই রাজ্যগুলির প্রশাসনের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে একটি পাইলট প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।
কেন্দ্র-রাজ্যের ওই সমন্বিত পাইলট প্রকল্পে দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ, আমেদাবাদ, লখনউ, ইন্দোর, পাটনা এবং নাগপুরের নাম থাকলেও নেই কলকাতা বা বাংলার কোনও শহরের নাম।
২০১১ সালেই হয়েছে শেষ বার জনগণনা। তার পর আবার ২০২১-এ জনগণনা শুরু হবে। তবে জনগণনা না হলেও ভিক্ষাজীবী মানুষের সংখ্যা যে বাংলায় অনেক কমেছে, তা স্পষ্ট হয়েছে কেন্দ্র-রাজ্যের ওই সমন্বিত পাইলট প্রকল্পে অন্তর্ভূক্ত শহরের নামের তালিকা থেকেই।