ভোজ্যতেলের দাম এখন আকাশছোঁয়া! মাসখানেক আগে লিটারে ৭-৮ টাকা দাম কমলেও এখনও অধিকাংশ ভোজ্যতেলই মধ্যবিত্তর নাগালের বাইরেই। কিন্তু একেবারে তেল ছাড়া রান্না কি সম্ভব! তাই দাম দিয়েও যে যার সাধ্য মতো তেল কিনে আনছেন বাড়িতে।
এবার প্রশ্ন হল, যে সব ভোজ্যতেল বাড়িতে কিনে আনছেন, সেগুলি খাঁটি কিনা জানেন? কারণ, ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার (FSSAI) সদ্য প্রকাশিত সমীক্ষার রিপোর্ট বলছে, দেশের বাজারের ২৪ শতাংশ ভোজ্যতেলই ভেজালযুক্ত, বিপজ্জনক!
অর্থাৎ, FSSAI জানাচ্ছে, বাজার থেকে যারা ভোজ্যতেল কেনেন তাঁদের প্রায় এক-চতুর্থাংশ প্রতিদিন খাবারে তেলের সঙ্গে বিষ খাচ্ছেন। যদিও ওই সমস্ত তেল প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলির দাবি, তাদের তেলে ভিটামিন এ থেকে ভিটামিন ডি রয়েছে। তবে ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার (FSSAI) পরীক্ষায় তার পরিবর্তে মিলেছে ক্ষতিকর সব রাসায়নিক।
গত বছরের অগাস্টে, FSSAI সারাদেশ থেকে ভোজ্য তেলের ৪,৪৬১টি নমুনা সংগ্রহ করে। এই নমুনাগুলির মধ্যে ব্র্যান্ডেড এবং বাজারে খোলা-বিক্রী হওয়া তেল— উভয়ই অন্তর্ভুক্ত ছিল।
FSSAI সরষের তেল, নারকেল তেল, পাম অয়েল, ব্লেন্ডড অয়েল, সয়াবিন অয়েল, রাইস ব্র্যান অয়েল, গ্রাউন্ডনাট অয়েল, বাদাম তেলসহ ১৫টি ভোজ্য তেলের নমুনা পরীক্ষা করার অনুমোদন দিয়েছে।
আশ্চর্যজনকভাবে ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার (FSSAI) পরীক্ষায় এই ৪,৪৬১টি নমুনার মধ্যে ১,০৮০টি নমুনাই কেন্দ্র নির্ধারিত খাদ্য নিরাপত্তার ন্যূনতম গুমমাণ ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে।
FSSAI-এর এই পরীক্ষায় আরও দেখা গেছে, ভোজ্যতেলে ভিটামিন এ ও ভিটামিন ডি যুক্ত করার দাবি সম্পূর্ণ ভুয়ো। তার জায়গায় সংস্থাগুলো নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে বেশি ক্ষতিকর রাসায়নিক ব্যবহার করেছে, যা অনেক মারাত্মক রোগের কারণ হতে পারে।
বেশিরভাগ নমুনায় হাইড্রোসায়ানিক অ্যাসিড নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে বেশি পাওয়া গেছে। এই রাসায়নিকের পরিমাণ বেশি হলে মাথাব্যথা, অলসতা, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে নাক থেকে রক্ত পড়া ইত্যাদির জন্য দায়ী হতে পারে। নেশার প্রভাব সম্পন্ন এই রাসায়নিককে অনেক রোগের জনক বলা হয়।