বাংলায় ক্রমশ বাড়ছে ব্রুসেলোসিসে আক্রান্তের সংখ্যা। রাজ্যের একাধিক জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে এই ব্যাক্টেরিয়াঘটিত রোগ। ইতিমধ্যেই ১৪টি জেলায় জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসার পরিকাঠামো গড়ে তোলার নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।
বিগত মাস দেড়েকে শুধু স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনে ৪৫ জন ব্রুসেলোসিসে আক্রান্ত চিকিৎসা করাতে এসেছেন। ট্রপিক্যাল মেডিসিনের বহির্বিভাগে চিকিৎসা করাতে এসেছিলেন রাজ্যের বিভিন্ন থেকেই।
জানা গিয়েছে বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর, মালদা, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, রামপুরহাট, হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর-সহ বিভিন্ন জেলায় জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসার পরিকাঠামো গড়ে তোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কেন এই ব্যাকটেরিয়াঘটিত রোগ নিয়ে এত আতঙ্ক বাড়ছে গোটা রাজ্যে? কী ভাবে সংক্রমিত হয় এই ব্যাকটেরিয়া? কাদের এই ব্রুসেলোসিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি? চলুন জেনে নেওয়া যাক এমনই নানা প্রশ্নের উত্তর...
কী ভাবে সংক্রমিত হয় এই ব্যাকটেরিয়া?
ব্রুসেলা নামের এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া থেকেই ব্রুসেলোসিস রোগ ছড়ায়। ব্রুসেলা ব্যাকটেরিয়া মূলত গবাদি পশুর মধ্যে সংক্রমিত হয়। সংক্রমিত পশুর দুধ না ফুটিয়ে পান করলে বা গবাদি পশুর বা তাদের মাংসের সংস্পর্শে এলে মানুষের শরীরেও ব্রুসেলা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত হতে পারে।
ব্রুসেলোসিসের উপসর্গ কী কী?
ব্রুসেলোসিসের প্রাথমিক উপসর্গ করোনার মতোই। এ ক্ষেত্রেও কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসা, পেশিতে ব্যথা, গাঁটে গাঁটে ব্যথা, শিরদাঁড়া বা মাথা যন্ত্রণার মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। প্রাথমিক পর্যায়ে এই রোগ ধরা না পড়লে পরে ক্রমশ শরীরের একাধিক অঙ্গ বিকল হতে শুরু করে। পরে শরীরের একাধিক অঙ্গ বিকল হয়েই আক্রান্ত্রের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
কাদের এই ব্রুসেলোসিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি?
এ যাবৎ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেখা যাচ্ছে, যাঁরা গবাদি পশুর পরিচর্যা, দেখভাল, চিকাকরণের কাজে সারাদিন নিয়োজিত, তাঁদেরই ব্রুসেলোসিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। একই কারণে এ রাজ্যের প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের কর্মীরা এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বেশি।
বাড়িতে আনা গরুর দুধ থেকে কি ব্রুসেলোসিসের সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে?
এ প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, বাড়িতে আনা গরুর দুধ কখনওই কেউ না ফুটিয়ে বা গরম না করে খান না। নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় দুধ ফুটিয়ে বা গরম করে নিলে ব্রুসেলা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে না।